২১ নভেম্বর ২০২৫, ০৬:৪৬ অপরাহ্ন, ২৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি, শুক্রবার, ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বি এম মনির হোসেন সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টারঃ-
ঢাকা থেকে দাদা বাড়ি বরিশালের গৌরনদী উপজেলার মধ্য হোসনাবাদ গ্রামের বেড়াতে এসে নিহত হন শিশু সাফওয়ান (৬)। এ ঘটনায় শুক্রবার নিহতের বাবা মোঃ ইমরান সিকদার বাদি হয়ে ৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামাসহ ৯জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। গৌরনদী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ ইউনুস মিয়ার দিকনির্দেশনায় গৌরনদী মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত মোঃ মাহাবুবুর রহমান সংগীয়ও ফোঁস নিয়ে এজাহার নামীয় চার আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। এদিকে শুক্রবার আসরের নামাজ বাদে (বিকেলে) নিহতের জানাজা শেষে বিক্ষুব্ধ জনতা দুই আসামির বাড়ি হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করে দুটি বাড়ি আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেন। গৌরনদী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ ইউনুস মিয়া আজকের ক্রাইম নিউজ এর প্রতিনিধি বি এম মনির হোসেনকে বলেন,গৌরনদী উপজেলার মধ্য হোসনাবাদ গ্রামের বেড়াতে এসে নিহত শিশু সাফওয়ান (৬) এর (নিহতের) বাবা ইমরান সিকদার বাদি হয়ে রোমান চৌধুরী, তার বাবা লোকমান চৌধুরী, ইউপি সদস্য মোজাম্মেল হক চৌধুরী, রোমানের স্ত্রী আখি বেগম, বোন রাবিনা আক্তার ও শাহাদাত প্যাদা এবং অজ্ঞাতনামা সহ ৯জনকে আসামি করে শুক্রবার একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। পুলিশ মামলার এজাহার নামীয় আসামি রোমান চৌধুরী, মুজাম্মেল হক চৌধুরী, রাবিনা আক্তার ও আমিনা বেগমসহ চার জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠিয়েছে। এদিকে শুক্রবার আসরের নামাজ বাদে (বিকেলে) নিহত শিশু সাফওয়ানের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে নিহতের স্বজন ও বিক্ষুব্ধ জনতা এজাহার নামীয় লোকমান হোসেন ও সরিকল ইউনিয়ন পরিষদের ৯নং ওয়ার্ডের সদস্য ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সদস্য মোঃ মোজাম্মেল হোসেন চৌধুরীর বাড়িতে হামলা করে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট করে এক পর্যায়ে দুটি বাড়ি আগুন দিয়ে সম্পূর্নভাবে পুড়িয়ে দেয়। স্থাণীয়রা জানান, শিশু সাফওয়ান হত্যার পর আসামি রোমান চৌধুরী ও মোজাম্মেল হোসেনকে গ্রেপ্তার করলে পরিবারের সদস্যরা বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়। যে কারনে অগ্নিকান্ডে কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। গৌরনদী ফায়ার সার্ভিস ষ্ঠেশনের ইনচার্জ বিপুল জানান, আগুন নেভানোর চেষ্টা করলে বিক্ষুব্ধ জনতা বাধা দেন। পরবর্তিতে প্রশাসনের সহায়তায় দুই ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনতে সক্ষম হয়েছেন। নিহত শিশুর একাধিক স্বজন জানান, জমাজমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষ লোকমান চৌধুরী, রোমান চৌধুরী ও মুজাম্মেল হক চৌধুরী ও তাদের সমর্থকরা শিশুটিকে অপহরন করে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। স্থাণীয়রা জানান, নিহতের স্বজন ও স্থানীয় বিক্ষুব্ধরা লাশ উদ্ধারের পর দুপুরে হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে লোকমান চৌধুরী ও রোমান চৌধুরীর বাড়িতে হামলা চালায়।নিহত শিশু সাফওয়ান গৌরনদী উপজেলার মধ্য হোসনাবাদ গ্রামের ইমরান শিকদারের ছেলে। হত্যাকারীদের চিহিৃত করে গ্রেপ্তারের দাবিতে এলাকাবাসী বিক্ষোভ ও সমাবেশ করে দুই আসামির বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করেছে বিক্ষুব্ধ স্বজনরা। এজাহার সূত্রে জানা গেছে, বুধবার দুপুর ২ টার দিকে স্থানীয় বাচ্চাদের সাথে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয় শিশু সাফওয়ান। পরবর্তীতে অনেক খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে শিশুটির দাদা বারেক সিকদার বাদি হয়ে ওই দিনই গৌরনদী মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি দায়ের করেন। বৃহস্পতিবার ফজরের নামাজ শেষে স্থানীয় মুসল্লিরা মান্না বেপারীর বাড়িন পিছনে ডোবায় শিশু সাফওয়ানের লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে লাশ উদ্ধার করে। নিহত সাফওয়ানের বাবা ইমরান শিকদার বাদি হয়ে শুক্রবার থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।