০৭ মে ২০২৪, ০৭:২১ অপরাহ্ন, ২৭শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি, মঙ্গলবার, ২৪শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নোটিশ
জরুরী ভিত্তিতে কিছুসংখ্যক জেলা-উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া হবে যোগাযোগ- ০১৭১২৫৭৩৯৭৮
সর্বশেষ সংবাদ :
বরিশাল উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে  মনোনীত অফিসার-ফোর্সদের ব্রিফিং প্যারেড অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচন: ৪১৮ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন শাহজালাল (র.) ওরস উপলক্ষে ঐতিহাসিক লাকড়ি তোড়া উৎসব অনুষ্ঠিত কালকিনিতে বজ্রপাতে প্রতিবন্ধীর নিহতের পরিবার পেল আর্থিক সহায়তা বানারীপাড়ায় অধ্যাপক নিত্যানন্দ শীলের পরলোকগমণ বিয়ের দাবিতে অনশন নাটক, ৫ লাখ টাকায় রফাদফা বরিশালের সাবেক মেয়র কামালের স্ত্রী ও দুই সন্তানের বিরুদ্ধে মামলা বরিশালে সর্বজনীন পেনশন মেলা চুয়াডাঙ্গায় আদালতে মায়ের জবানে নিজ শিশু সন্তানকে হত্যার দোষ স্বীকার ঝালকাঠি জেলা তথ্য অফিসের উদ্যোগে “প্রান্তিক পর্যায়ে উন্নয়ন প্রচার প্রকল্পে “
বানারীপাড়ায় রাতের আঁধারে কালি মাতার ছবি সাঁটিয়ে সাবেক জেলা জজের বসতবাড়ি দখলের পায়তারা।

বানারীপাড়ায় রাতের আঁধারে কালি মাতার ছবি সাঁটিয়ে সাবেক জেলা জজের বসতবাড়ি দখলের পায়তারা।

রাহাদ সুমন, বিশেষ প্রতিনিধি॥
বরিশালের বানারীপাড়ায় সদর ইউনিয়নের জম্বদ্বীপ গ্রামে সাবেক জেলা জজের বসত বাড়ি জবর দখল চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে সাবেক জেলা জজ মো. ফখরুদ্দিন বাদশা অভিযোগ করে বলেন জম্বদ্বীপ গ্রামের মৃত বিপদ ভঞ্জন মিস্ত্রীর ছেলে ডা.পলাশ কান্তি মিস্ত্রী, তার চাচা হৃদয় রঞ্জন মিস্ত্রী ও চিত্ত রঞ্জন মিস্ত্রী এবং সুসেন সমদ্দার ও অনিতা মিস্ত্রী বানারীপাড়া পুলিশের নির্দেশনা অমান্য করে রাতের অন্ধকারে তার বসত বাড়িতে থাকা টিনের ছাউনিযুক্ত একটি কাঠের ঘর ভেঙ্গে এবং ঘরের মধ্যে থাকা বিভিন্ন মালামাল চুরি করে নিয়ে যায়। এছাড়াও তারা ওই বসত বাড়িতে ঝড়ে পড়ে যাওয়া অন্য একটি ঘরের মালামাল (পুনঃ নির্মানের জন্য স্তুপ করে রাখা), পুকুর থেকে মাছ ,বাগানের নারিকেল ও সুপারি চুরি করে নিয়ে যায়। তিনি আরও জানান, ২০০৩ সালের ৬ মে রেজিষ্ট্রিকৃত ৭১৪/২০০৩ নং কবলা মূলে বানারীপাড়ার জম্বদ্বীপ মৌজায় বসতবাড়িসহ প্রায় এক একর ৬৫ শতক সম্পত্তি স্ত্রী ফারজানা মেহেজাবিন মিলির নামে ক্রয় করে তাতে দখলে বিদ্যমান হন। ডা.পলাশ কান্তি মিস্ত্রীর পিতা উক্ত সম্পত্তিতে অগ্রক্রয়াধিকারের প্রার্থনায় মিস ১২/২০১২ মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে তিনি মারা গেলে ডা. পলাশ কান্তি মিস্ত্রী পিতার স্থালাভিষিক্ত হন। যাতে সম্পত্তির ক্রেতা ফারজানা মেহেজাবিন মিলি ১ নং প্রতিপক্ষ হিসেবে শ্রেণীভূক্ত থাকেন। উক্ত মিস মামলাটি বিজ্ঞ আদালতের ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১২ তারিখের রায় ও আদেশ মূলে খারিজ হলে উহার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিস ৯২/২০১২ নম্বর আপিলটি বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা জজ, ১ম আদালত, বরিশাল এর চলতি বছরের ২২ অক্টোবর রায়ে মঞ্জুর হয়ে বিজ্ঞ নি¤œ আদালতের রায় ও আদেশ রদ রহিত হয় এবং অগ্রাক্রয়াধিকারের মিস মামলাটি মঞ্জুর হয় এবং আদালতের আদেশ হয় যে আগামী ৭ দিনের মধ্যে উক্ত জমির দখল প্রার্থী পক্ষকে বুঝিয়ে দিতে ১নং প্রতিপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া গেলো, ব্যর্থতায় আদালত যোগে দখল গ্রহন করতে পারবে। কিন্তু বিজ্ঞ আদালতের রায় ও আদেশ অনুসারে ডা. পলাশ কান্তি মিস্ত্রী তফসিল বর্নিত সম্পত্তিতে আদালত যোগে দখল গ্রহনের জন্য বিজ্ঞ আদালতে কোন প্রকার আবেদন না করে উল্লেখিত ব্যক্তিগনসহ ৩০/৪০ জন সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক নিয়ে ৮ নভেম্বর রাতের অন্ধকারে তফসিল বর্নিত সম্পত্তির বসত বাড়িতে থাকা অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ ফখরুদ্দিন বাদশা ও ফারজানা মেহেজাবিন মিলির বসত ঘর ভেঙ্গে সেখানে ঘর উত্তোলনের জন্য পায়তারা করে। বিষয়টি ওই সম্পত্তির কেয়ারটেকার আবদুল হাকিম সরদার মুঠোফোনে অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ মো. ফখরুদ্দিন বাদশাকে জানালে তিনি বানারীপাড়া থানার ওসিকে অবহিত করলে ওসি হেলাল উদ্দিন ওই রাতেই থানার উপ-পরিদর্শক ওসমান গনি,সহকারী উপ-পরিদর্শক মো. মহসিনসহ পুলিশ ফোর্স ঘটনাস্থলে পাঠান। তারা গিয়ে আদালতে রায়ের আদেশ অনুসারে আদালত যোগে দখল গ্রহণ ব্যতিত অন্যকোনভাবে বসতবাড়ির সম্পত্তিতে অনুপ্রবেশ কিংবা সেখানে থাকা বসত ঘর ভেঙ্গে ঘর নির্মাণ না করা বা জোরপূর্বক দখলগ্রহণ করা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ প্রদান করেন এবং বিষয়টি জেলা জজকে অবহিত করেন। কিন্তু ডা. পলাশ কান্তি মিস্ত্রী পুলিশের নির্দেশনা মানেননি। উল্লেখ্য বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা জজ ১ম আদালত বরিশালের মিস ৯২/২০১২ আপীলের ২২ অক্টোবর তারিখের রায় ও আদেশের বিরুদ্ধে ফাজানা মেহেজাবিন মিলি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে ১৭৪৩/২০২০ নম্বর সিভিল রিভিশন দায়ের করেছেন। হাই কোর্ট বিভাগ চলতি বছরের ১৬ নভেম্বর এক আদেশে বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা জজ,১ম আদালত বরিশালের মিস ৯২/২০১২নং আপীলের চলতি বছরের ২২ অক্টোবরের রায় ও আদেশের কার্যকারিতা স্থগিত করেছে। এদিকে জেলা জজ বসত ভিটায় থাকা একটি ছোট ঘরে কালি মাতার কয়েকটি কাগুজে ছবি সাঁটিয়ে মন্দির বলে প্রচার করছেন ডা. পলাশ কান্তি মিস্ত্রীগং। এ বিষয়ে স্থানীয়রা জানান নিছক সাম্প্রদায়িকতাকে ব্যবহার করে জেলা জজের বসতবাড়ি দখলের অশুভ উদ্দেশ্যে তার ঘরটিকে কথিত কালি মন্দিরে রূপ দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ বানারীপাড়া উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দেবাশীষ দাস, পুরোহিত রতন চক্রবর্তী, ব্রাক্ষ্মন সমাজের সভাপতি গৌতম সমদ্দার সহ শীর্ষ সনাতান ধর্মাবলম্বী ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের কাছে ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়ানো থেকে ডা. পলাশ কান্তি মিস্ত্রী গংকে বিরত রাখতে তাদের ভূমিকা নেয়ার দাবী জানিয়েছেন। তারা গুরুত্বে সঙ্গে বিষয়টি দেখবেন বলে তাকে আশ্বস্ত করেছেন। এদিকে সম্পত্তিতে থাকা বসত ঘরের কেয়ারকেটার আবদুল হাকিমকে ওই সম্পত্তিতে গেলে নারী নির্যাতন মামলা সহ প্রাণ নাশের হুমকি দিলে তার নিরপত্তাজনিত কারনে তাকে অনত্র থাকতে দেয়া হয়েছে। অপরদিকে আদালতের নির্দেশনা ও পুলিশ প্রশাসনকে অমান্য করে রাতের অন্ধকারে কালি মাতার ছবি সাঁটিয়ে এক মুসলিম পরিবারের বসতবাড়ি দখলের পায়তারা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এ ব্যপারে প্রশাসন কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে যেকোন সময় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির আশংকা রয়েছে।
###

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2019