১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:২১ অপরাহ্ন, ১১ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি, শনিবার, ২৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
স্পোর্টস ডেস্ক
৫ আগস্ট, ২০২৪। বাংলাদেশের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে দেশ ছেড়ে যান পদত্যাগ করা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার পদত্যাগের পরপরই ঢাকার রাস্তায় শুরু হয় জনতার উল্লাস। ক্ষমতার পালাবদলের সেই রাত থেকেই আত্মগোপনে আছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচিত সব মুখ। বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান পাপনসহ একাধিক বোর্ড পরিচালকের খোঁজ নেই ৫ তারিখের পর থেকেই।
গেল ১৫ বছর ধরে দেশের অন্যসব আঙ্গিনার মতো বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডেও ছিল নানা অনিয়ম আর দুর্নীতির ছাপ। ৬ তারিখ থেকেই ক্রিকেট পাড়ায় শুরু হয়েছে পাপনবিরোধী নানা আন্দোলন। তবে এরইমাঝে দেখা গিয়েছে আরেক চিত্র। ৫ই আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের জনশূন্য ভবনে প্রবেশ করেন তিন থেকে চারজন যুবক। ব্যাগে করে সরিয়ে ফেলা হয় গোপনীয় নথি।
গণমাধ্যমের সুবাদে বিসিবির সিসিটিভি ফুটেজ থেকে জানা গিয়েছে এমন কিছু। অন্তত দুটি ব্যাগে ভরে বিসিবি থেকে সরানো হয়েছে বেশ কিছু জিনিস। তবে সেসব কি আসলেই নথিপথ কি না তা নিয়ে আছে সংশয় আর প্রশ্ন। সবচেয়ে বড় কথা, ক্রিকেট বোর্ডের বর্তমান সিইও নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজনও জানেন না এমন কাণ্ড নিয়ে।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র গায়েবের অভিযোগ উঠেছে বোর্ডের একাধিক কর্মকর্তা ও প্রধান নির্বাহীর বিরুদ্ধে। এ সংক্রান্ত সিসিটিভির বেশ কয়েকটি ফুটেজ এসেছে সময় সংবাদের হাতে। যেখানে দেখা গেছে অপরিচিত একাধিক ব্যক্তি, গত ৫ আগস্ট রাতে ব্যাগে করে বিসিবি কার্যালয় থেকে বেশ কিছু জিনিস সরিয়ে নেন। এ সময় তাদের নিয়ে বিভ্রান্তির মধ্যে ছিলেন সিকিউরিটির দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা। যদিও নথি সরানোর সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায় ৫ আগস্ট রাত ৯টার পর মিনিটে বিসিবি কার্যালয়ের করিডোর ধরে হেঁটে বেরিয়ে যাচ্ছেন দুজন যুবক। যার একজনের কাঁধে ব্যাগ। মোবাইলের আলো জ্বেলে রাত ৯টা ১৭ মিনিটে বের হয়ে যান তারা। এর আগে রাত সাড়ে ৮টার দিকে বিসিবিতে প্রবেশ করেন তারা।
রাত ৯টা বেজে চল্লিশ মিনিট। দুইটি ব্যাগ নিয়ে এক ব্যক্তি নেমে যায় লিফটে করে। ব্যাগ দুটিই যে বিভিন্ন জিনিসে বোঝাই করা ছিল তা ব্যাগের অবস্থা থেকেই স্পষ্ট। কিছু সূত্রের দাবি, গুরুত্বপূর্ণ নথি ছাড়াও সেখানে ছিল নগদ অর্থ।
তবে এসব নিয়ে একেবারেই জানেন না নিজাম উদ্দিন চৌধুরী সুজন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জানালেন, নথি গায়েবের বিষয়টি তিনি নিজেও মিডিয়াতেই দেখেছেন। জানালেন, ‘এমন বিষয়ে আসলে কখনো কথা বোলার সুযোগ হয়নি। কথা বলব।’
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে গত দেড় দশকে অনেক অনিয়ম হয়েছে এমন অভিযোগ আছে ক্রিকেট সংগঠক, কোচ থেকে শুরু করে জাতীয় দলেরই একাধিক সাবেক ও বর্তমান খেলোয়াড়ের। রাজনৈতিক কারণেই মুখ খোলেননি লম্বা সময় ধরে। তাতে এবার নতুন এক মাত্রা যোগ করেছে ৫ আগস্ট রাতের এই ঘটনা।