২১ নভেম্বর ২০২৫, ০২:০৭ পূর্বাহ্ন, ২৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি, শুক্রবার, ৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নোটিশ
জরুরী ভিত্তিতে কিছুসংখ্যক জেলা-উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া হবে যোগাযোগ- ০১৭১২৫৭৩৯৭৮
সর্বশেষ সংবাদ :
স্ত্রীকে নির্যাতনের মামলায় বরগুনার শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রবিউল হত্যা মামলায় নিরপরাধদের জড়ানোর অভিযোগে বাবুগঞ্জে বিএনপি’র একাংশের সংবাদ সম্মেলন বাবুগঞ্জের ছাত্রদল নেতার খুনিদের গ্রেপ্তার পরবর্তী দৃষ্টান্ত ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ চুয়াডাঙ্গায় ৩ তক্ষকসহ গ্রেফতার ১জন বাবুগঞ্জ এলজিইডি’র এলসিএস কমিউনিটি অর্গানাইজার সানজিদার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার ও হয়রানির অভিযোগ জোটের চাপ নাকি অভ্যন্তরীণ কোন্দল? বরিশাল -৩ আসনে এখনো প্রার্থী চূড়ান্ত করতে পারেনি বিএনপি। ভোটারদের মাঝে ‘ভিআইপি চমক’-এর গুঞ্জন বাবুগঞ্জে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ক্রীড়া সামগ্রী বিতরণ জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস এর ৫০ বছর পূর্তীতে ঝালকাঠি জেলা জাসাসের উদ্যোগে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বাংলাবান্ধায় ভারসাম্যহীন নারী গণধর্ষণেন শিকার চার ধর্ষক আটক বাবুগঞ্জে ছাত্রদল নেতা হত্যাকাণ্ড: ২১ জনের নামে মামলা!
সুরের ভূবনে উদিত তারা-তুষা হাসান। আজকের ক্রাইম-নিউজ

সুরের ভূবনে উদিত তারা-তুষা হাসান। আজকের ক্রাইম-নিউজ

–নিজস্ব প্রতিবেদক :- খুব ছোট বেলা থেকে আমার গান শেখার সুযোগ হয়নি, কিন্তু গানের প্রতি ছিলো আমরা অনেক ভালোবাসা। জীবনে কখনো ভাবিনি গান নিয়ে এতটা পথ পারি দিতে পারবো। জীবনের প্রথম গান শেখা আমার মায়ের কাছ থেকে।শুনেছি মা ছোটবেলায় খুব ভালো গান গাইতেন। আমি যখন পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী তখন মায়ের মুখে প্রথম শেখা কাজী নজরুল ইসলামের সেই বিখ্যাত গান “আমার গানের মালা আমি করবো কারে দান”। তখন থেকেই গান শেখার ইচ্ছে এবং আগ্রহ বাসা বেঁধেছিল মনের কোনে। কিন্তু ৬ বছর বয়সে বাবাকে হারানোর পর বিভিন্ন প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে জীবন কাটাতে হয়েছে তাই গান শেখাটা আর হয়ে ওঠেনি এমনটাই বলেন গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলা গ্রামের মেয়ে তুষা।

দুচোখে হাজারও স্বপ্ন নিয়ে তিনি আরো বলেন দীর্ঘদিন গানের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিলো। আমি যখন ৯ম শ্রেনীতে পড়ি তখন আবার গানের সাথে সংযোগ স্থাপন হলো, সুযোগ হলো গান শেখার। জীবনে প্রথম হারমোনিয়াম বাজিয়ে “সা,রে,গা,মা,পা,ধা,নি,” এই সাত স্বরের সাথে পরিচয় করে দিয়েছিলেন আমার সংগীত জীবনের প্রথম শিক্ষা গুরু “মোজাম্মেল হক” স্যার এবং স্যারের কাছ থেকেই আমার সংগীত জীবনের হাতেখড়ি।

স্যারের সাথে পরিচয়ের একটা ছোট গল্প আছে, আমি আলহাজ্ব ধনাই ব্যাপারি মেমোরিয়ান উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণীর ছাত্রী। স্কুলে তখন বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছিলো। আমার জীবনের তখন প্রথম স্টেজে সংগীত পরিবেশনা। আমি সেই অনুষ্ঠানে ক’ বিভাগে লোকসংগীতে প্রথম স্থান অর্জন করি। অনুষ্ঠান শেষে স্যারের সাথে কথা হলে স্যার আমাকে একটা কথাই বলেছিলেন,”তুমি পারবে সংগীত নিয়ে অনেক দূর এগিয়ে যেতে। তাই গানটাকে ভালো ভাবে শিখতে হবে।”

এই একটা কথাই আমার সংগীত শেখার আগ্রহ এবং চেষ্টা হাজার গুন বাড়িয়ে দিয়েছিলো।অনেক আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও সংগীত নিয়ে উপযুক্ত শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ হয়ে ওঠেনি কখনোই।

তারপর ২০০৯ সালে শ্রীপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক এবং ২০১১ সালে গাজীপুররের মুক্তিযোদ্ধা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ন হই।

৯ম শ্রেনী থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এই কয়েক বছরে আমি সংগীতের সাথে খুব ভালো ভাবেই জড়িয়ে পরি। ঠিক তখন থেকেই সংগীত নিয়ে চিন্তা ভাবনা, সংগীতের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন, কিভাবে প্র্যাকটিসের মাধ্যমে আরো একটু ভালো গাইতে পারবো এই সকল বিষয় নিয়ে চর্চা ও অনুশীলন, সংগীত নিয়ে ভালো কিছু করার মানুষিক প্রস্তুতি নিতে থাকি।

আমার এই ক্ষুদ্র জীবনে যেই সংগীত শিক্ষকের জন্য আজ আমার সংগীত নিয়ে পড়াশোনা করার সুযোগ হয়েছে তার কথা না বললেই নয় তিনি হলেন,গুণী মানুষ সংগীত শিক্ষক এস এম সুজন স্যার। তিনি একাধারে কণ্ঠসঙ্গীত ও তাল বাদ্যযন্ত্রে পারদর্শী ছিলেন। স্যার আমাকে সবসময় গান নিয়ে স্বপ্ন দেখিয়েছেন ভালো কিছু করার।

তারপর ২০১৩ সালে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সংগীত বিষয়ে স্নাতক করার সুযোগ পাই। তবে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশিদিন পড়াশোনা করার সুযোগ হয়নি আমার। ২০১৪ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন সময়ে সকল সংগীত শিক্ষকদের সুশিক্ষা দানের কারনে আমি “ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর কালচারাল রিলেশন”(ICCR) থেকে বৃত্তি নিয়ে হিন্দুস্থানী ক্লাসিকাল মিউজিকে কলকাতার রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ডিগ্রী অর্জনের একটা বড় সুযোগ আসে আমার জীবনে । পরবর্তী সময়ে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই “লোকসংগীত” নিয়ে স্নাতকোত্তর শেষ করি।

কলকাতায় থাকাকালীন সময়ে অনেক সংগীত গুরুদের কাছে সঙ্গীতের তালিম নেওয়ার সৌভাগ্য হয়েছিল। আমার কলকাতার জীবনের প্রথম সংগীত শিক্ষাগুরু আমার গুরুমা সঞ্চিতা চৌধুরী। গুরুমার কাছে আমি ধ্রুপদ গানের গায়ন পদ্ধতি, ধ্রুপদ গান সম্পর্কে প্রাথমিক ভাবে জ্ঞান অর্জন করেছি,গুরুমা রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের কন্ঠ সংগীত বিভাগের শিক্ষিকা এবং পরবর্তী সময়ে আরো অনেক সংগীত গুরুদের কাছে আমি শিক্ষা গ্রহণ করেছি। যার কাছে আমি দীর্ঘদিন হিন্দুস্থানী ক্লাসিকাল মিউজিকের তালিম নিয়েছি এবং এখনও নিচ্ছি, যিনি আমাকে এই ক্ষুদ্র সঙ্গীতজীবনে হাতে ধরে সঙ্গীতের তালিম দিয়েছেন, সংগীতের সকল বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান দান এবং একজন কন্ঠ সংগীত শিল্পীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ভয়েস ট্রেনিং সহ সুর সাধনের পদ্ধতি হতে ধরে শিখিয়েছেন, আমার গুরুজী জয়দীপ চক্রবর্তী। আমি আমার গুরুজীর প্রতি অনেক ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।লোকসংগীত নিয়ে স্নাতকোত্তর শেষ করার পর এখন লোকসঙ্গীতের বিভিন্ন ধারার গান নিয়ে চর্চা চলছে। লোকগান মানুষের মনের কথা বলে মানুষের আত্মার কথা বলে। পরবর্তী সময়ে আমি লোকসংগীতের যে কোন একটি ধারার গান নিয়ে পি.এইচ.ডি ডিগ্রি অর্জন করতে চাই। বাংলার এই মাটির সুরকে, লোকগানকে আঁকড়ে ধরে বাঁচতে চাই জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2019