১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ০২:০৮ অপরাহ্ন, ১৫ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি, বৃহস্পতিবার, ২রা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
অসম্পূর্ণ হালখাতা
এখনো চৌদিকে ছড়ানো ছিটানো প্রেম
এখনো ইশারা চোখে পড়া কোনো চোখ
এখনো রয়েছে ইনজিনে অকটেন
এখনো নদীতে জাগেনি চরের শোক।
এখনো বিকেল অর্ধ-রোমান্টিক
এখনো সন্ধ্যা মিলনাত্বক মোড়
এখনো রাত্রি দু’কাঁটাতে টিকটিক
এখনো আসক্তি নতুন দিনের ভোর।
এখনো কবিতা রাতজাগা অজুহাত
এখনো আকাশ হাজারো চিত্রকল্প
এখনো হঠাৎ হাত ছুঁয়ে কোনো হাত
এখনো জীবন সহসায় কোনো গল্প।
এখনও পারি রাঙাতে নারাজ মন
এখনও পারি টানিতে দোদুল ভোট
একচুমুতেই ফ্লাশব্যাক যৌবন
যে চায়নি কাল, সেও পেতে দেয় ঠোঁট।
এখনো তুলনা ছুঁয়ে যায় ফলাফল
এখনো ঈর্ষা ছুঁয়ে যায় এই নাম
এখনো ভূমিকা ফুটে ওঠা শতদল
এখনো স্বপন জানায় ওয়েলকাম।
এখনো স্বভাব খেয়ালের ঘোড়দৌড়
এখনো মনটা লোভের বাতাসে দোল
এখনো মধুর খুঁজিছে মধুর ওড়
এখনো তোমাকে ভালোবেসে উতরোল।
.
আমার যত উজ্জ্বল ব্যর্থতা
কতবার ‘না’ ভোটে জয়যুক্ত করো ক্ষমতাসীন জেদ!
প্রেমে নিষ্ঠ ঠোঁটের কাছ থেকে কতবার সরিয়ে নাও
স্মিতা পাতিল-ঠোঁট! পরীক্ষার মুখোমুখি হলেই
প্রেমের সিলেবাসে যোগ করো ডিপ্লোাম্যাটিক ইলনেস
অথবা অর্থমন্ত্রকের আপত্তির মতো বাহানার নতুন অধ্যায়!
আরো কত জলপোড়ানো আগুন উপসংহার নিয়ে আমি
বারবার নিজেই বাদী-বিবাদী-সাক্ষী সেজে দেখি-
আজ কোথাও কোনও আদালত নেই;
নিরুপায় আমি বিকল্প হাওয়ায় আমার তপ্ত অশ্রুকে জলীয়
বাষ্পের বর্ণমালা বানিয়ে লিখে দিই
ঘোলাটে আকাশের খাতায়
তারা সময়ে-অসময়ে বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়ে তোমার
পূর্ণতার আঙিনায়, আবাদী ভূগোলে;
ছাদে উঠে গোপন বৃষ্টিতে ভেজো, তোমার নাকে এসে লাগে
কারও আকাশ পোড়ার ঘ্রাণ;
শব্দহীন রাত আসে, পাশে নাক ডাকে কাবিননামার সাফল্য
তোমার ঘুম আসে না; তুমি রাতের নদী হয়ে ভাবো-
কেন সহবাসতৃপ্ত রাতও শীতঘুমের আলতাদিঘি হতে পারে না!
এলোমেলো রাতের হাতে অংকিত আল্পনার
ব্যাকগ্রাউন্ড কালারে মিশে থাকে-
পরিচিত কারও আধপোড়া আকাশের প্রচ্ছদের ছায়া।
এই যখন অবস্থা,
তোমার নিদহীন রাতকে একবার জিগাও না কেন-
যাকে ভালোবাসতে চাও না, তাকে ভালোবাসো কিনা ?
হয়তো তুমি বোঝো না- বোঝে ভাঙাকুলো, ছাই, গাদা, আগুন,
বোঝে শীতলক্ষ্যাপাড়ের কোনো এক কবি-
আমাকে বঞ্চিত রেখে তুমি ততোটাই সফল হতে চলেছো
যতটা সফল নোবেল কমিটি বঞ্চিত করে টলস্টয়দের।
.
অভিবাসী ভালোবাসা
কলো কী-বোর্ডে শাদা বিশ্বাসের আঙুল রেখে
একদিন লিখেছিলাম-
‘আমি ফি দিতে পারি বা না পারি, হে মিষ্টিভাষী ফোন,
বন্ধ করো না থেরাপি, ভালোবাসার সেবাই তোমার ধর্ম হউক!’
তুমিও ধারণ করেছিলে সেই মেঘছোঁয়া উচ্চারণ
প্রায়ই শুনতাম তোমার উচ্ছ্বসিত কণ্ঠ আর
প্রতিবারই ফিরে আসতো-
মটরীবুবুর কোরান তেলওয়াত শুনতে
অভ্যস্ত হয়ে ওঠা আমার সরল বাল্যকাল।
সেটা এই তো সেদিন যা এখনও যায়নি
রিসাইকেল বিনের বাড়ি,
যাকে ছোঁয়া যায় আজো
এতটুকু বাড়িয়ে টাটকা স্মৃতির মাউস !
এরই মধ্যে কী এমন ঘটেছে সোনার রেণুর ঢেউশাসিত
দুনিয়ায় যে আমার রিংটোন বেজে ওঠে না
সেই সুরেলা উচ্চারণে ?
ওবামার স্থানে ট্রাম্প, এর বেশি তো নয়!
হে উদ্ভাসিতা, তবে কি প্ররোচিত তুমি ঘর থেকে
বিদায় দিতে চাও ভালোবাসাকে-
যেভাবে বের করে দিচ্ছে ট্রাম্প
আমেরিকাকে গড়ে তোলা আমেরিকা-প্রেমি অভিবাসীদের ?
.
তুমি
তুমি তো সেই অদ্ভুতী চাঁদ
দুলিয়ে গেছো শীতশাসিত জল
যদিও আজ কৃষ্ণপক্ষ
জোছনা কুড়ায় মুগ্ধ বুকের তল।
.
রাখাইন এবং ..
অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে তব ঘৃণা তারে যেন তৃণসম দহে।-রবীন্দ্রনাথ
হায় অহিংসার উত্তরাধিকার, সিন্ধকূলে আগুন লাগিয়ে
ভাঙিয়ে দিলে বিশ্ববাসীর এবং
সেইসঙ্গে আমারও এতদিনের সরল বিশ্বাসের ভুল!
বঙ্গোপসাগরের জল ঘেঁষে- অগ্নিমঞ্চে স্থাপিত ধর্মদন্ডে
সশস্ত্র হাওয়ায় ওড়ে- লেলিহান বিজয় পতাকা
পুড়ন্ত মাতম ছাপিয়ে- আগুনের যজ্ঞ ঘিরে উদ্বেলিত
পুরোহিত কণ্ঠের ঊল্লাসধ্বনি- বুদ্ধং শরণং গচ্ছামি…!
আহা, অহিংসার আগুনে পোড়ে-
স্তনে মুখ দিয়ে ঘুমিয়ে পড়া চাঁদ
হুপিংকফে আক্রান্ত সাগর
আগুনে বিধবা আলো এবং
বন্দুকের নল দেখে কুঁড়েঘরে ঢুকে-পড়া মালি;
আর কেরোসিনের টিন ও পেট্রোলের ডিবা নিয়ে শশব্যস্ত
গেরুয়া-রাখিতে আবদ্ধ সম্মিলিত হাত।
কেন এ আগুন? কারণ তারা গেরুয়াবসনের অনুসারী নয়;
কেন এ আগুন? কারণ তাদের পূর্বপূরুষ-
অশোক-আমলে ভিনমুল্লুকের অধিবাসী ছিলেন;
অকাট্য এ যুক্তি!
অতএব এ আগুনে নোবেল শান্তিপুরস্কারেরও সম্মতি পাওয়া গেল।
ও আফ্রিকার জঙ্গলের সিংহ, ও সুন্দরবনের বাঘ
ও আমাজনের কুমির,
কবে তোমরা এসে বসবে সভ্যতার সিংহাসনে আর
আধুনিক মানুষ নামের জন্তুগুলো আলোর পাঠ নেবে
তোমাদের পদতলে বসে ? কবে ???