মাহমুদ হাসান রনি, চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধিঃ দর্শনাস্থ কেরু এ্যান্ড কোম্পানীর বিভিন্ন সেক্টরে১০৪ জন অস্থায়ী মৌসুমী শ্রমিককে স্থায়ীকরণের মাধ্যমে ১ যুগ পর তাদের আশা পূরণ হয়েছে।অনেকে অবসরের দাড়প্রান্তে এসেও স্থায়ীকরণ হওয়ায় দারুন খুশী।ভূলে গেছেন অতীতের দুঃখ কষ্ট।কেরু এলাকায় চলছে মিষ্টি বিতরণ হোটেলে মিষ্টি শূন্য।
এশিয়ার বৃহৎ দর্শনাস্থ কেরু এ্যান্ড কোম্পানিতে দীর্ঘদিন ধরে স্থায়ী লোকবল সংকট থাকায় ১ যুগ পর চিনিকলটি অন্যান্য ৪ টি মিলের মতো মৌসুমী থেকে স্থায়ী করনের সুযোগ পায়। গত ১৪ মার্চ নীতিমালা তৈরি করে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশনের সদর দপ্তরে পাঠায় চিনিকল কর্তৃপক্ষ। যার ফলে চিনিকলে শূণ্য পদে অস্থায়ী মৌসুমি শ্রমিক-কর্মচারীদের সদর দপ্তর ২৫ মার্চ এক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে শৃন্যপদ পৃরণ করার জন্য দরখাস্ত করার আহব্বান জানান। তারই প্রেক্ষিতে কেরু এ্যান্ড কোম্পানীর ব্যাবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করে ২ এপ্রিল স্থায়ী করণ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়। পরর আবেদন কারীদের আবেদন ২৪ এপ্রিল সদর দপ্তরে পাঠালে সদর দপ্তরের প্রতিনিধি মোঃ সাইফুল আলম আবেদন গুলো যাচাই বাচাই করেন। পরে ১৩ ও ১৪ মে অনুষ্টিত হয় আবেদন কারীদের পরিক্ষা। এ পরিক্ষায়১৪০ জন শ্রমিক-কর্মচারী অংশ নেয়। গত ১৫ মে সকাল ১১ টার দিকে ১০৯ জনের বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ থাকলেও ৫ টি পদে কোন লোকবল না থাকায় সে ৫টি পদ শৃন্য রেখে ১০৪ জন শ্রমিক-কর্মচারীকে স্থায়ী নিয়োগ প্রদান করা হয়। নিয়োগপ্রাপ্তরা নতুন কর্মস্থলে যোগদানও করেন।তবে হঠাৎ ১৫ মে সন্ধায় সচিব (বিএসএফআইসি) চৌধুরী রুহুল আমিন কায়ছার বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশন (বিএসএফআইসি’র) অধীনে সকল চিনিকল প্রতিষ্ঠানে চলমান মৌসুমি জনবল থেকে স্থায়ী সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম স্থগিত করার আদেশ দেন। কিন্তু তার আগে শ্রমিক- কর্মচারীরা যোগদানের চিঠি হাতে পেয়ে স্ব,স্ব কর্মস্থলে যোগদান করে। যোগদানের পরে ১০৪ জন শ্রমিকদের মাঝে আনন্দ উল্লাস করতে থাকে। ওইদিনই বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশন নিয়োগ স্থগিতের পত্র আসাতে অন্যান্য মিলের শ্রমিকদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করলেও কেরু’র শ্রমিক কর্মচারীদের মধ্যে দেখা গেছে আনন্দ উল্লাস করতে।কারণ কারা নিয়মতান্ত্রিক ভাবে কাজে যোগদান করে ফেলেছে।কেরুজ শ্রমিকরা বলেন দীর্ঘ ১ যুগ পর ১০৪ জন মৌসুমী শ্রমিক ও কর্মচারীরা সিজেনাল মৌসুমি থেকে স্থায়ী নিয়োগ পেয়েছে ১৫ মে রবিবার সকাল ১১ টায়। তাদেরকে নিয়োগ প্রদান করার পর কেরু এ্যান্ড কোম্পানির বিভিন্ন দপ্তরে যোগদানও করে। কেরু এ্যান্ড কোম্পানিতে শ্রমিক কর্মচারীর ইতিপূর্বে ৩ বার নিয়োগ পরীক্ষা ব্যাহত হয়েছে। এবার চাকুরিতে যোগদান করে স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়ে শ্রমিক ও কর্মচারীরা।তারা দীর্ঘদিন ধরে পরিবার পরিজন নিয়ে কষ্টে ছিলো। কেরু এ্যান্ড কোম্পানীর পরিবহন বিভাগের সুপারফাইজার মিজানুর রহমান কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, আমি ২০০১ সাল থেকে সিজেনাল মৌসুমি চাকুরী করে আসছি।দীর্ঘ ২৩ বছর ধরে ছেলে মেয়ে নিয়ে কোন রকম সংসার চালিয়ে এসেছি। শেষ সময়ে এসে পদন্নতি পেলাম, আমার আর সাড়ে ৭ মাস চাকুরী আছে। আমার পদন্নতি পেয়ে আমি খুব খুশি হয়েছি এবং কেরু কতৃপক্ষ ও শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি এবং সাধারন সম্পাদককে ধন্যবাদ জানিয়েছি।
আউট ষ্টেশন ক্যান গার্ড আবুল কাশেম বলেন, চাকুরীর শেষ সময়ে স্থায়ী হলাম। আমার আর সাড়ে তিন বছর চাকুরি আছে। শেষ বয়সে এসে স্থায়ী হলেও তাতেও আমিও খুশি।
আউট ষ্টেশন ক্যান গার্ড শহিদুল ইসলাম
এল ডি সেটিংস ২৬ বছর পর পদন্নতি পেলেন। আতিয়ার রহমান, ১৪ বছর পর পদন্নোতি পেলাম।
মৌসুমি ক্রয় করনিক,শান্তি মিয়া,১৪ বছর পর স্হায়ী পদোন্নতি পায়।মুক্তিযোদ্ধা সন্তান মতিয়ার রহমান,ড্রাইভার, দীর্ঘ ১৪ বছর পর স্হায়ী হয়।মুক্তিযোদ্ধা সন্তান, জাহাঙ্গীর,বদরুল,নৃরুল আমিন,রাজু আহম্মে মতিয়ার রহমান,
জুবাইদা নাহার এ্যানি ও নাজেরা বেগমসহ ১৫/২০
জন মুক্তিযোদ্ধাকে স্হায়ী করন করা হয়েছে ।তারা আরও বলেন,আমাদের অনেক দিনের কষ্টের ফসল,খেয়ে না খেয়ে ডিউটি করছি এখন আমাদের স্থায়ী হওয়াতে আমার সব কষ্ট দৃর হয়ে গেছে।উল্লেখ্য এ প্রতিষ্ঠানটিতে রয়েছে প্রায় ১৪ শ শ্রমিক-কর্মচারী। এ সমস্ত শ্রমিক-কর্মচারী সহ এলাকার প্রায় ২০ হাজার পরিবারে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে এই প্রতিষ্ঠানটি। আইনি জটিলতার কারনে দীর্ঘদিন স্থায়ী নিয়োগ না হওয়ায় প্রতিষ্ঠানির বিভিন্ন বিভাগে প্রায় দেড় শতাধীক শুণ্য পদ তৈরী হয়। এতে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম বিঘ্নিতসহ শ্রমিক-কর্চারীদের মধ্যে সৃষ্টি হয় হতাশা। প্রতিষ্ঠানটির সার্বিক দিক বিবেচনা করে সকল আইনি জটিলতা কাটিয়ে চুয়াডাঙ্গা-২আসন সংসদ সদস্য হাজী আলী আজগার টগর ও প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেনের সহ শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের একান্ত প্রচেষ্টায় ১০৪ জন শ্রমিক-কর্মচারীর স্থায়ীকরণ হয়েছে। এসমস্ত মৌসুমী শ্রমিক-কর্মচারীদের ভাগ্য পরিবর্তন হওয়ায় তাদের পরিবারের মাঝে বইছে উৎসবের আমেজ।
কেরুজ চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোশারফ হোসেন বলেন, নিয়ম মাফিক প্রতিষ্ঠানে ১০৯ টি শুন্য পদের জন্য গত ১৩ ও ১৪ মে সকালে কেরু হাইস্কুলে শ্রমিক-কর্মচারীদের স্থায়ী নিয়োগ পরিক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এ নিয়োগ পরিক্ষায় প্রায় ২শ শ্রমিক কর্মচারী অংশ নেয়। পরে ওই দিনই যাচায়-বাচাঁয় করে চুড়ান্ত ভাবে ১ ০৯জনের স্থাায়ী বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়। সংশিষ্ট পদে লোক না থাকায় ৫ টি পদ বাকি রেখে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ ১০৪ জন শ্রমিক-কর্মচারীকে স্থায়ী করণ করা হয়। গত ১৫ মে সকালে সদ্য স্থায়ী করণ শ্রমিক-কর্মচারী প্রতিষ্ঠানে যোগদান করে।পরে সন্ধায় বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশন সচিব নিয়োগ স্থগিতে আদেশ দেন,তার আগেই শ্রমিক কর্মচারীরা যোগদান করে।এ বিষয়ে শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি ফিরোজ আহম্মেদ সবুজ বলেন,আমরা বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশনের অনুমোদনে আমরা এ স্থায়ী নিয়োগ সম্পর্ন করেছি।এ বিষয়ে শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারন সম্পাদক মাসুদুর রহমান মাসুদ বলেন,২০/২৫ বছর ধরে শ্রমিকরা চাকুরী করে যাচ্ছে তাদেন কোন পদোন্নতি হয়না।তাই সবার প্রোচেষ্টায় গত ১৫ মে ১০৪ জন শ্রমিককে স্থায়ী করন করা হয়েছে।স্বচ্ছতা না থাকলে যাদের ৭ মাস, কারও ২ বছর সাড়ে ৩ বছর তাদের স্থায়ী হত না।