০৮ মে ২০২৪, ০৬:৪৩ অপরাহ্ন, ২৮শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি, বুধবার, ২৫শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নোটিশ
জরুরী ভিত্তিতে কিছুসংখ্যক জেলা-উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া হবে যোগাযোগ- ০১৭১২৫৭৩৯৭৮
সর্বশেষ সংবাদ :
ভোটকেন্দ্রে টাকাসহ ইউপি চেয়ারম্যান আটক সিলেটে বিপুল উৎসাহ উদ্দিপনায় সকাল থেকে চলছে ভোট গ্রহণ চুয়াডাঙ্গায় নিজ ইচ্ছায় ৩৭ বছর পর অবসরে যাওয়া ঈমামকে রাজকীয় বিদায় দর্শনায় উপজেলা নির্বাচন উপলক্ষে পুলিশের নিরাপত্তা ব্রিফিং মাহমুদ হাসান রনি, ঘোড়াঘাটে কোটি টাকা নিয়ে কর্মকর্তা উধাও খাদ্য গুদাম সিলগালা রহমতপুরে ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের স্কুল প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত ঘোড়াঘাটে সরঞ্জামসহ ট্রান্সফরমার চোর চক্রের ৫ সদস্য গ্রেপ্তার বরিশাল উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে  মনোনীত অফিসার-ফোর্সদের ব্রিফিং প্যারেড অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচন: ৪১৮ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন শাহজালাল (র.) ওরস উপলক্ষে ঐতিহাসিক লাকড়ি তোড়া উৎসব অনুষ্ঠিত
বানারীপাড়ায় গাভা-নরেরকাঠি বধ্য ভূমিতে স্মৃতি সৌধ নির্মাণের ভিত্তি প্রস্তর উদ্বোধন। আজকের ক্রাইম-নিউজ

বানারীপাড়ায় গাভা-নরেরকাঠি বধ্য ভূমিতে স্মৃতি সৌধ নির্মাণের ভিত্তি প্রস্তর উদ্বোধন। আজকের ক্রাইম-নিউজ

রাহাদ সুমন, বিশেষ প্রতিনিধি॥ বরিশালের বানারীপাড়ায় সদর ইউনিয়নের গাভা-নরেরকাঠি বধ্যভূমিতে স্মৃতি সৌধ নির্মাণ কাজের ভিত্তি প্রস্তর উদ্বোধন করা হয়েছে। ২১ নভেম্বর শনিবার বেলা ১১টায় স্থানীয় সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. শাহে আলম প্রধান অতিথি হিসেবে এ ভিত্তি প্রস্তর উদ্বোধন করেন। এসময় তিনি বলেন আমাদের স্বপ্নের এ লাল-সবুজ পতাকা ও স্বাধীন-সার্বভৌম ভূখন্ড নাম জানা-অজানা লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে। তাদের সেই রক্ত ঋনের প্রিয় ‘স্বদেশ’ বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজ উন্নত-সমৃদ্ধ এক ‘সোনারবাংলায়’ রূপান্তরের পথে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ আব্দুল্লাহ সাদীদের সভাপতিত্বে ভিত্তি প্রস্তর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক ও বানারীপাড়া পৌরসভার মেয়র অ্যাডভোকেট সুভাষ চন্দ্র শীল,মুক্তিযুদ্ধকালীন বেজ কমান্ডার বেণী লাল দাস গুপ্ত বেণু,উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নুরুল হুদা,মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মকবুল হোসেন মল্লিক,আওয়ামী লীগ নেতা কৃষিবিদ ডা. খোরশেদ আলম সেলিম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট মাহমুদ হোসেন মাখন, যুগ্ম সম্পাদক ও সদর ইউপি চেয়ারম্যান আ.জলিল ঘরামী, যুগ্ম সম্পাদক এটিএম মোস্তফা সরদার, কৃষি সম্পাদক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ,উপজেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আহবায়ক ওয়াহীদুজ্জামান দুলাল,পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি সুব্রত লাল কুন্ডু,বাইশারী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা শ্যামল চক্রবর্তী,ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার জগন্নাথ,গাভা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষক সুখরঞ্জন সরকার,সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সুশীল মাষ্টার.মুক্তিযোদ্ধা মকবুল হোসেন মৃধা,নতুন মুখ সাহিত্য সংস্কৃতি পরিষদের সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন মানিক,সম্পাদক শাহজাহান মিয়া,পৌর কাউন্সিলর গৌতম সমদ্দার,পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সজল চৌধুরী প্রমুখ। প্রসঙ্গত বরিশাল-২ আসনের সংসদ সদস্য মো. শাহে আলম প্রায় পৌনে এক কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে গাভা-নরেরকাঠি বধ্য ভূমিতে প্রাচীরসহ ‘দৃষ্টি নন্দন’ স্মৃতি সৌধ নির্মাণ করার উদ্যোগ নিয়েছেন।
উল্লেখ্য ১৯৭১ সালের ২ মে গাভা ও নরেরকাঠি গ্রামের ৯৮ জন নারী-পুরুষ ও শিশুকে স্থানীয় রাজাকারদের সহায়তায় ‘শান্তি কমিটি’ করার কথা বলে ডেকে এনে পাক সেনারা বর্বরোচিতভাবে হত্যা করেছিলো। ৭১ সালের ২রা মে দুপুর ২ টা-আড়াইটার দিকে গাভা বাজার ও রায়ের হাট এলাকা থেকে দু’দল পাক সেনা এসে গাভা-নরেরকাঠী গ্রামের লোকজনদের ডেকে বলে “তোমরা এসো তোমাদের নিয়ে শান্তি কমিটি গঠন করা হবে, এটা হলে তোমরা শান্তিতে বসবাস করতে পারবে। তাদের কুটকৌশল বুঝতে না পেরে শতাধিক নারী-পুরুষ সরল বিশ্বাসে তাদের সামনে এলে তারা মুহুর্তের মধ্যে তাদেরকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে খালের পাড় সংলগ্ন জমিতে লাইন দিয়ে দাড় করিয়ে ব্রাশ ফায়ার করে। প্রায় ২০-২৫ মিনিট তারা পাখি শিকারের মত গুলি বর্ষণ করে। গুলিবিদ্ধ অনেকেই বাচাঁর জন্য খালের পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়ে তলিয়ে যায়। তাদের আর্ত চিৎকারে তখন আকাশ বাতাসে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে। সবার মৃত্যু নিশ্চিত হলে আনন্দে বর্বর পাক সেনারা ফাঁকা গুলি ছুঁেড় উল্লাস করে। পিপাসার্ত পাষন্ড পাক সেনাদের ডাবের পানি খাইয়ে পিপাসা মিটিয়েও সেদিন তাদের হাত থেকে এলাকার লোকজন বাঁচতে পারেনি। পাক সেনারা গানবোট ব্যবহার না করে পায়ে হেটে ওই স্থানে আসায় আকস্মিকতায় পালাতে পারেনি এলাকার লোকজন। নিহতদের অনেকের লাশ পানিতে ভেসে যায়। আতঙ্কে এলাকা জনশূন্য হয়ে পড়ে। জমি ও খালের পাড়ে প্রায় এক সপ্তাহ পড়ে থাকা লাশগুলো দুর্গন্ধ ছড়িয়ে শিয়াল, শকুন ও কুকুরের খাদ্যে পরিণত হয়। এ দৃশ্য দেখে অনেকটা সাহস নিয়ে ওই এলাকার যাদব হাওলাদার, প্রহ্লাদ সমদ্দার, গেরদে আলী সিকদার ও সুধীর রায় সহ কয়েকজন যুবক মিলে শিশু নারী ও পুরুষের ৯৮ টি লাশ মাটি চাপা দেয়। প্রথমে তারা একটি বৃহৎ গর্ত খুড়ে লাশগুলো চাপা দেওয়ার চেষ্টা করে কিন্তু সব লাশ ওই গর্তে না ধরায় আরও একটি গর্ত খুঁেড় বাকি লাশ মাটি চাপা দেয়া হয়।২০১০ সালে গাভা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক সুখরঞ্জন সরকার বরিশাল জেলা প্রশাসকের কাছে গণহত্যার শিকার ওই সব লাশের স্মৃতি রক্ষার্থে আবেদন করেন। পরে তদন্তে গণ কবরটি চিহ্নিত করা হয়। ###

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2019