১৪ মে ২০২৫, ০৯:০৯ অপরাহ্ন, ১৫ই জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি, বুধবার, ৩১শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
আজকের ক্রাইম ডেক্স :: সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে বরিশাল আদালতের প্রধান ফটকের সামনে ২ সাংবাদিককে পিটিয়ে আহত করাসহ মোটরসাইকেলে আগুন দিয়েছে ছাত্রদল নেতারা। জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল রাঢ়ীর নেতৃত্বে হামলার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার পর বিচারের দাবিতে সাংবাদিকরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বরিশাল জজকোর্টে সংবাদ সংগ্রহ শেষে স্থানীয় দৈনিক ভোরের আলো পত্রিকার ফটো সাংবাদিক এন আমিন রাসেল এবং দৈনিক বরিশাল মুখপত্র পত্রিকার রিপোর্টার মনিরুল ইসলামের ওপর প্রধান ফটকে এ হামলায় চালায় অভিযুক্তরা। এসময় এন আমিন রাসেলের মোটরসাইকেলে আগুন দেয়া হয়।
আহতরা জানান, সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল রাঢ়ীর নেতৃত্বে একদল যুবক তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। পরে হামলার ভিডিও ফুটেজ দেখে বাকিদেরও চিহ্নিত করেন সাংবাদিকরা। এদের অধিকাংশ জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের নানা পদে রয়েছে । আহতরা বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আহতদের হাসপাতালে দেখতে গিয়েছেন বরিশাল বিএনপির একাধিক নেতাকর্মী।
তারা বলেন, কিছু দুষ্কৃতকারী দলের সম্মান ক্ষুণ্ন করতে নানা অপধারমূলক কাজ করে যাচ্ছে। এদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
হামলাকারীরা হলেন- বরিশাল জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল রাঢ়ী, বরিশাল মহানগর ছাত্রদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক ও নগরীর ১০ নং ওয়ার্ড ছাত্রদলের সহ-সভাপতি মো. মাসুম হাওলাদার মাসুম, মহানগর ছাত্রদলের সহ-সভাপতি আলমাস, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন ও রাজিব আহমেদ, জেলা ছাত্রদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসাইন, সদস্য জুয়েলসহ তাদের সাথে থাকা নাইম, শাওন, জাহিদ ও শাহিন এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৭/৮ জন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, আদালতের প্রধান ফটকে পুলিশের একটি গাড়িকে পথরোধ করে ছাত্রদল নেতারা। সেখানে উপস্থিত পুলিশ সদস্যদের ওপর চড়াও হন ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল রাঢ়ীসহ অন্যান্যরা। তারা আব্বাস নামের এক ব্যক্তিকে পুলিশ রক্ষা করেছে এমন দাবি তুলে এবং পুলিশের সাথে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় সাংবাদিকরা সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে তাদেরকে ফ্যাসিস্ট আখ্যা দিয়ে হামলা চালিয়ে তাদের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করে। খবর পেয়ে সাংবাদিকরা সেখানে উপস্থিত হলে ছাত্রদল নেতারা সেখান থেকে সটকে পরে। এসময় সাংবাদিকরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করলে পুলিশের ও সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলে সাংবাদিকরা সড়ক থেকে উঠে যায়।
অভিযুক্ত সোহেল রাঢ়ী অভিযোগ অস্বীকার করে আব্বাস হাওলাদারকে ফ্যাসিস্ট উল্লেখ করে সাংবাদিকরা ফ্যাসিস্টদের সহযোগী হিসেবে কাজ করেছে বলে অভিযোগ করেন।
এদিকে এ ঘটনায় জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি আনিসুর রহমান স্বপন এবং সাধারণ সম্পাদক খালিদ সাইফুল্লাহসহ সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ।
কোতয়ালি মডেল থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, খবর পেয়ে তিনিসহ ঊর্ধ্বতনরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তথ্য-উপাত্ত্ব সংগ্রহ করেছেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনানুগ ব্যবস্থাগ্রহণ করা হচ্ছে বলে ওসি জানান।