২১ নভেম্বর ২০২৫, ০৫:৩৫ পূর্বাহ্ন, ২৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি, শুক্রবার, ৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
আজকের ক্রাইম ডেক্স
যাত্রীবেশে কুষ্টিয়া থেকে ঢাকাগামী নৈশ বাসে উঠে ডাকাত দল প্রথমে গাড়ির নিয়ন্ত্রণ নেয়। পরে যাত্রীদের হাত-পা ও চোখ বেঁধে মারধর এবং লুটের পর এক নারীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়।
অপকর্ম শেষে পথ বদল করে বুধবার ভোরে টাঙ্গাইলের মধুপুরের রক্তিপাড়া জামে মসজিদের উল্টো পাশে বালুর ডিবিতে বাস উঠিয়ে দিয়ে নির্বিঘ্নে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ওই সদস্যরা টানা তিন ঘণ্টা বাসের যাত্রীদের ওপর এ বর্বরতা চালায়। কুষ্টিয়ার বড়াইগ্রাম থেকে গত মঙ্গলবার রাতে ঈগল পরিবহনের বাসটি (পাবনা-ব-১১-০১৫৪) ৩০-৩৫ যাত্রী নিয়ে ঢাকার দিকে যাওয়ার পথে এ ঘটনা ঘটে।
নাটোরের বড়াইগ্রামের বাসিন্দা হাবিবুর রহমান হাবিব ওই বাসের নিয়মিত যাত্রী। বাসের সুপারভাইজার রাব্বি ও হেলপার দুলাল তাঁর পূর্বপরিচিত। তবে বাসের এবারের চালক নতুন। তিনি বড়াইগ্রাম থেকে বাসে ওঠেন। বাসটি সিরাজগঞ্জের কাছাকাছি দিবারাত্রি হোটেলে নৈশভোজের জন্য যাত্রাবিরতি দিয়ে দেড়টার দিকে আবার যাত্রা শুরু করে। পথে ১০-১২ জন তরুণ যাত্রী ওঠে। সবাই প্রায় ঘুমে। বাসটি বঙ্গবন্ধু সেতু পার হওয়ার পর যাত্রীবেশে থাকা ওই তরুণ দল অস্ত্রের মুখে একে একে সবাইকে বেঁধে ফেলে। তারা বাসের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে পাঁচ মিনিটের মধ্যে যাত্রীদের মোবাইল ফোন, টাকা, স্বর্ণালংকার লুট করে। পরে এক নারী যাত্রীকে চার তরুণ একে একে ধর্ষণ করে। বাসটি পরে পথ বদল করে টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ সড়কের মধুপুরের রক্তিপাড়া জামে মসজিদের পাশে ফেলে রেখে ডাকাত দল পালিয়ে যায়। হাবিবুর রহমান বলেন, সকালে স্থানীয় বাসিন্দারা আমাদের উদ্ধার করেন। পরে খবর পেয়ে মধুপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তঁাদের থানায় নিয়ে আসে।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের তারাগুনিয়া গ্রামের শিল্পী বেগম অসুস্থ মেয়ে জেসমিনকে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যাচ্ছিলেন। বুধবার কানের অপারেশন হওয়ার কথা ছিল। তিনি জানান, তাঁর কাছে থাকা ৩০ হাজার টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়েছে ডাকাতরা। এ সময় তাঁর স্বামী পিয়ার আলীকে ছুরি দিয়ে আঘাত করে আহত করেছে তারা। বেসরকারি চাকরিজীবী নারায়ণগঞ্জের বাসিন্দা আবদুর রশিদ নাটোর থেকে বাড়ি যাচ্ছিলেন অসুস্থ মাকে দেখতে। বেতনের ২২ হাজার ৮০০ টাকা ডাকাতরা নিয়ে গেছে।
গাড়িতে থাকা দেশি অস্ত্র উদ্ধারের কথা স্বীকার করেছেন মধুপুর থানার উপপরিদর্শক এনামুল হক। বিকেল ৫টায় ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ডিবি পুলিশের একটি দল তদন্ত কাজ চালাচ্ছে।
মধুপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাজহারুল আমিন জানান, মামলার প্রক্রিয়া চলছে। কাউকে আটক বা জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, সব দিক বিবেচনায় তদন্ত চলছে। বলার মতো কোনো তথ্য এখনও সামনে আসেনি।
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার জানান, কাউকে এখনও আটক করা হয়নি।