২০ নভেম্বর ২০২৫, ০২:৪৭ অপরাহ্ন, ২৮শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি, বৃহস্পতিবার, ৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) প্রতিনিধিঃ তেঁতুলিয়ায় হাত-পা বেঁধে ৮ম শ্রেনির স্কুলছাত্রীকে ধর্ষনের ফলে অন্তঃসত্তা হয়ে পড়েছে ঐ কিশোরী। এ ঘটনায় কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে অভিযুক্ত আব্দুস সোবহানের (৫৭) বিরুদ্ধে তেঁতুলিয়া মডেল থানায় ধর্ষণ মামলা করেন।
ধর্ষণের শিকার ওই কিশোরী শালবাহান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। ধর্ষকের শাস্তির দাবিতে এলাকাবাসী ফুঁসে উঠেছেন। শনিবার রাতে অভিযুক্ত সোবহানের গ্রেপ্তার, শাস্তি ও বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করে এলাকাবাসী।
ঐ রাতে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় শালবাহান ইউনিয়নের মাঝিপাড়া থেকে ধর্ষক সোবহানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আব্দুস সোবহান তিরনইহাট ইউনিয়নের রওশনপুর গ্রামের মৃত মকবুল হোসেনের ছেলে।
এ ঘটনায় রোববার বিকেলে ধর্ষকের শাস্তি দাবিতে শালবাহান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, শালবাহান উচ্চ বিদ্যালয়, দাখিল মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে বিভিন্ন সেচ্ছাসেবী সংগঠনের ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল করে।
এলাকাবাসী জানান, আব্দুস সোবহান বাড়িতে লোকজন না থাকায় ওই কিশোরীকে একা পেয়ে হাত, পা ও মুখ বেঁধে জোরপুর্বক ধর্ষণ করে। ধর্ষণের পর ঘটনাটি কাউকে জানালে প্রাণনাশের হুমকি দেয় সে। এতে ওই কিশোরী ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে কাউকে বিষয়টি জানাননি। কিন্তু ধর্ষণের কারণে সে অন্ত:সত্তা হয়ে পড়েছে। এখন সে সাত মাসের অন্ত:সত্তা। কিভাবে একজন দাদার বয়সী এরকম বিবেকহীনভাবে অসামাজিক কাজ করতে পারে। অভিযুক্ত এই সোবহান চরিত্রহীন লোক। তিনি এর আগেও অনেক কুকর্ম করে জরিমানা দিয়েছে। সে কিশোরী মেয়েদের টার্গেট করে ধর্ষণ করে থাকে। এসব নিয়ে এলাকাবাসী তার প্রতি খুবই ক্ষীপ্ত। আমরা তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
ভুক্তভোগী কিশোরী জানায়, অভিযুক্ত সোবহান সম্পর্কে আমার দাদা হয়। বাড়িতে প্রায়ই আসতো। গত এপ্রিলের ৪ তারিখ শুক্রবারে বাড়িতে আমি একা ছিলাম। মা-বাবা মরিচ তুলতে গিয়েছিলেন। ঘরে শুয়ে ছিলাম। হঠাৎ বুঝে উঠার আগেই লোকটা আমাকে হাত-পা বেঁধে মুখ চেপে ধরে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। ঘটনাটি যাতে না বলি সে জন্য নানা ভয়ভীতি দেখায়। বলে দিয়ে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এ কারণে কাউকে কিছু জানাইনি। এর মধ্যে আমার গর্বে সন্তান চলে এসেছে। সাত মাসের অন্ত:সত্তা। আমি এর কঠিন বিচার চাই।
কিশোরীর বাবা কান্না জড়িত কন্ঠে জানান, আমি পাথর শ্রমিক। পাথর তুলে জীবিকা নির্বাহ করি। ঘটনাটি জানতাম না। কখনো জানানো হয়নি। গত বৃহস্পতিবার জানতে পেরে মেয়ের বিচার পাব কিনা খুব দু:শ্চিন্তাবোধ করছি। আমি এখন কী করবো, মেয়েটা সবেমাত্র অষ্টম শ্রেণিতে পড়ালেখা করছে। এর মধ্যে দাদার বয়সী সোবহান লোকটা মেয়েটাকে জোর করে ধর্ষণ অন্ত:সত্তা করে ফেলেছে। আমি এর সুবিচার চাই। আমার মেয়ের যে ক্ষতি করেছে তার উপযুক্ত বিচার চাই। ধর্ষক সোবহানের ফাঁসি কিংবা আইনের যথাযথ বিচারের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কামনা করছি।
তিরনইহাট ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর হোসাইন বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছি। তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। গ্রেপ্তারও হয়েছে। এ ধরণের সামাজিক অবক্ষয় হতে আগামী দিনে মানুষ বের হয়ে আসতে পারে তার জন্য এলাকাবাসীর পক্ষ হতে অভিযুক্ত ধর্ষকের কঠোর শাস্তি কামনা করছি।
তেঁতুলিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) নাজির হোসেন নানান, এ ঘটনায় থানায় একটি ধর্ষণ মামলা হয়েছে। অভিযুক্তকে আটক করা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।