২২ নভেম্বর ২০২৫, ১২:৩৭ পূর্বাহ্ন, ৩০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি, শনিবার, ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বরগুনা প্রতিনিধি।
আমতলীতে সরকারী ধান ক্রয়ে অনিয়মের অভিযোগে বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টায় ইউএনও মনিরা পারভীন খাদ্য গুদামে অভিযান চালিয়ে অবৈধ ভাবে ক্রয়কৃত ১শ’ ৯৫ বস্তা ধান জব্দ করেন। এ অনিয়ের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে উপ-খাদ্য পরিদর্শক অঞ্জন কুমার ডাকুয়াকে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ১০ দিনের বিনাশ্রম কারাদন্ড ও ধান সরবরাহকারী ফেরদৌসকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
জানাগেছে, এ বছর আমতলী উপজেলায় কৃষকের নিকট থেকে সরকারীভাবে ১ হাজার ৪০ টাকা মন দরে ২ হাজার ৯১ টন ধান ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়। খাদ্য বিভাগ ওই ধান সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ক্রয় করবেন। কিন্তু খাদ্য বিভাগ সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয় না করে স্থাণীয় এক শ্রেণির দালালের মাধ্যমে নিম্নমানের দূর থেকে কম দামে নিম্নমানের ধান ক্রয় করছেন। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় গোপনে সেই ধান পৌর শহরের সবুজবাগ এলাকায় অবস্থিত সরকারী খাদ্য গুদামে মজুদ করার সংবাদ পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনিরা পারভীন সেখানে অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় তিনি অবৈধভাবে ধান সরবরাহকারী ফেরদৌস এর নিকট থেকে ১শ’ ৯৫ বস্তা ধান ক্রয়ের সত্যতা পান। ফেরদৌস আমতলী সদর ইউনিয়নের উত্তর টিয়াখালী গ্রামের ৫জন কৃষকের কার্ড সংগ্রহ করে ওই কার্ডের অনুকুলে খাদ্যগুদামে ধান সরবরাহ করার জন্য গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানি উপজেলার মেসার্স দীপ্ত এন্টারপ্রাইজের মালিক সুনিল সমাদ্দার এর আড়ৎ থেকে নিম্নমানের ধান ক্রয় করে সেই ধান ট্রাক যোগে আমতলী এনে খাদ্যগুদামে সরবরাহ করেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনিরা পারভীন খাদ্যগুদামে অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে সরবরাহকৃত ১শ’ ৯৫ বস্তা ধান জব্দ করেন। এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ভোক্তা অধিকার আইনে খাদ্য বিভাগের উপ-খাদ্য কর্মকর্তা অঞ্জন কুমার ডাকুয়াকে ১০ দিনের বিনাশ্রম কারাদন্ড ও ধান সরবরাহকারী ফেরদৌসকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
এছাড়া উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্বে নিয়োজিত) মোঃ শফিকুল ইসলাম এবং ওসিএলএসডি রবীন্দ্র নাথ মন্ডলের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য তাদের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট সুপারিশ করেন।
এ বিষয়ে আমতলী উপজেলা ওসিএলএসডি রবীন্দ্র নাথ মন্ডলকে বার বার তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে (০১৭৩৪৬৭৮০৬৪) কল দিলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।
আমতলী থানার ওসি মোঃ আবুল বাশার বলেন, জব্দকৃত ধান পুলিশের হেফাজতে রয়েছে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনিরা পারভীন বলেন, কৃষকের নিকট থেকে সরাসরি ধান কেনার বাধ্যবাধকতা থাকলেও তাদের কাছ থেকে ধান না কিনে খাদ্য বিভাগের লোকজন দালালের মাধ্যমে নিম্নমানের ধান ক্রয় করে খাদ্য গুদামে মজুদ করার খবর পেয়ে সেখানে অভিযান পরিচালনা করি। ঘটনার সত্যতা পেয়ে উপ-খাদ্য কর্মকর্তা অঞ্জন কুমার ডাকুয়াকে ১০ দিনে বিনাশ্রম কারাদন্ড ও ধান সরবরাহকারী ফেরদৌসকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, জব্দকৃত ধান পুলিশের হেফাজতে দেয়া হয়েছে। এ ধান পরবর্তীতে নিলামে বিক্রি করা হবে।
আমতলীতে কৃষকের মাঝে বিনা মূল্যে সার বীজ বিতরন
বরগুনার আমতলীতে উপজেলার ৭শ’ ৪০ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে ১৯ টন সার ৬শ’ কেজি ভূট্টা, সূর্যমুখী ২৪৮ কেজি, চিনাবাদাম ৪শ’ কেজি, মুগডাল ১হাজার ১ শ’ ৭৫ কেজি বিতরন করা হয়েছে। আনুষ্ঠানিক ভাবে সার বীজ বিতরনের উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য এ্যাড. ধীরেন্দ্র দেবনাথ শমভু।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে নির্বাহী অফিসার মনিরা পারভীনের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য এ্যাড. ধীরেন্দ্র দেবনাথ শমভু।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন আমতলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব গোলাম সরোয়ার সরোয়ার ফোরকান, উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মোঃ মতিয়ার রহমান, উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি আলহাজ¦ জিএম দেলওয়ার হোসেন, আমতলী থানা ওসি মোঃ আবুল বাশার, ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ মজিবুর রহমান, নারী ভাইস চেয়ারম্যান তামান্না আফরোজ মনি ও কৃষি কর্মকর্তা সিএম রেজাউল করিম প্রমুখ।