১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:২৩ পূর্বাহ্ন, ৮ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি, বৃহস্পতিবার, ৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নোটিশ
জরুরী ভিত্তিতে কিছুসংখ্যক জেলা-উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া হবে যোগাযোগ- ০১৭১২৫৭৩৯৭৮
সর্বশেষ সংবাদ :
মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা গলায় তিল থাকা নারীদের যেসব গুণ থাকে বরিশালে হাসপাতালের প্রিজন সেলে খুনের ঘটনায় ৩ কারা পুলিশ বরখাস্ত বাবুগঞ্জে ইউপি চেয়ারম্যানকে অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ: ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া দেশের উন্নয়ন ও শান্তির জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে- রাঙ্গামাটির সাংগ্রাই উৎসবে পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী বানারীপাড়ায় বর্ষবরণে বৈশাখী মেলা ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান স্নান করতে গিয়ে দূর্গাসাগর দীঘিতে ডুবে একজনে মৃ’ত্যু নলছিটিতে কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ, অভিযুক্ত গ্রেফতার ডিমলা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ১৪ জনের মনোনয়নপত্র দাখিল। ঘোড়াঘাট উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ২২ জনের মনোনয়ন দাখিল
যুক্তরাষ্ট্র কী গৃহযুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে। আজকের ক্রাইম-নিউজ

যুক্তরাষ্ট্র কী গৃহযুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে। আজকের ক্রাইম-নিউজ

অনলাইন ডেস্ক

দেড় শতাধিক বছর আগের পুনরাবৃত্তি ঘটিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আবারো গৃহযুদ্ধ বাধাতে চাচ্ছেন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকরা-এমন আশংকা প্রকাশ করা হচ্ছে দেশজুড়ে সশস্ত্র বিক্ষোভ কর্মসূচির কারণে। ক্যাপিটল হিল তথা ওয়াশিংটন ডিসি ছাড়াও ৫০টি স্টেটের রাজধানীতেও সশস্ত্র বিক্ষোভের কর্মসূচির পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা -এফবিআই ১১ জানুয়ারি সতর্কবার্তা জারি করেছে।

৬ জানুয়ারিতে ট্রাম্পের নির্দেশে হাজার হাজার মানুষের ক্যাপিটল হিলে সন্ত্রাসী হামলার চেয়েও ভয়ংকর রূপ নিতে পারে শনিবার থেকে ২০ জানুয়ারি বুধবার পর্যন্ত লাগাতার এ কর্মসূচিতে। এ নিয়ে পেন্টাগণসহ স্টেট প্রশাসনের পাশাপাশি ওয়াশিংটন ডিসি ও ক্যাপিটল হিল প্রশাসনেও নানা প্রস্তুতি চলছে।

ইতিমধ্যেই ক্যাপিটল হিলে শপথ গ্রহণের কার্যক্রমকে নিরাপদ রাখার অভিপ্রায়ে ১৫ হাজার ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। হামলা বা অন্য কোন রকম হুমকি তোয়াক্কা না করেই নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস যথারীতি ক্যাপিটল হিলের সামনের মঞ্চ থেকেই প্রকাশ্যে শপথ গ্রহণের সংকল্প ব্যক্ত করেছেন।
উল্লেখ্য, এই শপথ অনুষ্ঠানে আগে দুই লাখ আমেরিকানকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও এবার করোনার তান্ডবে মাত্র এক হাজার অতিথিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। অর্থাৎ সবটাই চলবে ভার্চুয়ালে।

এমনকি সুসজ্জিত মহড়ার ব্যাপারটি আমেরিকানরা প্রত্যক্ষ করবেন টিভি চ্যানেলে। তবে ট্রাম্পের সমর্থকরা যুদ্ধংদেহী কর্মসূচি চালালে সবকিছু পাল্টে যেতে পারে বলে শংকা রয়েছে। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনী ১৬ জানুয়ারি থেকে ২৪ তারিখ পর্যন্ত এমন বিক্ষোভ অথবা উচ্ছৃঙ্খলতা কিংবা সন্ত্রাসী তান্ডব মোকাবেলার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে বিভিন্ন স্টেট ও সিটি প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।
আর এসব কারণেই গোটা যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে একধরনের উত্তেজনা বিরাজ করছে।

যাকে গৃহযুদ্ধের মত পরিস্থিতির সাথে তুলনা করা হচ্ছে। কারণ, ঘোষিত কর্মসূচিতে ‘সশস্ত্র অভিযান’ এবং আক্রমণের প্রসঙ্গটিও রয়েছে। উল্লেখ্য, ১৮৬০-৬১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চলীয় সাউথ ক্যারলিনা, মিসিসিপি, ফ্লোরিডা, আলাবামা, জর্জিয়া, লুইজিয়ানা, টেক্সাস, ভার্জিনিয়া, আলকানসান, টেনেসী এবং নর্থ ক্যারলিনা-এই ১১ স্টেটে দাসপ্রথা বিরোধী জন-বিক্ষোভ থেকে গৃহযুদ্ধ চলেছে। সেটি ছিল মান্ধাতার আমলের বর্বরতার প্রতিবাদ।
ক্ষমতাসীন ট্রাম্পকে যদি মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে সরিয়ে দেওয়া হয় কিংবা তিনি যদি বাইডেনের শপথ অনুষ্ঠানে না যান তাহলে ২০ জানুয়ারি সকল স্টেট, স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় আদালত ভবনগুলোতে ঝড়ের বেগে ঢুকে সেগুলো দখল করে নিতে একটি গোষ্ঠী ডাকও দিয়েছে জানিয়ে এফবিআইয়ের এক অভ্যন্তরীণ বুলেটিনে সতর্ক করা হয়েছে।

৩ নভেম্বরের নির্বাচনে পরাজয়কে মেনে নিতে পারছেন না ট্রাম্প নিজেও। নির্বাচনে ভোট ডাকাতির উদ্ভট অভিযোগে মেতে উঠেছে ট্রাম্পের কট্টরপন্থি সমর্থকরা। ৬ এপ্রিলের সন্ত্রাসী হামলায় উষ্কে দেয়া এবং ক্যাপিটল হিলে ইতিহাসে জঘন্যতম একটি অধ্যায়ের সংযোজন ঘটানোর জন্যে কংগ্রেসের নিম্নকক্ষে সোমবার ট্রাম্পকে ইমপিচের বিল উত্থাপিত হয়েছে। যার ওপর ভোট হবে বুধবার। এ বিল পাশের পরই তা পাঠানো হবে ইউএস সিনেটে। ১৯ জানুয়ারি অর্থাৎ বাইডেনের শপথ গ্রহণের আগের দিন থেকে শপথ গ্রহণ পর্যন্ত কিংবা তার পরেও ট্রাম্পকে অপসারণের এই বিল পাশের কার্যক্রম অব্যাহত থাকতে পারে। সে সময় অবশ্য ট্রাম্প-আমলের যবনিকা ঘটবে। তবে সামনের নির্বাচনে ট্রাম্প যাতে প্রার্থী হতে না পারেন এবং অবসরকালিন নিরাপত্তা-সহায়তাসহ ভাতা না পান সে ব্যবস্থাও হতে পারে এই বিল আইনে পরিণত হলে। কারণ, উভয় পার্টির সিংহভাগ সদস্যই মনে করছেন যে, ট্রাম্প হচ্ছেন ‘সন্ত্রাসী’ এবং যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের জন্যে মারাত্মক হুমকি।

মজার ব্যাপার হচ্ছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সোমবার নিজেই এক ঘোষণায় ২০ জানুয়ারিতে ওয়াশিংটন ডিসিতে জরুরী অবস্থা জারি করেছেন। শপথ অনুষ্ঠানকে নিরাপদ রাখতে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ডিপার্টমেন্ট এবং ফেডারেল ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সিকে সর্বাত্মক ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। অথচ ৬ জানুয়ারি তিনি নিজেই ক্যাপিটল হিলে আক্রমণের সময় এমন একটি পদক্ষেপ নিতে আগ্রহী ছিলেন না অথবা ইচ্ছা করেই গণতন্ত্রের সূতিকাগারকে ধ্বংসের ষড়যন্ত্রে ছিলেন, যার মাশুল এখন তাকে কড়ায় গন্ডায় দিতে হচ্ছে।

প্রসঙ্গত: উল্লেখ্য, শিক্ষা মন্ত্রী ও পরিবহন মন্ত্রীর পর হোমল্যান্ড সিকিউরিটি মন্ত্রী চাদ উল্ফও ট্রাম্পের ঐ সন্ত্রাসী আচরণের প্রতিবাদে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। সকলে আশা করেছিলেন যে, ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেঞ্চ সংবিধানের ২৫তম সংশোধনীর আলোকে মন্ত্রিপরিষদের সকলকে নিয়ে ট্রাম্পকে হোয়াইট হাউজ থেকে সরিয়ে দেয়ার জন-আকাঙ্খিত প্রত্যাশার পরিপূরক পদক্ষেপ গ্রহণে নিজেকে গণতান্ত্রিক ইতিহাসে ভিন্ন এক আসনে অধিষ্ঠিত করবেন। কিন্তু অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে (বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) পেঞ্চ সে দায়িত্বটি পালনে সক্ষম হচ্ছেন না। এজন্যে কংগ্রেসকেই তার ঐতিহাসিক ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হচ্ছে বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মন্তব্য করেছেন। ক্যাপিটল হিলে প্রেসিডেন্টের মদদে ও উষ্কানীতে সন্ত্রাসী হামলার বিষয়টি সমস্ত গণমাধ্যমের শিরোনাম বুধবার পর্যন্ত রয়েছে। আলোচনা-সমালোচনার কেন্দ্র-বিন্দুতে ট্রাম্প এবং তার মাস্তান বাহিনী। রিপাবলিকান পার্টির অধিকাংশই এখন ডেমক্র্যাটদের পাশে। ভোটারের মনরক্ষায় অথবা জনসমর্থন ধরে রাখতেই তাদেরকে ট্রাম্প-সম্পৃক্ততা ছাড়তে হচ্ছে। অনেকে ট্রাম্পের রিপাবলিকান পার্টি ত্যাগের ঘোষণাও দিচ্ছেন।

করোনা মহামারিতে বিপর্যস্ত আমেরিকায় ‘ট্রাম্প-তান্ডব’-এ এক ধরনের হতাশা সৃষ্টি হয়েছে জনজীবনে। প্রশাসনের ভেতরে ট্রাম্পের সমর্থকরাও হাত গুটিয়ে নিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, ইতিমধ্যেই তারা চিহ্নিত হয়েছেন এবং বাইডেন প্রশাসন এলেই তারা চাকরি হারানোর আশংকায় পড়েছেন। এমন অবস্থা নতুন নয়। দলীয় বিবেচনায় অনেক মানুষের চাকরি হয় ফেডারেল প্রশাসনের বিভিন্ন সেক্টরে। নতুন সরকার এলে তাদের প্রায় সকলকেই বিদায় নিতে হয়। বাইডেনের পেমক্র্যাটরাও সে প্রস্তুতিতে রয়েছেন। আর এমন পরিস্থিতির কারণেই করোনা-টিকা প্রদানের কার্যক্রম স্থবিরতায় আক্রান্ত কিনা সেটিও বিবেচনায় রাখছে প্রশাসনিক কর্মকর্তারা। বিশেষ করে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ট্রাম্প-সমর্থকরা কোনভাবেই থাকতে পারবেন না এটা প্রায় নিশ্চিত।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2019