মোমিন মেহেদী
করোনায় ৬০ জন আক্রান্ত যখন; তখন সারাদেশে উপোসমানুষের সংখ্যা কোটির ঘরে। গেন সাথে সুস্থ্য হয়ে বাসায় ফিরেছে ১৬ জন। আশার এই কথার সাথে আরো একধাপ এগিয়ে বলতে চাই- চিনে সাম্প্রতিক এক গবেষণায় বলা হয়েছে, তাপমাত্রা ৮.৭২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পার করার পর ভাইরাসের সংক্রমণ কমেছে। বিশেষজ্ঞদের অনেকে আবার দাবি করেছে, বেশি তাপমাত্রা বা আর্দ্রতা সহ্য করতে পারে না এই ভাইরাস। আর এরই মধ্যে মহামারি নভেল করোনাভাইরাস ছড়ানো ঠেকাতে ইউরোপ ও আমেরিকাজুড়ে পোশাকের আউটলেটগুলো বন্ধ হওয়ার মধ্যে বিদেশি ক্রেতারা অন্তত ১৪৮ কোটি ডলারের তৈরি পোশাকের ক্রয়াদেশ বাতিল করেছে। যেখানে বাংলাদেশের নামও ছিলো। দেখতে দেখতে এ পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের ১৩৬ টি ব্র্যান্ড তাদের অর্ডার বাতিল বা স্থগিত করেছে। এর মধ্যে এইচঅ্যান্ডএম, প্রাইমার্ক, এলকট, সিঅ্যান্ডএ, পিপকো, সিএন্ডএ জার্মানি, টম টেইলর, ওয়ালমার্ট, টম টেইল ও জারা উল্লেখযোগ্য। চলমান এসব ক্রয়াদেশ বাতিল হওয়ায় দেশের এক হাজার ৮৯টি তৈরি পোশাক কারখানার প্রায় ১২ লাখ শ্রমিকের জীবিকা ঝুঁকির মুখে পড়েছে। চীন থেকে নভেল করোনাভাইরাসের নতুন কেন্দ্র ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ার পর কোয়ারেন্টিন ও জনসমাগম বন্ধসহ সতর্কতামূলক নানা পদক্ষেপের মধ্যে চাহিদা কমে যাওয়ায় বিশ্বজুড়ে পোশাকের খুচরা বিক্রিতে ধস নেমেছে। ব্র্যান্ডগুলোর খুচরা বিক্রির দোকানগুলো একে একে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। বিখ্যাত ফ্যাশন ব্র্যান্ডের মালিক ইন্ডিটেক্স ও এইচঅ্যান্ডএম ইউরোপজুড়ে তাদের দোকান বন্ধ রেখেছে। ক্রেতারা জাহাজে মাল তোলার অনুমতি দিচ্ছেন, কিন্তু গুদামের মাল নিচ্ছেন না। যেসব ক্রয়াদেশ দিয়েছিলেন সেগুলোও বাতিল করে দিচ্ছেন। আমার কাছে বারবার সমনে হচ্ছে যে, যদি দ্রুত সরকার সাহসী পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে সব মিলিয়ে আমরা অত্যন্ত খারাপ ও অস্থির সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। এত বড় ক্ষতি সামলানোর মতো কোনো উপায় অন্তত আমাদের মত দুর্নীতিগ্রস্থ দেশের নেই। বিদেশী বায়াররা যদিও কথা বলার সময় তারা অনেক বড় বড় কথা বলে, মানবাধিকারের কথা বলে। কিন্তু তাদের কারণে কয়দিন পরই লাখ লাখ শ্রমিক বেকার হয়ে যাবে, সেটার দায়ভার তারা নিচ্ছে না। অন্তত শ্রমিকদের সামনের তিন মাসের বেতনের সমপরিমাণ টাকা পরিশোধ করতে ক্রেতাদের প্রতি আহ্বান জানচ্ছি। বিশ্বে তৈরি পোশাকের সরবরাহকারী হিসেবে চীনের পর দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা বাংলাদেশ খ্যাতনামা ফ্যাশন ব্র্যান্ডগুলোর ওপর পুরোপুরি নির্ভরশীল। দেশের রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮৫ শতাংশই আসে এই খাত থেকে। প্রায় সাড়ে চার হাজার তৈরি পোশাক কারখানায় কাজ করেন অন্তত ৫০ লাখ শ্রমিক, যাদের বেশিরভাগই নারী। এদের অনেকের আয়ের ওপরই পুরো পরিবার নির্ভরশীল। কারখানা বন্ধ হয়ে গেলে লাখ লাখ পরিবারের দুই বেলা দুই মুঠো খাবার বন্ধ হয়ে যাবে। এমন বাজে অবস্থা চাই না, চাই না করোনার কারণে অন্তত চিকিৎকরাও দূরত্ব তৈরি করুক। চাই তারা পিপিই পরে মানুষ বাঁ^চাতে লড়–ক। তাদের একটু অবহেলা আর ভয়ের কারণে কিন্তু রাজশাহীতে এক তরুণকে হারিয়েছি আমরা। যা আমাদেরকারোই কাম্য নয়। তবুও বাস্তবতা এই যে, করোনা সন্দেহে চিকিৎসা দেয়নি ৫ হাসপাতাল, ধুঁকে ধুঁকে মৃত্যু হয়েছে একজনের। বিশদ ঘটনায় জানতে পেরেছি- করোনা আক্রান্ত সন্দেহে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির পর মারা গেছেন আল আমিন নামের এক যুবক। তার বাড়ি নওগাঁ জেলার রানীনগর উপজেলার অলংকার দিঘি গ্রামে। নারায়ণগঞ্জ থেকে বাড়িতে যাওয়ার পর যুবক আল আমিন (২২) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে মারা গেছেন। তীব্র জ্বর, সর্দি, কাশি, ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে গ্রামে যান। তবে বেশি বোঝা, বেশি জ্ঞানী, হুজুগে গ্রামের লোকেরা তাকে বাড়িতে রাখতে দেয়নি। নওগাঁ জেলা সদর হাসপাতাল, আদমদিঘি উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র, রানীনগর উপজেলা হাসপাতালসহ পাঁচটা হাসপাতাল ঘুরেও কোনো চিকিৎসা না দিয়ে বিদায় করে দিলে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে রাত সাড়ে আটটার দিকে আল আমিন মারা যান। মৃত যুবক আল আমিনের বাবা মোখলেসুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেছেন- তার ছেলে নারায়ণগঞ্জে একটি কাপড়ের দোকানে বিক্রয়কর্মীর কাজ করতেন। সে প্রচন্ড জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে বাড়িতে ফেরে। এ সময় গ্রামের লোকেরা তাকে গ্রামে রাখতে বাধা প্রদান করেন। ফলে দ্রুত তাকে নওগাঁ জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে সেখানকার চিকিৎসকরা আল আমিনকে চিকিৎসা দিতে অস্বীকার করেন ও ফেরত পাঠান। উপায়ন্তর না দেখে অসুস্থ ছেলেকে নিয়ে মোখলেসুর রহমান ছুটেন পার্শ্ববর্তী বগুড়ার আদমদিঘি উপজেলা হাসপাতালে। সেখানেও তাকে চিকিৎসা দিতে অস্বীকার করা হয়। পরে রানীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আল মামুনকে জানালে তার হস্তক্ষেপে আল আমিনকে প্রথমে রানীনগর উপজেলা হাসপাতালে ও পরে আবার নওগাঁ জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে বিকালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা আল আমিনকে ২৩ নং মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি করেন। রাত সাড়ে ৮টার দিকে আল আমিন মারা যান। যতদূর জেনেছি- মেডিকেলের ডেথ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে- সর্দিজ্বর ও শ্বাসকষ্টসহ করোনার বিভিন্ন উপসর্গ থাকলেও আল আমিন মারা গেছেন মেনিনজাইটিস বা মস্তিস্কের সংক্রমণে।

এর আগে কিন্তু সরকার জানায়- করোনাভাইরাসের কারণে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারি ছুটি থাকবে। এর মধ্যে ২৯ মার্চ থেকে ২ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি থাকবে। এর আগে ও পরে ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের ছুটি। ২৭ ও ২৮ মার্চের সাপ্তাহিক ছুটিও যোগ হবে। এ ছাড়া ৩ ও ৪ এপ্রিল সাপ্তাহিক ছুটি এ ছুটির সঙ্গে যোগ হবে। তবে এ ছুটি কাঁচাবাজার, খাবার, ওষুধের দোকান, হাসপাতাল এবং জরুরি সেবার জন্য প্রযোজ্য হবে না। এছাড়া আজ মঙ্গলবার থেকে বিভাগীয় ও জেলাশহরগুলোতে সামাজিক দূরত্ব এবং সতর্কতামূলক ব্যবস্থার জন্য বেসরকারি প্রশাসনকে সহায়তা দিতে সেনাবাহিনী নিয়োজিত হবে। আর মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সাধারণ ছুটি মানে সরাসরি আইসোলেশন না হলেও নিজেকে পৃথক রেখে অন্যকে আক্রান্ত হওয়া থেকে রক্ষা করার ব্যবস্থা বলে উল্লেখ করে আরো বলা হয়- এ সময়ে যদি কোনো অফিস-আদালতে প্রয়োজনীয় কাজকর্ম করতে হয় তাহলে তাদের অনলাইনে সম্পাদন করতে হবে। সরকারি অফিস সময়ের মধ্যে যারা প্রয়োজন মনে করবে তারাই শুধু অফিস খোলা রাখবে। গণপরিবহণ চলাচল সীমিত থাকবে। জনসাধারণকে যথাসম্ভব গণপরিবহণ পরিহারের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। যারা জরুরি প্রয়োজনে গণপরিবহণ ব্যবহার করবে তাদের অবশ্যই করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হওয়া থেকে মুক্ত থাকতে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করেই গণপরিবহণ ব্যবহার করতে হবে। গাড়ি চালক ও সহকারীদের অবশ্যই গস্নাভস এবং মাস্ক পরাসহ পর্যাপ্ত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। জনগণের প্রয়োজন বিবেচনায় ছুটিকালীন সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংক সীমিত আকারে ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালু রাখার প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবে। ২৪ মার্চ থেকে বিভাগীয় ও জেলা শহরগুলোতে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতকরণ ও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সুবিধার্থে সশস্ত্র বাহিনী জেলা প্রশাসনকে সহায়তায় নিয়োজিত থাকবে। দেশের ৬৪ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তাদের নিজ নিজ জেলার প্রয়োজন অনুযায়ী সশস্ত্র বাহিনীর জেলা কমান্ডারকে রিকুইজিশন দেবে। করোনাভাইরাসের কারণে কোনো ব্যক্তি যদি স্বাভাবিক জীবনযাপনে অক্ষম হয় তাহলে সরকারের যে ঘরে ফেরার কর্মসূচি রয়েছে, সে কর্মসূচির মাধ্যমে তারা নিজ নিজ গ্রামে ফিরে গিয়ে আয় বৃদ্ধির সুযোগ পাবে। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসকরা প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করবে। ভাসানচরে এক লাখ লোকের আবাসন ও জীবিকা নির্বাহের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে সরকার। এ সময় যদি দরিদ্র কোনো ব্যক্তি ভাসানচরে যেতে চান তাহলে তারা যেতে পারবেন। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসকরা প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করবেন। করোনাভাইরাসজনিত কার্যক্রম বাস্তবায়নের কারণে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আয় অন্ন সংস্থানের অসুবিধা নিরসনের জন্য জেলা প্রশাসকদের খাদ্য ও আর্থিক সহায়তা প্রদানের নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে এ সহায়তা প্রদান করা হবে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) কোরোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য ৫০০ জন চিকিৎসকের তালিকা তৈরি ও তাদের প্রস্তুত রাখবে। সব ধরনের সামাজিক রাজনৈতিক ও ধর্মীয় সমাগম সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বিশেষ করে অসুস্থ জ্বর সর্দি কাশিতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মসজিদে না যাওয়ার জন্য বারবার নিষেধ করা হয়েছে। তারপরও সম্প্রতি মিরপুরে একজন বৃদ্ধ অসুস্থ অবস্থায় মসজিদে যান। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ওই ব্যক্তি পরে মৃত্যুবরণ করেন। তাই ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের প্রতি অসুস্থ অবস্থায় মসজিদে নামাজ আদায় করতে না যাওয়ার অনুরোধ জানানো হয়।

এত নির্দেশ, এত কাহিনী, এত কিছুর পাশাপাশি সবকিছু ছাপিয়ে আমাদের দেশে স্বাধীনতার মাসে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ছবিকে সামনে রেখে থানায় ওসির রুমে মানুষকে খুন করা হয়েছে। পাশে কিন্তু পবিত্র কাবা শরীফের ছবি ঝুলানো ছিলো। ধর্ম মানে না নিকৃষ্ট এই জাতির অধিকাংশ মানুষ, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকেও মানেনি। নির্মমভাবে বরগুনার আমতলী থানায় যেরাতে খুন করা হয় অপরাধহীন নিরহম মানুষটিকে, সে রাতেই মসজিদে ধর্ষণ করেছে গফরগাঁওয়ে এক পাষন্ড মাদ্রাসা পড়–য়া ইমাম। তবু বাংলাদেশে সবাকিছুর পাশাপাশি স্বাধীনতার মাসে মাত্র ৫ ভাগ ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন ৩ এমপি। ২১ মার্চ-এর নির্বাচন কি কখনো ভুলতে পারবে বাংলাদেশের মানুষ? যখন সারা বিশ্ব করোনাক্রান্ত হওয়ার ভয়ে সতর্ক, তখন নির্বাচন হয়েছে এদেশে! এত গর্ধব বাংলাদেশের মানুষ! ভাবতেই লজ্জায় গা গুলিয়ে আসে।

তবে বরাবরের মত অবিরত কেউ না কেউ বেরিয়ে আসবে ভেবে আশাবাদী হই। যেমন বেরিয়ে এসেছিলেন নিজের সাহসের পাখায় ভর করে ব্রিটিশ বিরোধী বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম। তেমন সময়ের সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলার জন্য কেউ না কেউ আসবেই। কথা না বলুক দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের লেজুড় হয়ে যাওয়া যুক্তফ্রন্ট-এর এমপি মাহী বি চৌধুরী, মেজর মান্নান; কথা না বলুক ৫ ভাগ ভোটের নির্বাচন নিয়ে আন্দালিব রহমান পার্থ(যিনি জামাই হিসেবে নিরব ভূমিকায় আছেন), কথা না বলুক যুদ্ধাপরাধীর-অস্ত্র ব্যবসায়ী মুসা সাহেবের ছেলে ববি হাজ্জাজ(যিনি সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাই শেখ সেলিমের বেয়াইর ছেলে), কথা না বলুক জোনায়েদ সাকী(যিনি নির্বাচন নির্বাচন খেলা খেলে বিভিন্ন সময় সরকারের সকল বেআইনী নির্বাচনকে বৈধতার রাস্তা দেখিয়ে দিয়েছেন); তাতে কিছু যায় আসে না, কথা বলবে বাংলাদেশের রাজনীতি সচেতন কোটি কোটি জনগন। যেভাবে বর্তমানে নির্বাচন নিয়ে প্রহসন থামানো প্রসঙ্গে একজন লিখেছেন- সারাদেশে-সারাবিশ্বে করোনা নিয়ে ধান্দাবাজী শুরু হয়েছে। করোনা ভাইরাইসকে পূঁজি করে রাজনীতিক-প্রশাসনিক ব্যক্তিরা রাতারাতি আরো কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। আমরা অত্যন্ত ব্যথিত হয়েছি, যখন করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সারা পৃথিবীর মানুষ হিমশিম খাচ্ছে আতংকিত হয়ে সেখানে আমরা বাংলাদেশে উৎসবমুখর পরিবেশে উপ-নির্বাচনের আয়োজন করছি। সংবিধান রচিত হয়েছে মানুষের কল্যাণের জন্য এবং সংবিধানসম্মত সকল আইনও প্রয়োগ হয় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সকল নাগরিকের কল্যাণের জন্য। আইন পরিবর্তন প্রয়োজন হলে আইনপ্রণেতাদের সেটি বিবেচনায় নেয়া উচিত। কিন্তু আমরা খুবই উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি সরকারের বিভিন্ন বিভাগ যেখানে ব্যস্ত এবং উদ্বিগ্ন হয়ে করোনা প্রতিরোধে গণজমায়েত এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন সেখানে আমরা উপ-নির্বাচনের আয়োজন করছি নির্বোধের মত। যেখানে প্রার্থী, ভোটার, নির্বাচনী কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, গণমাধ্যমকর্মী সকলেই দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় করোনা ভাইরাস সংক্রমণের স্বীকার হতে পারেন। ইতিমধ্যে আমরা জানি প্রাণভয়ে আতংকে নিষেধ স্বত্ত্বেও আমাদের প্রবাসী ভাই বোনদের অনেক বড় একটা অংশ (৫৫ দিনে ৬ লক্ষ ২৪ হাজার) দেশে চলে এসেছেন। তারা ইতিমধ্যে তাদের পরিবার, আত্মীয়-স্বজন, এলাকাবাসীসহ পরিচিত অপরিচিত অনেকের সংস্পর্শে এসেছেন। আর আমাদের দেশে ঈদ পূজার চেয়েও উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচনে সকল ধর্মের সকল সম্প্রদায়ের মানুষ অংশগ্রহণ করেন। সে কারণেই এটা অনুমান করাই যায় আমরা কি পরিমাণ ঝুঁকিতে রয়েছি। আমরা নিশ্চয়ই ইতালির মত করোনা ভাইরাসকে অবহেলা করার পরিণতি ভোগ করতে চাইনা। যেহেতু সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ করেছে, পাবলিক পরীক্ষা পিছিয়েছে, লকডাউন করছে, গণপরিবহন চলাচল সীমিত করছে, ধর্মীয় গণজমায়েতও নিরুৎসাহিত করছে, প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বেরোনোর ব্যাপারে নাগরিকদের উৎসাহিত করছে না সেহেতু আমরা কেন উপ-নির্বাচনকে উৎসাহিত করে খাল কেটে কুমির আনছি নিজেদের জন্য। এমন পরিস্থিতিতে বরাবরের মত আমি সকল অন্যায়কে নস্যাৎ করতে চাই জনগনের সচেতনতা, পরিচ্ছন্নতা এবং সরকারের আন্তরিকতা…
মোমিন মেহেদী : চেয়ারম্যান, নতুনধারা বাংলাদেশ এনডিব