২১ নভেম্বর ২০২৫, ০৭:৫৩ অপরাহ্ন, ২৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি, শুক্রবার, ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
মোঃ নাঈম মোঘল বানারীপাড়া প্রতিনিধি :বাংলাদেশের নদীভাঙন একটি পরিচিত সমস্যা হলেও সন্ধ্যা নদীর ভাঙন আজ এক দীর্ঘস্থায়ী সংকটের রূপ নিয়েছে। গত ২০-২৫ বছর ধরে এই নদী একপেশে ভাঙন সৃষ্টি করে দাসের হাট থেকে শুরু করে বান্না গ্রাম, আশোয়ার গ্রাম, শাখরাল গ্রামসহ অসংখ্য এলাকা ধ্বংস করেছে। শত শত ঘরবাড়ি, মসজিদ, মাদ্রাসা, এমনকি সরকারি সাইক্লোন সেন্টার এবং শেরেবাংলার প্রতিষ্ঠিত ঐতিহাসিক হক সাহেবের হাটও নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। প্রশ্ন থেকেই যায়, কত গ্রাম ধ্বংস হলে বিষয়টি কর্তৃপক্ষের পর্যাপ্ত নজরে আসবে এই অব্যাহত ভাঙনের ফলে সোনাহার গ্রাম বর্তমানে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মুখে রয়েছে। ভাঙনের বর্তমান গতিতে গ্রামের তিন ভাগের এক ভাগ এলাকা নদীর গর্ভে হারিয়ে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। শুধু ঘরবাড়ি নয়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় স্থাপনা—সবকিছুই ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। যারা নদীভাঙনের শিকার হয়েছেন, তাদের অধিকাংশই মানবেতর জীবনযাপন করছেন।সরকার নদীভাঙনের ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য আশ্রয়কেন্দ্র নিনর্মাণ করলেও তা খুবই সীমিত। আরও উদ্বেগজনক বিষয় হলো, এই আশ্রয়কেন্দ্রগুলিও এখন নদীভাঙনের হুমকির মুখে রয়েছে। স্থায়ী কোনো সমাধান না থাকায় নদীর তীরবর্তী বাসিন্দারা অসহায়ভাবে দিন কাটাচ্ছেন। জীবনের নিশ্চয়তা হারিয়ে তারা ক্রমেই দারিদ্র্যের গভীরে তলিয়ে যাচ্ছেন।প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় রাষ্ট্রের দায়িত্ব থাকলেও সন্ধ্যা নদীর এই দীর্ঘস্থায়ী ভাঙনের ক্ষেত্রে কার্যকর পদক্ষেপের অভাব স্পষ্ট। নদীশাসনের জন্য শক্তিশালী বাঁধ নির্মাণ, নদীর গতিপথ নিয়ন্ত্রণ, এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে টেকসই পরিকল্পনা গ্রহণ ছাড়া এই সংকটের সমাধান সম্ভব নয়। সন্ধ্যা নদীর এই একপেশে ভাঙন শুধু ভূমি নয়, মানুষের জীবন ও তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষা গ্রাস করছে। এই পরিস্থিতি আরও দীর্ঘস্থায়ী হলে, তা শুধু স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য নয়, বরং দেশের সার্বিক উন্নয়নকেও বাধাগ্রস্ত করবে। এখনই সময়, এই সংকটের কার্যকর সমাধান খুঁজে বের করার এবং বাস্তবায়ন করার।