২০ নভেম্বর ২০২৫, ০৭:০৬ অপরাহ্ন, ২৮শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি, বৃহস্পতিবার, ৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নোটিশ
জরুরী ভিত্তিতে কিছুসংখ্যক জেলা-উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া হবে যোগাযোগ- ০১৭১২৫৭৩৯৭৮
সর্বশেষ সংবাদ :
চুয়াডাঙ্গায় ৩ তক্ষকসহ গ্রেফতার ১জন বাবুগঞ্জ এলজিইডি’র এলসিএস কমিউনিটি অর্গানাইজার সানজিদার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার ও হয়রানির অভিযোগ জোটের চাপ নাকি অভ্যন্তরীণ কোন্দল? বরিশাল -৩ আসনে এখনো প্রার্থী চূড়ান্ত করতে পারেনি বিএনপি। ভোটারদের মাঝে ‘ভিআইপি চমক’-এর গুঞ্জন বাবুগঞ্জে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ক্রীড়া সামগ্রী বিতরণ জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস এর ৫০ বছর পূর্তীতে ঝালকাঠি জেলা জাসাসের উদ্যোগে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বাংলাবান্ধায় ভারসাম্যহীন নারী গণধর্ষণেন শিকার চার ধর্ষক আটক বাবুগঞ্জে ছাত্রদল নেতা হত্যাকাণ্ড: ২১ জনের নামে মামলা! দর্শনায় দাড়ানো ট্রাকে আগুন ধরিয়েছে দুর্বৃত্তরা বিরামপুর রেলস্টেশনে ট্রেনের যাত্রা বিরতির দাবিতে সাংবাদিক সম্মেলন বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরের বড় বোনের ইন্তেকাল
আগৈলঝাড়ার বাশাইল ঐতিহ্যবাহী জারি গানের আসর

আগৈলঝাড়ার বাশাইল ঐতিহ্যবাহী জারি গানের আসর

বি এম মনির হোসেনঃ-

আবহমান গ্রাম বাংলায় জারি গানের আসর ছিল বিনোদনের অন্যতম প্রধান মাধ্যম। তবে, আধুনিকতার ছোঁয়াতে হারিয়ে যেতে বসেছে গ্রামের মানুষের আনন্দের অন্যতম অনুষঙ্গ জারি গান । ‘জারিথ ফারসি শব্দ। অর্থ ক্রন্দন, বিলাপ বা প্রচার করা।বরিশাল জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের ছোট বাশাইল গ্রামের কালেখা মাজারে জমেছিল জারি গানের আসর।মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ছোট বাশাইল গ্রামের কয়েকশত মানুষ জারি গান শুনে আনন্দে মেতে উঠেছিল। পাশাপাশি জারি গানকে কেন্দ্র করে এখানে গ্রামীণ মেলার আয়োজন করা হয় গ্রামীণ মেলা হরেক রকম দোকানপাট বসে। অনুষ্ঠানের দুইজন শিল্পী জারি গান পরিবেশন করেন তাহারা হলেন পারভেজ দেওয়ান ও দিবামনি দেওয়ান।জারিতে দুটি দল থাকে। প্রতিটি দলে একজন করে মূল গায়ক বা বয়াতি থাকে। তার সঙ্গে দোহার থাকে দুই থেকে চারজন এবং বাদক থাকে কমপক্ষে চারজন। অবশ্য বেশির ভাগ বয়াতি নিজেও একজন বাদকের কাজ করে। গান পরিবেশনের সময় বয়াতি দোতারা, সারিন্দা, বেহালা বা ডুগডুগি বাজায়, আর যন্ত্রীরা বাজায় ঢোলক, একতারা, দোতারা, সারিন্দা, বেহালা, বাঁশি, ঘুঙুর, খঞ্জনি, হারমোনিয়াম, কাঁসা ইত্যাদি। বয়াতি প্রথমে দর্শক-শ্রোতাদের দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে ধুয়া গান ধরে এবং দোহাররা তা সমবেত কণ্ঠে গায়।দুই জারিয়াল দলের মধ্যে প্রশ্নোত্তরমূলক যে গান গাওয়া হয় তা সাধারণত তিনটি পর্বে বিভক্ত, যথা—বন্দনা, গোষ্ঠগান ও মূল জারি গান। মূল গায়কই সব কিছু শুরু করে এবং দোহাররা তার চতুর্দিকে বসে তাকে সাহায্য করে। বয়াতি দোহারদের চারদিকে হাঁটে এবং বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি করে গান পরিবেশন করে।জারি গানে মেয়ে-পুরুষ, জীবাত্মা-পরমাত্মা, রাম-হনুমান, গুরু-শিষ্য, শরিয়ত-মারেফত, আদম-শয়তান, গণতন্ত্র-রাজতন্ত্র, সুফি-মোল্লা ইত্যাদি বিষয়ে প্রতিযোগিতা হয়। এসব বিষয় অবলম্বনে দুই দল জারিয়াল প্রশ্নোত্তর আকারে গান পরিবেশন করে। গানের শেষদিকে দুই দল মুখোমুখি দাঁড়িয়ে উপস্থিত বুদ্ধি মতো প্রশ্নোত্তর কাটাকাটি করে, যাকে বলা হয় ‘জোটকথ। এ অংশটি মূলত কবিগানেরই অনুরূপ।পুরুষদের মতো মেয়েদেরও জারিয়াল দল আছে। এখানে জারি গানের পাশাপাশি জারি নৃত্যেরও প্রচলন আছে। গুরুসদয় দত্তের একটি প্রবন্ধে এরূপ জারি নৃত্যের সচিত্র বর্ণনা পাওয়া যায়। নৃত্যসহকারে পরিবেশিত এই জারি গানে আসামের বহু উৎসবের প্রভাব লক্ষ করা যায়।
জারি গান পরিবেশনায় ঝিনাইদহের পাগলা কানাই ছিলেন প্রবাদতুল্য। এ ছাড়া আবদুল মালেক দেওয়ান, আবদুল খালেক দেওয়ান, আবদুল গণি বয়াতি, দারোগ আলী বয়াতি, সাই আলী বয়াতি, আব্বাস আলী ভাসান, মোহাম্মদ আলী আকবর মিয়া প্রমুখের নামও উল্লেখযোগ্য।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2019