২১ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:৫০ পূর্বাহ্ন, ২৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি, শুক্রবার, ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নোটিশ
জরুরী ভিত্তিতে কিছুসংখ্যক জেলা-উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া হবে যোগাযোগ- ০১৭১২৫৭৩৯৭৮
সর্বশেষ সংবাদ :
স্ত্রীকে নির্যাতনের মামলায় বরগুনার শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রবিউল হত্যা মামলায় নিরপরাধদের জড়ানোর অভিযোগে বাবুগঞ্জে বিএনপি’র একাংশের সংবাদ সম্মেলন বাবুগঞ্জের ছাত্রদল নেতার খুনিদের গ্রেপ্তার পরবর্তী দৃষ্টান্ত ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ চুয়াডাঙ্গায় ৩ তক্ষকসহ গ্রেফতার ১জন বাবুগঞ্জ এলজিইডি’র এলসিএস কমিউনিটি অর্গানাইজার সানজিদার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার ও হয়রানির অভিযোগ জোটের চাপ নাকি অভ্যন্তরীণ কোন্দল? বরিশাল -৩ আসনে এখনো প্রার্থী চূড়ান্ত করতে পারেনি বিএনপি। ভোটারদের মাঝে ‘ভিআইপি চমক’-এর গুঞ্জন বাবুগঞ্জে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ক্রীড়া সামগ্রী বিতরণ জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস এর ৫০ বছর পূর্তীতে ঝালকাঠি জেলা জাসাসের উদ্যোগে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বাংলাবান্ধায় ভারসাম্যহীন নারী গণধর্ষণেন শিকার চার ধর্ষক আটক বাবুগঞ্জে ছাত্রদল নেতা হত্যাকাণ্ড: ২১ জনের নামে মামলা!
সুন্দরগঞ্জ ৬ মাস ধরে প্রধান শিক্ষক স্কুলে অনুপস্থিত থাকায় জটিলত পরেছে বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা

সুন্দরগঞ্জ ৬ মাস ধরে প্রধান শিক্ষক স্কুলে অনুপস্থিত থাকায় জটিলত পরেছে বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা

শহীদুল ইসলাম শহীদ,(গাইবান্ধা) প্রতিনিধি:
বেশি দিন আগের কথা নয়। মাত্র বছর কয়েক আগেও যে বিদ্যালয়ের সুনাম ছড়িয়ে পড়েছিল গোটা জেলা জুড়ে, এখন সেখানে প্রধান শিক্ষক না আসায় ভেঙে পড়েছে চেইন অব কমান্ড। বেতন না পেয়ে অসহায় জীবনযাপন করছেন শিক্ষক, কর্মচারীরা। সন্ধ্যা নামলে শ্রেণি কক্ষে নিয়মিক চলছে মাদকের আড্ডা, শিকেয় উঠেছে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা আর বিপন্ন হয়ে পড়েছে শিক্ষার পরিবেশ। গেল ৬ মাস ধরে এমন চিত্রই বিরাজ করছে এখন গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ঝিনিয়া মোহাম্মদ আলী উচ্চ বিদ্যালয়ে।
জানা গেছে, যথাযথ প্রক্রিয়া অবলম্বনের মাধ্যমে বিদ্যালয়টির ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠনে উদ্যোগ নেন প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল খালেক। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুল মমিন মন্ডলকে প্রিজাইডিং, একাডেমিক সুপারভাইজার মো. বেলাল হোসেনকে সহকারী প্রিজাইডিং করে গঠিত হয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটি। নিরাপত্তা নিশ্চিত থাকেন সুন্দরগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জসহ ১৮ জন পুলিশ ও ৭জন আনসার সদস্য। ছিল বিভিন্ন মিডিয়ার উপস্থিতি।
সূত্র বলছে, ৪টি অভিভাবক সদস্য (পুরুষ) পদের বিপরীতে নির্বাচনে প্রতিদ্বনিদ্বতা করেন ১৩ জন অভিভাবক। সংরক্ষিত নারী অভিভাবক ১টি পদের বিপরীতে নির্বাচনে অংশ নেন ৩ নারী। শিক্ষক প্রতিনিধি হিসেবে ২ পদের বিপরীতে অংশগ্রহণ করেন ৫ জন। সংরক্ষিত নারী শিক্ষক প্রতিনিধি ১ পদের বিপরীতে ভোটে অংশগ্রহণ করেন ২ শিক্ষক। ঝিনিয়া তো বটেই বিভিন্ন এলাকায় সেটানো হয় প্রার্থীদের পোস্টার। এ যেন ছিল কোনো এক বড় ধরণের স্থানীয় নির্বাচনের মতো অবস্থা। সব প্রক্রিয়া শেষে গত ১২ জুন হয় নির্বাচন। কিন্তু বিধিবাম, নির্বাচনে প্রধান শিক্ষকের পছন্দের লোকজন না আসায় ফল প্রকাশের পর থেকে অদ্যাবধি স্কুলে আর আসেন না প্রধান শিক্ষক আব্দুল খালেক।
এদিকে, প্রধান শিক্ষক না আসায় এবং কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় আজও সম্পন্ন হয়নি ওই কমিটি গঠনের কাজ। ফলে যা হবার তাই হয়েছে। গ্রæপ সৃষ্টি হয়েছে স্কুলে, প্রধান শিক্ষক গ্রæপ বনাম সাধারণ শিক্ষক গ্রæপ। তারা মানছেন না কেউ কাউকে। ৫ মাস ধরে বেতন বন্ধ শিক্ষক, কর্মচারীদের। পরিজনসহ মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা। পরিচ্ছন্নতা কর্মী ও আয়াসহ চতুর্থ শ্রেণির চার চারটি পদ ফাঁকা এবং প্রতিষ্ঠান প্রধানের অনুপস্থিতে স্কুলের টয়লেট, ওয়াশরুম, শ্রেণি কক্ষ হয়ে পড়েছে ময়লার স্তÍপ। দেখা গেল, দুটি শ্রেণি কক্ষ পরিণত হয়েছে মাদকাসক্তদের আড্ডা খানায়। সেখানে পড়ে রয়েছে বিড়ি, সিগারেট ও গাঁজাসহ বিভিন্ন মাদক সেবনের চিহ্ন। শিক্ষার্থীরা বলছেন, নিয়মিত আসেন না শিক্ষকরা। পড়াশোনার জন্য পরিবেশ দরকার। কিন্তু অপরিচ্ছন্নতা গ্রাস করেছে স্কুলটিকে। চলছে মাদকের আড্ডা। এ থেকে পরিত্রাণ জরুরী।
স্থানীয়রা বলছেন, একসময় নাম করা ছিল এ স্কুলটি। কিন্তু হেডমাস্টারের একগুঁয়েমি স্বভাবের কারণে আজ এ করুণ পরিণতি। এখনই কোনো পদক্ষেপ না নিলে হয়তো আরও মুখ থুবরে পড়বে স্কুলটি। মুখ ফিরিয়ে নিবেন অভিভাবকরা এরখম চলতে থাকলে তারা স্কুলে আর পাঠাবেন না সন্তানদের। তারা আরও বলেন, প্রধান শিক্ষক নিষিদ্ধ রাজনৈতিক কর্মকান্ডের সাথে জড়িয়ে বিদ্যালয়ে না এসে পালিয়ে বেড়াচ্ছে এথেকে আমাদের সন্তানদের ভবিষৎ নষ্ট করার প্রচেষ্টা করছে। তিনি চার পুলিশ হত্যা মামলা-সহ একাধিক মামলারও আসামী। তিনি তার রাজনৈতিক কর্মকান্ড চালিয়ে যাওয়ার জন্য স্কুল কমিটির নির্বাচনকে পূজি বানিয়ে বিদ্যালয়ে উপস্থিত না হয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের বেকায়দায় ফেলেছেন। তার বিরুদ্ধে দ্রæত ব্যবস্থা গ্রহন করে বিদ্যালয়টিতে আবারও সঠিক ভাবে পাঠদানের উপযোগী করা দরকার।
ওদিকে স্কুলে প্রধান শিক্ষকের অনুপস্থিতি ও পাঠদান কার্যক্রম বিঘিœত হওয়ার বিষয়টি জানিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেন বেশকিছু শিক্ষার্থী ও। যার তদন্ত করে অভিযোগের যথার্থতা খুঁজে পান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এবং উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এবং জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার নির্দেশে দায়িত্ব পালন করছেন জানিয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল গফফার সরকার জানান, অভিভাবক সদস্য নির্বাচনের পর থেকেই প্রধান শিক্ষক স্কুলে আসেন না। এমনকি কোনো যোগাযোগও করেন না। তিনি না আসায় শিক্ষক ও কর্মচারীরা বেতনও পান না ৫ মাস ধরে। পরিবার, পরিজন নিয়ে কষ্টে আছি আমরা। বিদ্যালয়ের নাজুক অবস্থা এবং প্রধান শিক্ষক না আসার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন মাধ্যমে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও প্রধান শিক্ষককে বিদ্যালয়ে আনা সম্ভাব হয়নি। এবিষয়ে প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল খালেকের বক্তব্য নেওয়া জন্য বিভিন্ন মাধ্যমে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
স্বচ্ছ ও সুষ্ঠ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ঝিনিয়া স্কুলে কমিটি গঠন করা হয় জানিয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুল মমিন মন্ডল সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচনের পর থেকেই প্রধান শিক্ষক স্কুলে অনুপস্থিত রয়েছেন। কমিটি গঠন করে বোর্ডে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু এখনও অনুমোদন পাওয়া যায়নি। আর যেহেতু মামলা হয়েছে, তাই সেক্ষেত্রে আর আমাদের করণীয় কিছু নেই। এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, প্রধান শিক্ষক স্কুলে না আসার বিষয়টি আজ জানতে পারলাম। সত্যতা যাচাই করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2019