২১ নভেম্বর ২০২৫, ০৫:১৫ অপরাহ্ন, ২৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি, শুক্রবার, ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নিউজ ডেস্ক::বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলায় বিয়ের আগে প্রেমিক পালিয়ে গিয়ে অন্যত্র বিয়ে করায় গায়ে আগুন দিয়েছেন সাহিদা আক্তার (২০) নামে এক তরুণী। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় নেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে একটি অ্যাম্বুলেন্সে সাহিদাকে নিয়ে তার স্বজনরা ঢাকায় উদ্দেশ্যে রওনা হন। গত মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) নিজ বাড়িতে গায়ে আগুন দেন সাহিদা। এ ঘটনায় প্রেমিক কাশেম আলীসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
আহত সাহিদা আক্তার বাবুগঞ্জ উপজেলার বাদল গ্রামের সাহেব আলী খানের মেয়ে। তার প্রেমিক কাশেম আলী উপজেলার কুড়ালিয়া গ্রামের রহম আলী হাওলাদারের ছেলে। তবে কাশেম আলী তার নানাবাড়ি বাদল গ্রামে থাকতেন।
সাহিদা আক্তারের স্বজনরা জানান, দুই বছর ধরে সাহিদা ও কাশেমের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। এ নিয়ে সাহিদা ও কাশেমের পরিবারের মধ্যে বিভিন্ন সময় ঝগড়াও হয়েছে। কিন্তু এরপরও তারা সম্পর্ক বজায় রাখে। পরবর্তীতে উভয়পক্ষের সম্মতিতে কাশেমের সঙ্গে সাহিদার বিয়ের দিন ধার্য করা হয় আগামী শুক্রবার। সাহিদার গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানও সম্পন্ন হয়। কিন্তু এর আগেই প্রেমিক কাশেম পালিয়ে গিয়ে অন্যত্র বিয়ে করেন। গত মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) রাতে কাশেমের বিয়ের বিষয়টি জানতে পেরে ক্ষোভে নিজের গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালান সাহিদা। সাহিদার ডাক-চিৎকারে পরিবারের সদস্যরা এসে আগুন নিভিয়ে তাকে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আব্দুর রাজ্জাক জানান, সাহিদার শ্বাসনালীসহ শরীরের ২৬ ভাগ পুড়ে গেছে। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকরা ঢাকায় নেয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু সাহিদার পরিবারের সামর্থ না থাকায় তাকে ঢাকায় নিতে পারছিল না। এ খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় হাসপাতালে গিয়ে সাহিদার মায়ের হাতে নগদ ১০ হাজার টাকা এবং চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ওষুধ তুলে দেন জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান। এরপর দুপুরে সাহিদার স্বজনরা তাকে নিয়ে ঢাকায় উদ্দেশ্যে রওনা হন।
এদিকে এ ঘটনায় গতকাল বুধবার বিকেলে সাহিদার মা মেহেরজান বাদী হয়ে কাশেম আলীসহ ছয়জনকে আসামি করে বরিশাল নগরীর বিমানবন্দর থানায় মামলা করেন।
বিমানবন্দর থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুর রহমান মুকুল জানান, বুধবার রাতে প্রধান আসামি কাশেমসহ মামলার এজাহারভুক্ত চার আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।