২০ নভেম্বর ২০২৫, ০৬:০৮ অপরাহ্ন, ২৮শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি, বৃহস্পতিবার, ৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) প্রতিনিধিঃ পঞ্চগড়ে বিয়ের ভুয়া কাবিন নামা দিয়ে প্রতারনার অভিযোগে নিকাহ রেজিস্ট্রার তেঁতুলিয়ার কালান্দিগঞ্জ ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষক আলী আজগরের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করছে ভুক্তভোগী পরিবার। ঘটনাটি ঘটেছে পঞ্চগড় সদর উপজেলার সাতমেরা ইউনিয়নে পতিপাড়া এলাকায়।
বিবাহ বিচ্ছেদের পর ছেলে এবং মেয়ে উভয় পক্ষকে দুই প্রকার কাবিন নামা দিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছেন বিয়ের কাজী আলী আজগর। ছেলে পক্ষকে দিয়েছে মুল কাবিন নামা ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকার। যা নিকাহ রেজিস্ট্রারের মুল ভলিউমে বিদ্দমান রয়েছে। এদিকে প্রতারনার আশ্রয় নিয়ে মেয়ে পক্ষের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে জাল জালিয়াতির মাধ্যমে ১১ লক্ষ ২০ হাজার টাকার কাবিন নামা দিয়েছেন। বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় ছেলে এবং মেয়ে উভয়ই নিকাহ রেজিস্ট্রার মাওলানা আলী আজগরের বিরুদ্ধে আদালতে জাল জালিয়াতির মামলা দায়ের করেন। যা বর্তমানে বিচারাধীন রয়েছে।
দেনমোহরের টাকা পাওয়া আশায় ছেলের বিরুদ্ধে আদালতে মেয়ের দায়ের করা মামলার নথিতে ১১ লক্ষ ২০ হাজার টাকার ভুয়া কাবিন নামা সংযুক্ত করেছে।
এদিকে আবু হাসানের কাছে জাল কাবিনের টাকা আদায় এবং মামলা তুলে নেয়ার জন্য জালিয়াতির হোতা কাজী মাওলানা আলী আজগর, রিয়াসুন আকতার, ভাড়া করা দালাল সিরাজুল ইসলাম ও তার সাঙ্গ পাঙ্গারা চাপ সৃষ্টি এবং ভয়ভীতি হুমকি প্রদান করে আসছে।
বিবাহ রেজিস্ট্রারের এহেন জাল জালিয়াতি ও দুর্নীতি কর্মকান্ডের পরও কিভাবে স্বপদে বহাল তবিয়তে রয়েছে তা জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
জানাযায়, পঞ্চগড় সদর উপজেলার সাতমেরা ইউনিয়নে পতিপাড়া এলাকার রবিউল ইসলামের মেয়ে রিয়াসুন আকতার রিয়া,’র সঙ্গে তেঁতুলিয়া উপজেলার বাংলাবান্ধা ইউনিয়নের পাগলীডাঙ্গি এলাকার আব্দুল জব্বারের ছেলে আবু হাসানের সহিত ১৫ জুন/২৪ তারিখে পারিবারিক ভাবে বিবাহ হয়। বিয়ের দিন ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা দেনমোহর ধার্য করা হয়। তাৎক্ষণিক নগদ স্বমোদয় টাকা পরিশোধ করিয়া বিবাহ কাজ সম্পাদন করা হয়। বিয়ের ২২ দিন পর স্বামীর বাড়ি থেকে সাবেক প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে যায় রিয়াসুন আকতার রিয়া। এ নিয়ে উভয় পক্ষ আপোষ মিমাংসার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। পরে ছেলে আবু হাসান নোটারীর পাবলিক ও নিকাহ রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে ২৩ সেপ্টেম্বর/২৪ তারিখে রিয়াসুন আকতার রিয়াকে ডিভোর্স প্রদান করে। এতে রিয়াসুন আকতার রিয়া বাদী হয়ে স্বামী আবু হাসান, শশুর আব্দুল জব্বার, শাশুড়ি আছমা বেগম সহ ৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেন।
মামলায় জিততে হবে মর্মে নিকাহ রেজিস্ট্রার কালান্দিগঞ্জ ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা আলী আজগরের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ১১ লক্ষ ২০ হাজার টাকার ভুয়া কাবিন নামা সংগ্রহ করে মামলায় সংযুক্ত করেন। যা মুল ভলিউমে রয়েছে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা।
ভুক্তভোগী আবু হাসান জানান, আমি বারবার জেলা রেজিস্ট্রারের নিকট জাল জালিয়াতির অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাইনি।
এ ব্যাপারে নিকাহ রেজিস্ট্রার মাওলানা আলী আজগরের নিকট জানতে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন এটা আমি শয়তানের চক্করে পড়ে করেছি। আমার জীবনে কখনও এমন ঘটনা ঘটেনি ভুল তো মানুষেরই হয়। এখন দেখা যাক আদালত কি রায় দেয়।#