২১ নভেম্বর ২০২৫, ১২:০৯ অপরাহ্ন, ২৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি, শুক্রবার, ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নিজস্ব প্রতিবেদক.. বরিশাল একমাত্র বক্ষব্যাধি হাসপাতাল ও ক্লিনিকটি অভিভাবকহীন।কর্তৃপক্ষের অযত্ন-অবহেলায় ব্যাহত হচ্ছে বরিশাল নগরীর বক্ষব্যাধি (টিবি) হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা। সবকিছু মিলিয়ে প্রতিষ্ঠানটি যক্ষ¥ারোগীর চিকিৎসা দিতে গিয়ে নিজেই যেন যক্ষ্মারোগে আক্রান্ত। অথচ এটি বরিশাল বিভাগের একমাত্র বক্ষব্যাধি হাসপাতাল। হাসপাতালটি অভিভাবকহীন হয়ে পরায় কাঙ্খিত সেবা তো দূরের কথা ন্যূনতম ভরসাও রাখতে পারছে না চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও সাধারণ মানুষ।
এমতাবস্থায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে- শহরের উত্তর অঞ্চলের আমানতগঞ্জে ১১ একর জমিতে ১৯৬৫ সালে হাসপাতালটি নির্মিত হয়েছে। কিন্তু ২০ শয্যার এই হাসপাতালে ১২টি পদে কাগজে-কলমে লোক থাকলেও কর্মস্থালে একজনও নেই। এক কথায় দায়িত্বরত সবাই যেন হাসপাতালটিকে নিজেদের বাড়ি বানিয়ে ফেলেছে! কে রাখে কার খবর।
হাসপাতালের বক্ষব্যাধি ক্লিনিকেও ১১টি পদের বিপরীতে বেলা ২টায় কর্মরত পাওয়া জায়নি কাউকে। গুরুত্বপূর্ণ জুনিয়র কনসালট্যান্ট (টিবি অ্যান্ড লেপ্রোসি) মাহামুদুল হাসান বান্নার ক্লিনিকের দায়িত্বে থাকিলেও তিনি বসেন বক্ষব্যাধি হাসপাতালে। জানাজায়, বান্না সকাল ১০ টায় আসিয়া নির্দিষ্ট সময়ে আগে বেলা ১ টায় চলে জায়। গত (১২ অক্টোবর) মাহামুদুল হাসান বান্না বক্ষব্যাধি হাসপাতালে রুমে বসে ডাক্তার ফারহানা বেগমের সাথে হাসি ঠাট্রায় মেতে ছিলো। সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে তেলে বেগুনে জ¦লে উঠে বান্না ও ফারহানা। চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা বলেন, এতোক্ষন দাড়িয়ে আছি আর তারা রুমের ভিতরে বসে আনন্দ করছে। তারা আরও বলেন, আপনাদের সাথেই এমন করে তাহলে আমাদের সাতে কেমন ব্যবহার করতে পারে বলেন।
খোঁজ নিয়ে জানাজায়, মাহামুদুল হাসান বান্না ক্লিনিকে না বসে বক্ষব্যাধি হাসপাতারে রোগী দেখার নাম করে মেডিকেল অফিসার ডাক্তার ফারহানার সাথে বেশি সময় হাসিতে মেতে থাকেন। হাসপাতাল সূত্রে জানাজায়, বক্ষব্যাধি হাসপাতালে ডাক্তার মাসুমা খানুন ও ডাক্তার ফারহানা বেগম মেডিকেল অফিসার।
জানতে চাওয়া হয় তাদের রোগী দেখার রুম কোনটা! দায়িত্বরত নার্সরা উত্তরে বলেন, এক রুমে বসেই দেখেন। তারা বলেন, মেডিকেল অফিসার সবাই তো একদিনে অফিস করে না। তাই একই রুম ব্যবহার করে থাকেন তারা।
সোমবার (১৩ নভেম্বর) দুপুর ২টায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা জায় হাসপাতাল মেইন ফটকে ঝুলছে তালা।ভিতরে নেই কেউ। যোগাযোগ করা হয় সিভিল সার্জন অফিসের হিসাবরক্ষকের সাথে কিছু ক্ষন পরে একজন নার্স আসিয়া তালা খুলে হাসপাতালের ভিতরে প্রবেশ করেন। জানতে চাওয়া হয়, হাসপাতালটি বন্ধ কেনও! তিনি বলেন, আমার ডিউটি শেষ। এখন জার ডিউটি সে বাহিড়ে রোগীর দেখতে গিয়েছে। জানতে চাওয়া হয় ভর্তি রোগীর কি অবস্থা তিনি জানান, আমাদের হাসপাতালে একজন রোগী ভর্তি আছে, ভর্তি রোগী এখন সে কোথায়! কোন উত্তর দেয়নি কতব্যরত নার্স।
আসেপাশের স্থানীয় বাসীন্দারা বলেন, এখানে অনেক রোগী হয়, ডাক্তার না থাকার কারনে দিনে দিনে রোগী শূন্য হয়ে পরেছে নগরীর আমানতগঞ্জ ২০ শয্যা বিশিষ্ট বক্ষব্যাধি হাসপাতালটি। সেবার মান নিয়ে শুধু রোগী নয়, স্থানীয় লোকদেরও আক্ষেপের শেষ নেই।
তারা বলেন, সরকারি হাসপাতাল এমনভাবে কি করে চলে। যে জার মতো করে আসেন, আবার চলেও জার তাদের ইচ্ছা মতো। তারা আরও বলেন, প্রায় সময়ে বেলা ১টার পরে মেইন গেটে তালা মেরে চলে জায় কর্মকর্তা কর্মচারীরা।
এই দুরাবস্থার বিষয় জানতে বরিশাল সিভিল সার্জন ডা. মারিয়া হাসানের ফোনে একাধিক বার কল দিলেও তিনি কল রিসিভ করেন নি।
পরিচালক স্বাস্থ্য বরিশাল বিভাগ এর কার্যালয়ের উচ্চমান সহকারী মো: জুয়েল হাওলাদার বলেন, আসলে এটা কম্য নয়, বিষয়টি দুঃখ জনক। তিনি বলেন, হাসপাতাল এবং ফায়ার সার্র্ভিস দুটাই জরুরী সেবা। এগুলো বন্ধ রাখার সুযোগ নেই। আপনি আগামীকাল অফিসে আসবেন বিষয়টি আমরা দেখবো।
বক্ষব্যাধি হাসপাতালের বিষয়ে পরিচালক স্বাস্থ্য বরিশাল বিভাগ এর পরিসংখ্যানবিদ এ.এস.এম আহসান কবির বলেন, আপনি বিষয়টি সিভিল সার্জনকে জানান। সংবাদকর্মী বলেন, এর আগেও তাকে জানানো হয়েছে সিভিল বলেন, আমি অনেক বার বলেছে তারা শোধরাচ্ছে না, আমার পক্ষে কি সম্ভব তাদের অফিসে কি দৈনিক বলা।