২০ নভেম্বর ২০২৫, ১১:৩১ অপরাহ্ন, ২৮শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি, বৃহস্পতিবার, ৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
খুলনা থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক ইমরান জামান কাজল।
গত ২০১৭ সালের ১৪ জানুয়ারি কেএমপি’র খুলনা সদর থানাধীন ৫৯ শেরে বাংলা রোড আমতলা এলাকায় একটি খুনসহ ডাকাতির ঘটনা সংঘঠিত হয়।
উক্ত ঘটনায় নিহত ভিকটিমের ভাই সুবোল বাইন (৩৬) ঘটনা সংক্রান্তে এজাহার দায়ের করলে অফিসার ইনচার্জ খুলনা থানার মামলা নং-১৩, তারিখ-১৬/০১/২০১৭ খ্রিঃ, ধারা-৩৯৬ পেনাল কোড রুজু করেন।
উক্ত মামলাটির তদন্ত শেষে তদন্তাকারী কর্মকর্তা এসআই মোঃ কামাল উদ্দীন আসামী রাজু মুন্সি ওরফে গালকাটা রাজু(২৪), পিতা-মোঃ ইকরাম মুন্সি, সাং-পাচকাহুনিয়া, থানা-কালিয়া, জেলা-নড়াইল, এ/পি সাং-শেরে বাংলা রোড, আমতলা গফ্ফারের বাড়ীর ভাড়াটিয়া, থানা-খুলনা সদর, খুলনা মহানগরীসহ ছয় জনের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগপত্র নং-৪২১, তাং-১২/১০/২০১৭ খ্রিঃ দাখিল করেন।
বিজ্ঞ বিশেষ দায়রা জজ আদালতের বিচারক (জেলা জজ) জন নিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল, খুলনা সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে বিচারিক কার্যক্রম শেষে চার্জশীটভূক্ত আসামী রাজু মুন্সি ওরফে গালকাটা রাজুকে মৃত্যুদন্ডের আদেশ প্রদান করেন।
বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিলের পর সে জামিনে মুক্তি পায় তারপর থেকে উক্ত আসামী অদ্যবধি পলাতক ছিলেন।
গ্রেফতার এড়াতে সে ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানাধীন সাধুর মার্কেটে ছদ্মবেশে রং মিস্ত্রি ও মাটি কাটার শ্রমিক হিসেবে কাজ করতো এবং জনৈক সুমির টিন শেডের বাড়ীতে ভাড়াটিয়া হিসেবে তার স্ত্রী মলি ও চার সন্তান নিয়ে বসবাস করতো।
আসামী রাজু মুন্সি ওরফে গালকাটা রাজু পেশাদার ও সক্রিয় ডাকাত চক্রের সদস্য হিসেবে কাজের ফাঁকে ফাঁকে বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতি কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলো।
গত ২৪ ঘন্টায় খুলনা থানা পুলিশের একটি চৌকস টিম র্যাব-৬ এর সহায়তায় ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানাধীন সাধুর মার্কেট এলাকা হতে আসামী রাজু মুন্সি ওরফে গালকাটা রাজু (২৪), পিতা-মোঃ ইকরাম মুন্সি, সাং-পাচকাহুনিয়া, থানা-কালিয়া, জেলা-নড়াইল, এ/পি সাং-শেরে বাংলা রোড, আমতলা গফ্ফারের বাড়ীর ভাড়াটিয়া, থানা-খুলনা সদর, খুলনা মহানগরীকে গ্রেফতার করে।
উল্লেখ্য যে, অত্র মামলার ভিকটিম মৃত: চিত্তরঞ্জন বাইন কৈয়া শহীদ আবুল কাশেম স্মৃতি মহাবিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের প্রভাষক ছিলেন।
উক্ত ঘটনার দিন আসামী রাজু মুন্সি ওরফে গালকাটা রাজু অন্যান্য আসামীদের নিয়ে জনালার গ্রীল কেটে ভিকটিম চিত্তরঞ্জনের বাড়ীতে প্রবেশ করে এবং ভিকটিমের মুখের ভিতর অন্তর্বাস ঢুকিয়ে দিয়ে মুখ গামছা দিয়ে বেধে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।
ভিকটিমের ঘরে থাকা স্বর্ণালঙ্কারসহ অনুমান ২,০০,০০০/-(দুই লক্ষ) টাকা লুট করে নিয়ে চলে যায়।
এই ঘটনায় রুজুকৃত মামলায় তদন্তাকালীন সময়ে গ্রেফতার হয়ে আসামী রাজু মুন্সি ওরফে গালকাটা রাজু সহ অন্যান্য আসামীরা অপরাধ স্বীকার করে বিজ্ঞ আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেন।
পরবর্তীতে বিচারিক কার্যক্রম শেষে বিজ্ঞ আদালত আসামী রাজু মুন্সি ওরফে গালকাটা রাজুকে মৃত্যুদন্ডের আদেশ প্রদান করেন। গ্রেফতারকৃত মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামী রাজু মুন্সি ওরফে গালকাটা রাজু এই মামলা ছাড়াও একাধিক ফৌজদারি মামলার আসামী।
খুনসহ ডাকাতি মামলার ঘটনার মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামী রাজু মুন্সি ওরফে গালকাটা রাজু গ্রেফতার হওয়ায় এলাবাসী স্বস্তির নিশ্বাঃস ফেলছে।
খুলনা থানা ও র্যাব-৬ কর্তৃক নিহত ইংরেজী প্রভাষক চিত্তরঞ্জন বাইনের হত্যাকারী মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামী রাজু মুন্সি ওরফে গালকাটা রাজুকে গ্রেফতার করায় তার পরিবার খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।