০১ মে ২০২৪, ১১:৪৮ অপরাহ্ন, ২১শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি, বুধবার, ১৮ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নোটিশ
জরুরী ভিত্তিতে কিছুসংখ্যক জেলা-উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া হবে যোগাযোগ- ০১৭১২৫৭৩৯৭৮
সর্বশেষ সংবাদ :
নানা আয়োজনে ঘোড়াঘাটে মে দিবস পালিত বানারীপাড়া উপজেলা নির্বাচনে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে এগিয়ে বিলকিস ঝালকাঠিতে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে “মহান মে দিবস উপলক্ষ্যে র‍্যালী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত” আজকের ক্রাইম নিউজে চুয়াডাঙ্গার মনোহরপুর বৈশাখী মেলার নামে জুয়ার আসর সংবাদ প্রকাশিত হওয়ায় রাতে প্রশাসনের হানা বরিশালে প্রধানমন্ত্রী সচিব পরিচয়ে ৫০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া সেই প্রতারক গ্রেপ্তার বরিশালে শ্রমজীবি মানুষের মাঝে খাবার স্যালাইন ও লেবুর সরবত বিতরন নীলফামারীতে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারসহ বিভিন্ন দাবিতে সাংবাদিকদের মানববন্ধন গৌরনদী থানার অভিযানে ৪ কেজি গাঁজা ও ১০৩ পিস ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ী জসিম ফকির গ্রেফতার চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় শ্যামপুর এসএমসি ক্লাবের উদ্যোগে তৃষ্ণার্থ পথচারীদের মাঝে ফ্রি শববত বিতরণ নতুন রূপে সাজলো খুলনার প্রবেশদ্বার , জিরো পয়েন্ট
দুই ওসির বিরুদ্ধে নারী পরিদর্শকের গুরুতর অভিযোগ। আজকের ক্রাইম-নিউজ

দুই ওসির বিরুদ্ধে নারী পরিদর্শকের গুরুতর অভিযোগ। আজকের ক্রাইম-নিউজ

আজকের ক্রাইম ডেক্স
রাজশাহী মেট্রোপলিটনের দুই ওসির কুপ্রস্তাবে সাড়া না দেয়ায় এক নারী পুলিশ পরিদর্শকের স্বামীকে ‘শিবিরকর্মী’ সাজিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া পূর্বের আক্রোশ মেটাতে এক এসআই দ্বারা উদ্দেশ্যমূলকভাবে তার স্বামীকে নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন ওই নারী পুলিশ পরিদর্শক।

বুধবার (২৪ মার্চ) বিকেলে রাজশাহী মহানগর পুলিশ (আরএমপি) কমিশনারের কাছে লিখিতভাবে দুই ওসি ও এক এসআইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগটি করেছেন ওই নারী পরিদর্শক।
অভিযোগ ওঠা দুই ওসি হলেন- আরএমপির বোয়ালিয়া থানার ওসি নিবারণ চন্দ্র বর্মণ এবং দামকুড়া থানায় কর্মরত ওসি মাহবুব আলম।

জানা গেছে, দামকুড়া থানার ওসি মাহবুব আলম ওই নারী পরিদর্শকের সাবেক স্বামী। ২০১৮ সালে ওসি মাহবুবের সঙ্গে তার বিচ্ছেদ ঘটে। এরপর ওই নারী পুলিশ কর্মকর্তা আরেকটি বিয়ে করেন। ওসি মাহবুবও পরে পুলিশে কর্মরত আরেক নারীকে বিয়ে করেন।
অভিযোগকারী নারী পুলিশ পরিদর্শক বর্তমানে রাজশাহীর চারঘাটে বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে সংযুক্তিতে কর্মরত আছেন। তার মূল কর্মস্থল ঢাকায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সারদা পুলিশ একাডেমিতে দায়িত্ব শেষে আবার ঢাকা সিআইডিতে ফিরে যাবেন তিনি।
অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, ২০১৩ সালে ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক পুলিশ পরিদর্শক মাহবুব আলমের সঙ্গে আমার বিয়ে হয়। শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতনের স্বীকার হয়ে আমি নিরূপায় হয়ে ২০১৮ সালে মাহবুব আলমের সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাই। এরপর থেকে মাহবুব আলম আমাকে তার সঙ্গে যোগাযোগ রাখার জন্য বিভিন্নভাবে বিরক্ত করতেন। পরবর্তীতে পারিবারিকভাবে রাজশাহী নগরীর চন্দ্রিমা থানার ললিতাহার এলাকার আব্দুল ওদুদের ছেলে মাহবুব হুসাইনের সঙ্গে আমার বিয়ে হয় এবং আমি সুখে শান্তিতে বসবাস করছি।
অভিযোগপত্রে আরও উল্লেখ বলা হয়, রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া থানার ওসি নিবারণ চন্দ্র বর্মণ রাজশাহীতে যোগদান করার পর আমার সঙ্গে পরিচয় হলে আমি তাকে কথা প্রসঙ্গে আমার বিষয়টা জানাই। এরপর থেকে নিবারণ চন্দ্র বর্মণ আমাকে বিভিন্ন সময় বিরক্ত করতে থাকেন। আমি বিষয়টি না বোঝার ভান করে তাকে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি।
পুলিশ পরিদর্শক মাহবুব আলম বোয়ালিয়া থানার ওসি (তদন্ত) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সেই সময় ওসি নিবারণ চন্দ্র বর্মণ মাহবুব আলমের বিষয়ে কথা বলার জন্য আমাকে মাঝে মাঝে ফোন করতেন এবং বলতেন ‘একই শহরে অন্য ছেলেকে বিয়ে করে তুমি কি সংসার করতে পার বা? তুমি তো বিপদে পড়ে যাবা।
এছাড়া পুলিশ পরিদর্শক মাহবুব আলমও আমার বর্তমান স্বামী মাহবুব হুসাইনকে মতিহার থানায় ডেকে নিয়ে বিভিন্ন হুমকি দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, নারী পুলিশ কর্মকর্তাকে বিয়ে করে তুমি ভালো থাকতে পারবে না। ওর সঙ্গে মিশে তুমি আমার সাথে শত্রুতা তৈরি কর না।
অভিযোগে ওই নারী আরও লিখেছেন, গত ১৬ মার্চ রাত দেড়টার সময় আমার স্বামী মাহবুব হুসাইন আমাকে ফোন করে বলেন বাসায় পুলিশ এসেছে। আমি আমার স্বামীর ফোন থেকে বোয়ালিয়া থানার ওসি (তদন্ত) লতিফের সঙ্গে কথা বলি। তারা তখন আমার শ্বশুর-শাশুড়ির বাসা থেকে চলে যান। এর কিছুক্ষণ পর আনুমানিক রাত ২টা ২০ মিনিটে পুনরায় এসে আমার স্বামীকে নিয়ে যায়।
এরপর সকাল ৮টা ১০ মিনিটের দিকে আমি বোয়ালিয়া থানায় আসি। আমি আমার স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে চাইলে ডিউটি অফিসার জানান ওসি স্যারের নিষেধ আছে। সকাল অনুমানিক ৮টা ৩০ মিনিটে ওসি নিবারণ চন্দ্র বর্মণ লুঙ্গি পরিহিত অবস্থায় থানায় এসে হেসে আমাকে বলেন, সেইতো দৌড়াইয়া আমার কাছে আসলা। কিন্তু সময়মতো আসো নাই, তখনতো আমাকে ভালো লাগে নাই।
তোমার স্বামী তো শিবির করে। তার নামে মামলা হবে। পরে আমার স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে দেখি আমার স্বামীর মুখে হাতে আঘাতের চিহ্ন।
ওইদিন সন্ধ্যা ৬টার দিকে আমার স্বামীসহ গ্রেফতার অন্যান্যদের কোর্ট নিয়ে আসে। তখন জানতে পারি আমার স্বামীর নামে সন্ত্রাস দমন আইনের মামলা দিয়েছে এবং তার নামের পাশে শিবিরকর্মী লিখে দিয়েছে। অথচ আমার স্বামী কোনোভাবেই জামাত-শিবিরের সঙ্গে জড়িত না। মূলত আমার স্বামী কোনো রাজনৈতিক দলের সাথেই জড়িত নয়। কোনো দলীয় কমিটিতে আমার স্বামীর নাম কেউ দেখাতে পারবে না।
এরপর আমি জেলখানায় আমার স্বামীর সাথে দেখা করতে গেলে আমার স্বামী আমাকে জানান, বোয়ালিয়া থানার এসআই মতিনসহ ওই টিমে থাকা অন্যান্য সদস্যরা শুধু আমার স্বামীকে নির্যাতন করেছে।
এসআই মতিন আমার স্বামীকে বলেছে, ‘মাহবুব স্যারের বউকে বিয়ে করার শখ হয়েছে তোর। মাহাবুব স্যার তোর জীবন বরবাদ করে দেবে। তুই মনে রাখিস।’
ওই নারী পরিদর্শক আরও লিখেছেন, আমি আমার স্বামীকে নিয়ে সহজ স্বাভাবিক ও শান্তিময় জীবন-যাপন করছিলাম। ওসি নিবারণ চন্দ্র বর্মণ তার ব্যক্তিগত নোংরা উদ্দেশ্য আমার ওপর প্রয়োগ করতে না পেরে এবং ওসি মাহবুব আলম আমার ওপর পূর্ববর্তী আক্রোশ থেকে আমার জীবনটা ধ্বংস করে দেওয়ার উদ্দেশ্যে আমার স্বামীকে মিথ্যা বানোয়াট মামলায় চালান দিয়েছে। আমি পারিবারিক এবং সামাজিকভাবে যেন হেয়প্রতিপন্ন হই সেজন্যই এ ধরনের কাজ করেছে।
আমি বাংলাদেশ পুলিশের একজন নারী সদস্য। শুধু ব্যক্তিগত আক্রোশবশত আমার এবং আমার স্বামীর ওপর এ শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনে সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক ওসি নিবারণ চন্দ্র বর্মণ এবং ওসি মাহবুব আলমসহ আমার স্বামীকে যারা থানায় শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন করছি।
বিষয়টি নিয়ে ওসি মাহবুব আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ ধরনের ঘটনা সঠিক নয় বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, আমার সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছিল। তারপর ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে। এরপর থেকে তার সঙ্গে আমার কোনো যোগাযোগ নেই। সে আমাকে ফাঁসাতে মিথ্যা অভিযোগ তুলেছে।
অভিযোগ প্রসঙ্গে ওসি নিবারণ চন্দ্র বর্মণ বলেন, ওই নারীর সঙ্গে কোনো আপত্তিকর কথা হয়নি। তার স্বামীকে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি) কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক জানান, তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2019