২১ নভেম্বর ২০২৫, ০২:৫৮ পূর্বাহ্ন, ২৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি, শুক্রবার, ৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
মাহতাব উদ্দিন আল মাহমুদ,ঘোড়াঘাট(দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ
অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সনাতন ধর্মালম্বীদের বৃহত্তর ধর্মীয় উৎসব দূর্গা পূজা। সাধারণত আশ্বিন মাসের শুক্ল পক্ষের ষষ্ঠ থেকে দশম দিন পর্যন্ত শারদীয়া দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। এই পাঁচটি দিন যথাক্রমে “দুর্গাষষ্ঠী”, “দুর্গাসপ্তমী”, “মহাষ্টমী”, “মহানবমী” ও “বিজয়াদশমী” নামে পরিচিত। আশ্বিন মাসের শুক্ল পক্ষটিকে বলা হয় “দেবীপক্ষ”।
ঘোড়াঘাট ৪ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ২৯ পূজা মন্দিরে বসেছে সিসি ক্যামেরা।
সনাতন ধর্মালম্বীদের বৃহত্তর ধর্মীয় উৎসব দূর্গা পূজার বাকি আর মাত্র একদিন। দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার মন্ডপ গুলোতে প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ। কারিগররা হাতের নিপুণ ছোঁয়া ও মনের মাধুরী মিশিয়ে তৈরী করেছেন লক্ষী, গনেশ, দুর্গা, কার্তিক,স্বরসতী, সহ নানা ধরনের প্রতিমা। প্রতিমাগুলোতে বর্তমানে কারিগররা তুলির শেষ আঁচর আঁকতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। ৯ অক্টোবর পূজা শুরু হয়ে ১৩ অক্টোবর প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে উৎসবের সমাপ্তি ঘটবে।
সাধারণত আশ্বিন মাসের শুক্ল পক্ষের ষষ্ঠ থেকে দশম দিন পর্যন্ত শারদীয়া দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। এই পাঁচটি দিন যথাক্রমে “দুর্গাষষ্ঠী”, “দুর্গাসপ্তমী”, “মহাষ্টমী”, “মহানবমী” ও “বিজয়াদশমী” নামে পরিচিত। আশ্বিন মাসের শুক্ল পক্ষটিকে বলা হয় “দেবীপক্ষ”।
আজ বুধবার বোধন আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে দুর্গাপুজা শুরু। অন্য বছরের তুলনায় এই উপজেলার সব পূজা মন্দিরে নেওয়া হয়েছে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
বিগত সময়ে এই উপজেলার একাধিক মন্দিরে প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠী যাতে কোন ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাতে না পারে, সেজন্য পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আগাম নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
উপজেলা প্রশাসনের তথ্য বলছে, এই বছর ঘোড়াঘাটে ২৯টি মন্দিরে পূজা অর্চনা হবে। যা গত বছরের তুলনায় ১০টি কম। তারমধ্যে শুধুমাত্র ঘোড়াঘাট পৌরসভার ১১ টি, বুলাকীপুর ইউনিয়নে ৫ টি, পালশা ইউনিয়নে ৩টি ও সিংড়া ইউনিয়নের ১০ টি সহ মোট ২৯টি মন্দিরে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। দূর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হবে।
এই ২৯টি মন্ডপের সব কয়টিতে বসানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা। উপজেলা প্রশাসনে পক্ষ থেকে মন্দির কমিটির হাতে এসব বিশেষ সিসি ক্যামেরা তুলে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি মন্দিরের স্বেচ্ছাসেবকরা এখন থেকেই দায়িত্ব পালন করছে। যাতে করে প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনা না ঘটে। এবারের দূর্গা পূজায় সব মন্দিরে থাকবে ৪ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরুর আগে থেকে পোশাকধারী পুলিশ এবং আনসার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবে। পাশাপাশি পূজার শৃঙ্খলা রক্ষায় মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে স্বেচ্ছাসেবীরা দায়িত্ব পালন করবে। এছাড়াও সাদা পোশাকে পুলিশের গোয়েন্দা সদস্যরা কাজ করবে বলে নিশ্চিত করেছেন ঘোড়াঘাট থানার ওসি।
২৯টি মন্দিরের মধ্যে বিশেষ কিছু দিক বিবেচনায় চারটি মন্দিরকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে পুলিশ। ঝুঁকিপূর্ণ মন্দির গুলো হলো ঘোড়াঘাট পৌর এলাকার বড়গলি (আমাগান) সার্বজনীন ইউনিয়নের রানীগঞ্জ বাজার সার্বজনীন দূর্গা মন্দির ও বিরাহীমপুর সার্বজনীন দূর্গা মন্দির। এ বছর দূর্গাপূজা শান্তিপূর্ণ শেষ করতে এই উপজেলার সবগুলো পূজা মন্দিরের কমিটির সাথে পৃথক পৃথক ভাবে উপজেলা প্রশাসন এবং থানা পুলিশ বৈঠক করেছে।
এতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট দিনে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া সহ আগে থেকেই স্বেচ্ছাসেবীদের মাধ্যমে প্রতিমার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পূজা উদযাপন পরিষদের নেতারা।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রফিকুল ইসলাম জানান, দুর্গা পূজা সফলভাবে অনুষ্ঠিত করার লক্ষ্যে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার থাকবে। মন্দিরগুলোতে অস্ত্রধারী পুলিশ ও আনসার সদস্য এবং লাঠিধারী পুরুষ মহিলা সদস্য মোতায়েন থাকবে। এছাড়াও মন্দির কমিটির দায়িত্বে স্বেচ্ছাসেবকগণ আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সঙ্গে সহযোগি হিসেবে পুজা মণ্ডপ গুলোতে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবেন।
ঘোড়াঘাট উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি কার্তিক চন্দ্র সরকার বলেন, ‘প্রশাসনে পক্ষ থেকে পাওয়া সিসি ক্যামেরা আমরা সবগুলো মন্দিরে স্থাপন করেছি। এছাড়াও বড় মন্দির গুলোতে আমাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ক্যামেরা লাগানো আছে। আমাদের সব কয়টি মন্দিরের স্বেচ্ছাসেবীদের তালিকা থানায় জমা দিয়েছি।
প্রশাসনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আগের তুলনায় ভালো। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্দিষ্ট দিনে প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে এই উৎসব শেষ করা সম্ভব হবে বলে আশা করছি।’
ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হক বলেন, ‘উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দিক নির্দেশনায় আমরা সব ধরণের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। ঝুঁকিপূর্ণ মন্দির গুলোতে আমাদের আরো বিশেষ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। ইতিমধ্যে আমরা সব গুলো মন্দির পরিদর্শন করেছি।
আমাদের বিট অফিসাররা মন্দিরের সার্বিক বিষয় খোঁজখবর রাখছে। পূজা উদযাপন পরিষদেও নেতাদের সাথে আমরা এবং আমাদের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দফায় দফায় বৈঠক করে সার্বিক নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।