২১ নভেম্বর ২০২৫, ০৮:৪৫ পূর্বাহ্ন, ২৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি, শুক্রবার, ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নোটিশ
জরুরী ভিত্তিতে কিছুসংখ্যক জেলা-উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া হবে যোগাযোগ- ০১৭১২৫৭৩৯৭৮
সর্বশেষ সংবাদ :
স্ত্রীকে নির্যাতনের মামলায় বরগুনার শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রবিউল হত্যা মামলায় নিরপরাধদের জড়ানোর অভিযোগে বাবুগঞ্জে বিএনপি’র একাংশের সংবাদ সম্মেলন বাবুগঞ্জের ছাত্রদল নেতার খুনিদের গ্রেপ্তার পরবর্তী দৃষ্টান্ত ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ চুয়াডাঙ্গায় ৩ তক্ষকসহ গ্রেফতার ১জন বাবুগঞ্জ এলজিইডি’র এলসিএস কমিউনিটি অর্গানাইজার সানজিদার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার ও হয়রানির অভিযোগ জোটের চাপ নাকি অভ্যন্তরীণ কোন্দল? বরিশাল -৩ আসনে এখনো প্রার্থী চূড়ান্ত করতে পারেনি বিএনপি। ভোটারদের মাঝে ‘ভিআইপি চমক’-এর গুঞ্জন বাবুগঞ্জে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ক্রীড়া সামগ্রী বিতরণ জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস এর ৫০ বছর পূর্তীতে ঝালকাঠি জেলা জাসাসের উদ্যোগে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বাংলাবান্ধায় ভারসাম্যহীন নারী গণধর্ষণেন শিকার চার ধর্ষক আটক বাবুগঞ্জে ছাত্রদল নেতা হত্যাকাণ্ড: ২১ জনের নামে মামলা!
মুসলিম ও ব্রিটিশ শাসন আমলের ইতিহাসের স্বাক্ষী হয়ে ভগ্নপ্রায় দাঁড়িয়ে আছে মোঘল সা¤্রাজের রাজধানী দিনাজপুরের ‘ঘোড়াঘাট দূর্গ

মুসলিম ও ব্রিটিশ শাসন আমলের ইতিহাসের স্বাক্ষী হয়ে ভগ্নপ্রায় দাঁড়িয়ে আছে মোঘল সা¤্রাজের রাজধানী দিনাজপুরের ‘ঘোড়াঘাট দূর্গ

মাহতাব উদ্দিন আল মাহমুদ, ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর)
মুসলিম ও ব্রিটিশ শাসন আমলের ইতিহাসের স্বাক্ষী হয়ে ভগ্নপ্রায় দাঁড়িয়ে আছে মোঘল সা¤্রাজের রাজধানী দিনাজপুরের ‘ঘোড়াঘাট দূর্গ’।
বর্তমানে ঘোড়াঘাট একটি ছোট্ট উপজেলা হলেও, প্রাচীন বাঙলার মোঘল সা¤্রাজ্য এবং পরবর্তীতে ইংরেজ শাসন আমলের নানা ইতিহাস রচিত হয়েছে এই ঘোড়াঘাটে।
তবে কালের বিবর্তনে এবং রক্ষণাবেক্ষনের অভাবে হারিয়ে গেছে প্রবাদ বাক্যের ৫০ বাজার ও ৫৩ গলির ঘোড়াঘাট শহর। সেই ইতিহাসের স্বাক্ষ্য বহন করতে জরাজীর্ণ ভাবে দাঁড়িয়ে আছে ঘোড়াঘাট দুর্গ। প্রতœতাত্ত্বিক এই নিদর্শন আজ অস্তিত্ব সংকটে। ইতিহাস সমৃদ্ধ শহরের শত শত একর জমি দখল হয়ে গেছে।
ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৫ শতকে স্বাধীন সুলতানি আমলে ঘোড়াঘাট একটি সীমান্ত ফাঁড়ি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হলেও মোঘল সরকার ব্যব¯’ায় এটি বাঙলার অন্যতম প্রশাসনিক বিভাগ ছিল। যা নবাবী আমলেও নিজের মর্যাদা টিকিয়ে রেখেছিল। মোঘল স¤্রাট আকবরের রাজত্বকালে ১৫৮২ সালে প্রশাসনিক সুবিধার্থে সমগ্র সুবা-ই-বাঙলাকে ১৯টি সরকারে বিভক্ত করা হয়। যার মধ্যে অন্যতম একটি ছিল ‘সরকার ঘোড়াঘাট’। সেই আমলে ঘোড়াঘাটের করতোয়া নদীর তীরে গড়ে উঠে ‘ঘোড়াঘাট দুর্গ’। বিভিন্ন সময় এই দুর্গ বিভিন্ন রাজার অধিনে ছিল। রাজারা প্রয়োজন মত যুদ্ধ কাজে ব্যবহারিত বিভিন্ন জিনিসপত্র রাখতো এই দুর্গে। ইতিহাসের বিভিন্ন বই থেকে জানা যায় স¤্রাট আকবরের সময়ে এই দুর্গে ৯০০ অশ^ারোগী বাহিনী ছিল।
তাদের সাথে ছিল অর্ধশতাধিকের অধিক হাতি এবং ৩২ হাজার ৬০০ জনের মত পদাতিক বাহিনী। মুসলিম শাসিত ঘোড়াঘাট সরকারের শেষ ফৌজদার ছিলেন মীর করম আলী খান। তার শাসন আমলে ১৭৬৫ সালে ইংরেজ সেনাপতি মি. কোট্রিলের নেতৃত্বে ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানীর কাছে ঘোড়াঘাট সরকারের পরাজয় ঘটে। তখন ইংরেজরা সমগ্র উত্তরবঙ্গ নিয়ে ‘ঘোড়াঘাট জেলা’ গঠন করে। মি. কোট্রিল ঘোড়াঘাট জেলার প্রথম জেলা প্রশাসক ছিলেন।
ঘুরে দেখা যায়, দিনাজপুর-গোন্দিগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের ধারে সাহেবগঞ্জ মৌজায় দাঁড়িয়ে আছে ঘোড়াঘাট দুর্গের একটি মসজিদের অংশ বিশেষ। দুর্গের দক্ষিণ-পূর্বকোণে এই মসজিদের অব¯’ান। যা বর্তমানে লতাপাতা ও জঙ্গলে ঢেকে আছে। চারকোণা মসজিদটির তিন কোণায় তিনটি গম্বুজ ছিল। যা বর্তমানে ভগ্নপ্রায়। দুর্গের চারপাশে উচু লালমাটির টিবি বা পরিখা ছিল। যা বর্তমানে কেটে বসতবাড়ি গড়ে তুলেছে শত শত পরিবার। ¯’ানীয়রা ব্যক্তিগত উদ্দ্যোগে জরাজীর্ণ মসজিদটি চারপাশে দেয়াল তুলে সীমানা প্রাচীর তৈরি করেছে। মসজিদের পূর্বপাশে ঈদগাঁ মাঠ তৈরি করেছেন গ্রামবাসী।
ইংরেজ শাসন আমলেও কোম্পানী সৈনদের মাঝে অসংখ্য যুদ্ধ হয়েছে ঘোড়াঘাটে। ১৭৮৭ সালে ঘোড়াঘাট জেলার বিলুপ্তি ঘটে। ঘোড়াঘাট থেকে জেলার প্রশাসনিক সকল কার্যক্রম চলে যায় বর্তমান জেলা দিনাজপুরে। পরবর্তীতে ¯’ানীয়রাও ঘোড়াঘাট ত্যাগ করে চলে যায় দিনাজপুরে। এরপর থেকে দিনে দিনে হারিয়ে গেছে ঘোড়াঘাট দুর্গের ¯’াপনা এবং মুছে যেতে বসেছে ইতিহাস।
সম্প্রতি এই প্রাচীন ইতিহাস সমৃদ্ধ ¯’াপনা পরিদর্শন করেছেন দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) শাকিল আহমেদ এবং পুলিশ সুপার (এসপি) শাহ ইফতেখার আহমেদ সহ জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ। পরিদর্শন শেষে উক্ত ¯’াপনা রক্ষণাবেক্ষনে সব ধরণের পদক্ষেপ গ্রহণের আশ^াস দেন ডিসি।
দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদ বলেন, ঘোড়াঘাট দুর্গ এবং এরসাথে সংশ্লিষ্ট সকল প্রাচীন ¯’াপনা সম্পর্কে রিপোর্ট দাখিল করতে ইউএনও‘কে নির্দেশনা দিয়েছি। ইতিহাসসমৃদ্ধ এসব ¯’াপনা রক্ষায় আমরা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরণের ব্যব¯’া গ্রহণ করবো।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2019