২১ নভেম্বর ২০২৫, ১০:২৯ পূর্বাহ্ন, ২৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি, শুক্রবার, ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাবুগঞ্জে ইউপি চেয়ারম্যান নূরে আলমের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে দুদকে অভিযোগ।
বাবুগঞ্জ (বরিশাল) প্রতিনিধিঃ বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির বিভিন্ন অভিযোগ এনে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বরাবর অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
গত ১৯ অক্টোবর কেদারপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ নূরে আলম বেপারী, ইউপি সচিব ইউসুফ দেওয়ান ও নারী ইউপি সদস্য শাহানাজ পারভীন কে বিবাদী করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও দুর্নীতি দমন কমিশন ( দুদক) কে এ অভিযোগ দায়ের করেন একই ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মোঃ ইব্রাহিম বিশ্বাস।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক বরাদ্ধকৃত ত্রান/টি আর কর্মসূচি/ কাবিখা-কাবিটা কর্মসূচি গ্রামিন অবকাঠামো উন্নয়ন কর্মসূচি / ঘূর্নিঝর ইত্যাদি বাবদ বরাদ্ধকৃত বিপুল পরিমান নগদ অর্থ, চাল এবং গম সঠিক ভাবে বিতরন না করে কালো বাজারে বিক্রি এবং অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ দেয়া হয়েছে।
অভিযোগে আরো বলা হয়েছে ইউপি চেয়ারম্যান নূরে আলম বেপারী একজন অসৎ এবং চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ লোক। দীর্ঘ দিন যাবত তিনি ইউনিয়ন পরিষদের যাবতীয় কার্যক্রম আইন মোতাবেক পরিচালনা না করে ইউপি সচিব এর সহায়তায় ইউনিয়ন পরিষদে বাংলাদেশ সরকার হইতে বরাদ্ধকৃত ত্রান, কাবিখা, কাবিটা, টিআর কর্মসূচি, গ্রামিন অবকাঠামো উন্নয়ন বাবদ বিপুল পরিমান টাকা, ঢাল, গম ইত্যাদি সঠিক বাবে বিতরন না করে বরাদ্ধকৃত নগদ অর্থ আত্মসাত করেন এবং চাল গম গোডাউন হইতে উত্তোলন করিয়া কালো বাজারে বিক্রি করে সমুদয় অর্থ আত্মসাত করেন।
একইভাবে ইউনিয়নের ভিজিটি কার্ড, টিসিবি, রেশন কার্ডের আওতায় বরাদ্ধকৃত চাল, গম সঠিক ভাবে বিতরন না করে অধিকাংশ চাল কালো বাজারে বিক্রি করে গরীব জনগনকে বঞ্চিত করেন।
তাছাড়া ইউপি চেয়ারম্যান প্রকল্প সমূহ বা প্রকল্পের বরাদ্ধকৃত অর্থ সম্পর্কে ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যগনকে নিয়া কোন সভা বা কোন নোটিশ না দিয়ে গোপনে প্রতারনা মুলক ভাবে নিজে সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন এবং গোপনে তাহার নিজ লোকজনকে নিয়া চাল, গম উত্তোলন করে কালো বাজারে বিক্রি করেন।
এছাড়াও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে ইউপি চেয়ারম্যান অত্যান্ত দুর্দান্ত এবং গুন্ডা মাস্তান নিয়া চলাফেরা করেন বিধায় তাহার দুর্নীতি মুলক কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে কেহ কোন প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না। অথচ তাহার দুর্নীতি মূলক কর্মকান্ডের জন্য ইউনিয়নের গরীব জনসাধারন প্রতি নিয়ত সরকারের সাহার্য্য এবং উন্নয়ন কর্মসূচি হইতে বঞ্চিত হচ্ছেন।
কেদারপুর ইউনিয়নে ভিজিটি কার্ডধারী ৩৩১জন কে প্রতিমাসে ৩০ কেজি চাল বরাদ্ধ থাকলেও চেয়ারম্যান ৩০ কেজি চালের পরিবর্তে ২৫ কেজি চাল দেন এবং বাকি চাল আত্মসাৎ করেন। ১৩০২ জন রেশন কার্ডধারী প্রত্যেকে ১৫ টাকা কেজি দরে মাসে ৩০ কেজি চাল পাওয়ার বিধান থাকলে চেয়ারম্যান রেশনের চাল কার্ডধারীদের মধ্যে নিয়মিত বিতরন না করে কালো বাজারে বিক্রয় করেন। ইতিপূর্বে ইউনিয়ন পরিষদ বিল্ডিং সংস্কারের জন্য সরকার ১০,০০,০০০/- (দশ লক্ষ) টাকা বরাদ্ধ করেন। কিন্তু চেয়ারম্যান নূরে আলম বেপারী সংস্কারের নামে মাত্র ত্রিশ হাজার টাকা খরচ করে বাকি সমুদয় টাকা নিজে আত্মত্মসাৎ করেন। বিভিন্ন দুর্নীতির দায়ে চেয়ারম্যান নূরে আলম বেপারী এর বিরুদ্ধে বর্তমানে বিশেষ ক্ষমতা আইনে জি.আর কেস নং-৪১/২০২০ (বাবুগঞ্জ) থানা কেস নং-১০, তারিখঃ ১৬/৪/২০২০) পেন্ডিং আছে। তাছাড়াও তিনি চেক জালিয়াতি মামলায় তার এক বছরের সাজাপ্রাপ্ত হন।
কেদারপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব পরিষদের কাজকর্ম সঠিক ও আইনানুগ ভাবে না করে সকল উন্নয়ন বরাদ্ধ গোপন রেখে সকল বিষয়ে চেয়ারম্যানকে অপরাধ সংঘটনে সহযোগিতা করেন। চেয়ারম্যান এর অনুপস্থিতিতে ৩নং বিবাদী প্যানেল চেয়ারম্যান থাকাকালে একই ভাবে চাল বিতরন না করে প্রকল্পের টাকা, চাল ও গম আত্মসাত করার কথাও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।