২১ নভেম্বর ২০২৫, ০৫:২০ পূর্বাহ্ন, ২৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি, শুক্রবার, ৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
মাহমুদ হাসান রনি চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধিঃ
দামুড়হুদায় চুরি মামলায় জেলা কারাগারে থাকা আসামি মিঠু মিয়া (৪০) নামের একজনের মৃত্যু হয়েছে। পরিবারের দাবি নির্যাতন করে মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে হত্যা করা হয়েছে।
বুধবার চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্মরত ডা. আল ইমরান জুয়েল তার মৃত্যু নিশ্চিত করেন।তিনি আরও জানান, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে জেলা কারাগার থেকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে ভর্তির পর তার মৃত্যু হয়।
দামুড়হুদা উপজেলার হোগলডাঙ্গা গ্রামের ফজলু মিয়ার ছেলে মিঠু মিয়া(৪০) তিনি দামুড়হুদা থানার ১৮/২৪ নম্বর মামলার ৩৭৯/৪১১ ধারার আসামি। পরিবারের দাবি মিথ্যে চুরির অপবাদে গণপিটুনি নির্যাতনের কারণে মিঠু মারা গেছে।
চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগারের ভারপ্রাপ্ত জেল সুপার দেওয়ান মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম জানান, মিঠু মিয়া ১৭ ফেব্রুয়ারি একটি চুরি মামলায় কারাগারে আসেন। মঙ্গলবার রাতে তিনি অসুস্থবোধ করেন। এ সময় দ্রুত তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধিন অবস্থায় রাত ১টার দিকে চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত মিঠু মিয়ার বড় ভাই বাবলু, বড় বোন দলিয়ারা খাতুন, দুলাভাই ছুরাপ হোসেন, চাচা আব্দুল হান্নান ও প্রতিবেশী বাবু জানান, মিঠু রাজ মিস্ত্রির কাজ করত। ঘটনার রাতে মিঠু রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে মোবাইলে কথা বলছিল। এক পর্যায়ে গ্রামের শেষ পাড়ার কয়েকজন তাকে ধরে বেধড়ক মারপিট করে। পরে তাকে ভগিরথপুর গ্রামের ইকতার মেম্বারের বাড়ি আটকে রাখে। সংবাদ পেয়ে আমরা মেম্বারের বাড়িতে গেলে মিঠুর সাথে আমাদের দেখা করতে কথা বলতে দেয়নি। পরে তাকে ভগিরথপুর ক্যাম্প পুলিশের কাছে দেয়া হয়।
মিঠুকে ক্যাম্পে দেয়ার পর দুলাভাই ছুরাপ হোসেন তার সাথে দেখা করে। এ সময় মিঠুর কান ও নাক দিয়ে রক্ত পানি ঝরছিল বলে জানান তিনি ।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক আল ইমরান জুয়েল জানান, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে জেলা কারাগারের পুলিশ সদস্যরা এক কয়েদিকে বুকে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। হাসপাতালের পুরুষ মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তির পরে চিকিৎসাধিন অবস্থায় ঘণ্টাখানেক পর তার মৃত্যু হয়। তার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।
দুলাভাই ছুরাপ হোসেন অভিযোগ করে বলেন, পুলিশ ক্যাম্পে মিঠুকে দেওয়ার পর মেম্বার ইকতার আমাকে বলে পুলিশকে ১৫ হাজার টাকা দিতে হবে। টাকা না দিলে পুলিশ রাতে মিঠুকে মারবে। কিন্তু ওই রাতে আমরা টাকা ম্যানেজ করতে পারেনি।
নতিপোতা ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড ভগিরথপুর গ্রামের ইকতার মেম্বার এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
দামুড়হুদা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর কবির জানান, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি রাতে ভ্যান চুরির অপরাধে স্থানীয়রা মিঠু মিয়া নামের এক ব্যক্তিকে গণধোলাই দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাকে আটক করে। পরদিন সকালে তাকে চুরির মামলায় আদালতে প্রেরণ করা হয়।