২০ নভেম্বর ২০২৫, ১১:৪৫ অপরাহ্ন, ২৮শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি, বৃহস্পতিবার, ৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নোটিশ
জরুরী ভিত্তিতে কিছুসংখ্যক জেলা-উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া হবে যোগাযোগ- ০১৭১২৫৭৩৯৭৮
সর্বশেষ সংবাদ :
চুয়াডাঙ্গায় ৩ তক্ষকসহ গ্রেফতার ১জন বাবুগঞ্জ এলজিইডি’র এলসিএস কমিউনিটি অর্গানাইজার সানজিদার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার ও হয়রানির অভিযোগ জোটের চাপ নাকি অভ্যন্তরীণ কোন্দল? বরিশাল -৩ আসনে এখনো প্রার্থী চূড়ান্ত করতে পারেনি বিএনপি। ভোটারদের মাঝে ‘ভিআইপি চমক’-এর গুঞ্জন বাবুগঞ্জে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ক্রীড়া সামগ্রী বিতরণ জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস এর ৫০ বছর পূর্তীতে ঝালকাঠি জেলা জাসাসের উদ্যোগে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বাংলাবান্ধায় ভারসাম্যহীন নারী গণধর্ষণেন শিকার চার ধর্ষক আটক বাবুগঞ্জে ছাত্রদল নেতা হত্যাকাণ্ড: ২১ জনের নামে মামলা! দর্শনায় দাড়ানো ট্রাকে আগুন ধরিয়েছে দুর্বৃত্তরা বিরামপুর রেলস্টেশনে ট্রেনের যাত্রা বিরতির দাবিতে সাংবাদিক সম্মেলন বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরের বড় বোনের ইন্তেকাল
বানারীপাড়ায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৬ মাস ধরে চালক না থাকায় রোগীরা সরকারী অ্যাম্বুলেন্স সেবা বঞ্চিত !

বানারীপাড়ায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৬ মাস ধরে চালক না থাকায় রোগীরা সরকারী অ্যাম্বুলেন্স সেবা বঞ্চিত !

রাহাদ সুমন,বিশেষ প্রতিনিধি ॥ বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দীর্ঘ ৬ মাস ধরে নেই অ্যাম্বুলেন্স চালক। অথচ সরকারি একটি অ্যাম্বুলেন্স হাসপাতাল চত্বরে দাঁড়িয়ে ধূলায় ঝাপসা হয়ে আছে। জরুরি চিকিৎসা বা রেফার্ডকৃত রোগী পরিবহনের জন্য সেই গাড়িটি কোনো কাজেই আসছে না, শুধু একজন চালকের অভাবে। ফলে বাধ্য হয়ে রোগীর স্বজনদের দ্বারস্থ হতে হচ্ছে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স সেবার, যা দিনে দিনে রীতিমতো বোঝা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। স্থানীয়দের অভিযোগ,বরিশাল শহরের হাসপাতালে রোগী নিয়ে যেতে এখন পনেরো’শ থেকে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত গুনতে হচ্ছে, যেখানে সরকারি অ্যাম্বুলেন্স থাকলে তা হতো নামমাত্র ৬০০টাকা ফি-তে। সবচেয়ে বিপাকে পড়ছেন মধ্যবিত্ত ও গরিব রোগীরা। অনেক সময় উপজেলা হাসপাতালে আসার পর ডাক্তার রেফার্ড দিলেও দরিদ্র রোগীদের অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া জোগাড় করতে হিমশিম খেতে হয়। এক রোগীর স্বজন বলেন, “আমার বোনের সিজার করতে হবে বলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে বরিশাল রেফার্ড করে। কিন্তু হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স চালক নেই শুনে আমাদের হাতে সময় না থাকায় পাশের একটি বেসরকারি এ্যাম্বুলেন্স ডেকে দেড় হাজার টাকা ভাড়া গুনতে হয়েছে।” স্থানীয়ভাবে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, ‘সরকার যেখানে প্রতিটি উপজেলায় অ্যাম্বুলেন্স দিচ্ছে, সেখানে একটি চালক রাখার মতো সামর্থ্য কি নেই স্বাস্থ্য বিভাগের?” হাসপাতালের একজন সিনিয়র নার্স নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘গাড়ি আছে, কিন্তু চালক নেই, এটা শুধু বিব্রতকর না, ভয়াবহ। অনেক সময় রাতবিরাতে রোগী আসলে আমাদের কাছেই জানতে চায়, অ্যাম্বুলেন্স?’ আমরা বলি, ‘আছে, কিন্তু চালক নেই।’ মানুষ ভাবে আমরা মিথ্যা বলছি।’
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফকরুল ইসলাম মৃধা বলেন, প্রতিমাসে অ্যাম্বুলেন্স চালক চেয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরে চিঠি দিচ্ছি। কিন্তু পদায়নের কোন উদ্যোগ নেই। অস্থায়ী চালক নিয়োগের বিষয়েও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন লাগবে। ফলে নিরুপায় হয়ে চালকের জন্য অপেক্ষার প্রহর গুনছি।
প্রসঙ্গত,গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আ্যাম্বুলেন্স চালক কাজী আব্দুর রহমানকে প্রশাসনিক কারনে বদলী ( স্ট্যান্ডরিলিজ) করা হয়। সেই থেকে এ পদটি শুণ্য রয়েছে। এদিকে অর্ধ বছর ধরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সরকারি অ্যাম্বুলেন্স অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে থাকায় এবং এর পেছনে কোনো স্থায়ী সমাধান না আসায় জনমনে ক্ষোভ বিরাজ হয়েছে। চিকিৎসা ব্যবস্থার এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ যদি কেবল একজন চালকের অভাবে অকার্যকর হয়ে থাকে, তবে প্রশাসনের দায়িত্বজ্ঞান নিয়েও প্রশ্ন উঠছে সচেতনমহল থেকে। স্থানীয় একজন প্রবীণ শিক্ষক বলেন, ‘সর্বসাধারণের জন্য একটি হাসপাতাল হচ্ছে ভরসার জায়গা। সেখানে অ্যাম্বুলেন্স থাকা সত্ত্বেও চালক না থাকার কারণে মানুষকে চড়া দামে বেসরকারি সেবা নিতে বাধ্য করাটা এক ধরনের বৈষম্য। এটা দুর্নীতির চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। আমাদের একটাই দাবি, ‘গাড়ি আছে কিন্তু চালক নেই’ এই অযৌক্তিক ও অমানবিক অবস্থা থেকে যেন দ্রুত মুক্তি পাওয়া যায়। কারণ, রোগীর সময় চলে যায় সেকেন্ডে, আর প্রশাসনের ফাইল ঘোরে মাসের পর মাস। এদিকে মাতৃ-প্রসূতি সেবায় জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠত্বের পুরস্কার অর্জন করা বানারীপাড়া ৫০শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বর্তমানে নানা সমস্যা-সংকটে জর্জরিত। চালকের অভাবে অ্যাম্বুলেন্স সেবা অচল, এখানে বিশেষজ্ঞসহ ২২ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও রয়েছেন মাত্র ৮জন। অ্যানেস্থেসিয়া ও গাইনী ডাক্তার না থাকায় ৮ মাস ধরে সিজারিয়ান অপারেশন বন্ধ রয়েছে। গাইনী,মেডিসিন ও শিশু বিশেষজ্ঞ তিনটিপদ দীর্ঘদিন ধরে শুণ্য রয়েছে। ফলে এ হাসপাতালে সার্বিক চিকিৎসা সেবা ভঙ্গুর হয়ে পড়েছে। ###

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2019