২২ নভেম্বর ২০২৫, ১২:১১ অপরাহ্ন, ৩০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি, শনিবার, ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
রক্তিম কবির মৌলভীবাজার ::: মৌলভীবাজার বদরুন্নেসা প্রাইভেট হাসপাতালে ডাক্তারের
অবহেলায় শিশু মৃত্যুর অভিযোগে বদরুন্নেসা প্রাইভেট হাসপাতালের গাইনী
বিশেষজ্ঞ ডাক্তার যাকিয়া শহিদ খান, হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ও
সেবিকাকে অভিযুক্ত করে আজ ২৮ ডিসেম্বর মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের
করেছেন সদর উপজেলার শ্রীরাইনগর গ্রামের ভুক্তভোগী নারীর স্বামী সাহেদ
খাঁন।
মডেল থানা, সিভিল সার্জন ও পুলিশ সুপার বরাবর দায়েরকৃত লিখিত অভিযোগ
সুত্রে জানা গেছে- গত ২৭ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ৭টায় বদরুন্নেসা প্রাইভেট
হাসপাতালের গাইনী বিশেষজ্ঞ ডাক্তার যাকিয়া শহিদ খান এর তত্তবাবধানে
ছিড়াইনগর গ্রামের শাহাবন্দর খাঁন বাড়ির বাসিন্দা সায়েদ মিয়ার স্ত্রী
গর্ভবতী লাকী খানমকে ভর্তি করা হয়। তখন কর্তব্যরত ডাক্তার জানান,
গর্ভবর্তী রোগীর সকল রিপোর্ট ভালো আছে এবং বাচ্চার প্রজিশনও ভালো আছে।
কর্তব্যরত ডাক্তারের উপস্থিতিতে হাসপাতালের কর্তব্যরত নার্স ও আয়া নরমাল
ডেলিভারি করার জন্য রুমে প্রবেশ করিয়ে রোগীর জরায়ু মুখে হাত প্রবেশ করে
প্রায় ৩ ঘন্টা নরমাল ডেলিভারীর চেষ্টা করেন। তখন গর্ভবর্তী নারীর স্বামী
সায়েদ খান ঐ রুমে প্রবেশ করে দেখেন- বাচ্চার মাথা ও কানে টেনে কিছুটি
বাহির করে আর পারছেননা, তখন তিনি ডাক্তারকে বলেন আমার বাচ্চার যে অবস্থা
আপনারা মেরেই ফেলবেন। তখন ডাক্তার বললেন আপনার স্ত্রীর সিজার করানো লাগবে
আপনে কোন চিন্তা করবেননা এদিকে আসেন এই কাগজে আরেটি স্বাক্ষর দিয়ে মিষ্টি
নিয়ে আসেন। আর শিশু ডাক্তার আনতে হবে টাকা দিন। তারপর সিজার রুমে প্রবেশ
করানো হয়। কিছুক্ষণ পর হাসপাতালের আয়া শিশু বাচ্চার একহাত ধরে ঝুলিয়ে
রুমে নিয়ে বাচ্চার মুখে অক্সিজেন লাগিয়ে দেন।
তখন সায়েদ মিয়া ডাক্তারকে প্রশ্ন করলেন আমার বাচ্চা কি জীবিত, তখন
ডাক্তার বললেন হার্টবিট অনেকটি কাজ করতেছে। তখন সায়েদ মিয়া বাচ্চার মুখ
থেকে অক্সিজেন খোলে দেখেন বাচ্চা মৃতঃ তখন ডাক্তারকে বলেন আমার সন্তানকে
হত্যা করে আপনারা বাচ্চার মুখে কেন অক্সিজেন লাগিয়ে রাখছেন। তখন ডাক্তার
কিছু না বলে রুম থেকে বাহিরে চলে যান। এ সময় ঘটনাটি লোকমুখে প্রকাশ ফেলে
সেখানে উত্তপ্ত পরিবেশ সৃষ্টি হয়। এ সময় পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি
নিয়ন্ত্রনে আনে। উলে¬খ্য- গত ৩০ সেপ্টেম্বর একই ভাবে বদরুন্নেসা প্রাইভেট
হাসপাতালে ডাক্তারের গাফিলতির কারণে সাড়ে সাত মাসের গর্ভবর্তী লিলি বেগম
নামীয় মহিলার মৃত্যুর অভিযোগ করেন রোগীর স্বজনেরা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ
দাবি করেছেন, রোগীর অবস্থা জটিল ছিল। তাই চেষ্টা করেও বাঁচানো যায়নি ।
রোগীর স্বজনেরা জানান- রোগীর পরিবারকে আতংকিত করে তুলেন এবং বলেন
গর্ভবতীকে সিজার না করালে তাকে বাঁচানো যাবেনা তখন লিলির পরিবারকে বাধ্য
করা হয় সিজার করানোর জন্য একপর্যায়ে লিলিকে সিজার করার কথা বলে নিয়ে
যাওয়া হয় অপারেশন থিয়েটার (ওটি) তে। এর কিছুক্ষণ পর জানানো হয় লিলি মারা
গেছেন। সে সময় স্থানীয় বাসিন্দাসহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ ঘটনাস্থলে
দায়িত্বরত ডাক্তার, নার্স, আয়াসহ অন্যন্যেদের হাসপাতালালে অবরুদ্ধ করে
রাখেন। খবর পেয়ে মৌলভীবাজার মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে আশ্বস্ত
করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আসে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হাসপাতালের
প্রভাবশালীদের সাথে সু-সম্পর্ক থাকায় কিছুই হয়নি। এ সংবাদ পরিবেশন
পর্যন্ত লাকী খানম বদরুন্নেসা প্রাইভেট হাসপাতালে মুমৃর্ষ অবস্থায় ভর্তি
রয়েছেন।