২১ নভেম্বর ২০২৫, ০৭:৫৫ অপরাহ্ন, ২৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি, শুক্রবার, ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
জাবেদুর রহমান জাবেদ, তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) প্রতিনিধিঃ বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে ২০২২-২৩ অর্থ বছরে লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে ৫ কোটি ৭৪ লক্ষ টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। গত অর্থ বছরে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৫৮ কোটি ৩৩ লক্ষ টাকা। যার বিপরীতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৬৪ কোটি ৭ লক্ষ টাকা। তবে অর্থ বছরে শেষ মাস জুনেই আদায় হয় ১৫ কোটি চুয়াত্তর লক্ষ টাকা। যার বিপরীতে অর্থ বছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে আদায় মাত্র ১ কোটি ৬৩ লক্ষ টাকা।
দু-দেশের মধ্যে বিভিন্ন ইস্যুতে প্রায় সমমই আমদানি রপ্তানি বন্ধ থাকায় রাজস্ব আদায়ের পরিমান কমেছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। নতুন বছরের শুরুতেই রাজস্ব আদায়ে এমন ঘাড়তি হলে দেশের রাজস্ব খাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বন্দর সংশ্লিষ্টরা বলছে, বৈশ্বিক মন্দা, ডলার সংকট, এলসি জটিলতা, বন্দর অভ্যন্তরে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো গড়ে না ওঠা। এছাড়া বিভিন সময় ভারত থেকে উল্লেখযোগ্য হারে পণ্য আমদানি কম হলেও রাজস্ব আদায় বেড়েছে। বছর জুড়ে নানা জটিলতা ও পণ্য আমদানি ধীরগতি সমস্যা না থাকলে রাজস্ব আদায় হতো উল্লেখযোগ্য।
কাস্টমস সূত্র জানাযায়, ২০২২-২৩ অর্থ বছরে ৫৮ কোটি ৩৩ লক্ষ টাকা রাজস্ব আহরণের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে আদায় হয়েছে ৬৪ কোটি ৭ লক্ষ টাকা। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৫ কোটি ৭৪ লক্ষ টাকা বেশি আদায় হয়েছে। এদিকে অর্থ বছরের শেষ জুন মাসের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ কোটি ৫৭ লক্ষ টাকা। বিপরীতে আদায় হয়েছে ১৫ কোটি ৭৪ লক্ষ টাকা। শুধু মাত্র এক মাসেই লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় আদায় বেশি হয়েছে ১২ কোটি ১৭ লক্ষ টাকা।
এ বন্দর দিয়ে ভারত থেকে পাথর, মেশিনারিজ, প্লাস্টিক দানা, ভুট্টা, অয়েল কক (খৈল), আদা, গম, চাল, ফল ইত্যাদি। নেপাল, ভুটান থেকে পাথর ও বিভিন্ন প্রক্রিয়াজাত পণ্য আমদানি করা হয়ে থাকে। একই ভাবে এদেশ থেকে পাট ও পাটজাত পণ্য, আলু, ব্যাটারি, কোমল পানীয়, গার্মেন্টস সামগ্রী, ক্যাপ, হ্যাঙ্গার, সাবান, বিস্কুট, চানাচুর, জুস, কাঁচ, ঔষুধসহ বিভিন পণ্য রপ্তানি হয়। সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলম জানান, গত অর্থ বছরের শেষ মাস জুনে ভারত থেকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে জ্বালানি তেল আমদানি হওয়ায় রাজস্ব আদায় বেশি হয়েছে। তবে নতুন বছরের শুরুতেই দু-দেশের ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন দাবি দাওয়ার কারণে অধিকাংশ সময়ই আমদানি রপ্তানি বন্ধ থাকায় রাজস্ব আদায় কমে গেছে।
বাংলাবান্ধা আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান কুদরত-ই খুদা মিলন জানান, আমাদের উত্তরাঞ্চলের জন্য এটি একটি বৃহত্তম স্থলবন্দর সরকারের রাজস্ব আদায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রেখেছে সব সময়। অবকাঠামো সহ সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির জন্য মহাপরিকল্পনা প্রয়োজন। সেটি পূরণ হলে সম্ভাবনাময়ী এ বন্দর দিয়ে শতশত কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করা সম্ভব। তবে বছরের শুরু থেকে প্রায় সময়ই আমদানি রপ্তানি বন্ধ থাকায় জুলাই মাসে রাজস্ব আদায় কমেছে। দু-একদিনের আমাদের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে সেখানেই এই অচলাবস্থা দুর হবে বলে আশা করছি।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তা ইমরুল হোসেন পাটোয়ারী জানান, শুল্ক ষ্টেশনের কর্মকর্তাদের অক্লান্ত পরিশ্রম, দক্ষতা ও বন্দর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের সহযোগিতার কারণ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে রাজস্ব আদায় সম্ভব হয়েছে। গত অর্থ বছরের শেষ মাস জুনে ভারত থেকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে জ্বালানি তেল আমদানি হওয়ায় রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়াও ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণেই এ বন্দরটির অপার সম্ভাবনাময়। ভবিষ্যতে চীনর সঙ্গে বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু হলে দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর হিসেবে এখান থেকে জাতীয় রাজস্ব আয়ে যোগ হবে নতুনমাত্রা। তিনি আরও বলেন, বর্তমান অচলাবস্থা অচিরেই শেষ হয়ে যাবে, ব্যবসায়ীরা আমদানি রপ্তানি শুধু করলেই।