২১ নভেম্বর ২০২৫, ০১:০৯ অপরাহ্ন, ২৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি, শুক্রবার, ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শফিকুল ইসলাম দিনাজপুর জেলা প্রতিনিধি : দ্বিগুণ লাভের আশায় দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার বেশকিছু কৃষক গরমের মধ্যেই শীতকালীন সবজি চাষ করেন প্রতি বছর। যদিও এবার সারা বছরই সবজির বাজার চড়া। আর চড়া বাজারে আরও বেশি লাভের আশায় বৃষ্টিহীন আবহাওয়ার উতপ্ত গরমে দিনে সন্ধ্যা পর্যন্ত পরিশ্রম করছেন সবার আগে শীতের সবজি বাজারে তুলতে। উপজেলার মাহমুদপুর, হাবিবপুর, দয়েরপাড়, হরিদাশপুর, ভেলারপাড়, চকদূর্গা, মুকুন্দপুর, জগদীশপুর, পটুয়াকোল, কাটলা,পলিখাঁপুর, পলিপ্রয়াগপুর, এলাকার কৃষকেরা শীতকালীন সবজি যেমন- মুলা, বেগুন, ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো, সিম, লালশাক, পালংশাক, শীত নামার আগেই বাজারে নিয়ে আসে। এ ছাড়াও সবজি ও চারার জন্য বিখ্যাত এই সকল এলাকার কৃষকরা শীতকালীন ও গ্রীস্মকালীন সবজি ও চারা চাষ করে সরবরাহ করেন আশপাশের জেলা ও উপজেলাতে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, বিরামপুরে প্রতিবছর শীতকালীন সবজির ভালো চাষ হয়ে থাকে। এবছর বৃষ্টি না হওয়ায় চারা ভাল হয়েছে । শীত আসার এখনও দেরি থাকলেও এখনই সবজি চাষীরা আগাম সবজি চাষ শুরু করে দিয়েছেন। এ বছর উপজেলায় ১১৬ হেক্টর জমিতে শীতকালীন আগাম সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে এবং এর বিপরীতে ফলন ধরা হয়েছে ১০০ হাজার মেট্রিকটন।
বিরামপুরের সবজি চাষের জন্য বিখ্যাত মাহমুদ এলাকার কৃষক রেজাউল করিম প্রতিবছর আগাম সবজি চাষ করেন। এবছরও ২ বিঘা জমিতে আগাম ফুল কপি লাগিছেন। দিনরাত পরিচর্যা করছেন। ফুলকপি পরিপূর্ণ হতে আরও বেশ কিছুদিন সময় লাগবে । তিনি আরও জানান, আগাম সবজি চাষ কষ্টসাধ্য হলেও দ্বিগুন লাভ হয়। তিনি এবার তিন টাকা দরে চারা কিনে রোপন করেছেন । প্রতিবিঘা জমিতে সবজি চাষের জন্য খরচ হয় ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা। খরার জন্য ফলন হতে একটু দেরি হলেও ভাল লাভ হবে বলে জানান এই কৃষক ।
উপজেলার মুকুন্দপুর ইউনিয়নের পটুয়াকোল গ্রামের কৃষক কামরুজ্জামান জানান, তিনি প্রত্যেক শীতে তিনবার শীতকালীন সবজি চাষ করেন । চারা থেকে বাজারে তোলার উপযোগী ফুলকপি চাষ করতে ২ মাস সময় লাগে। তিনি ইতোমধ্যে ১০ শতক জমির ফুলকপি ৩২শ’ টাকা মন দরে বিক্রিও করেছেন। এখন আবারও ২০ শতক জমির ফুলকপি রেডি হচ্ছে বাজারে যাওয়ার জন্য । শীতকালীন সবজি যার যত বেশি আগে আসবে সে তত লাভবান হবেন ।
কথা হয় কাটলা এলাকার নারী কৃষক সুলতানার জানান, প্রতিবছর শীতকালীন সবজি গরমের মধ্যে চাষ করে বেশ আয় করে থাকে। তিনি তাঁর জমিতে টমেটো, কপি, মরিচ, বাঁধাকপি, বেগুন রোপন করে পরিচর্যা করে যাচ্ছেন নিয়মিত, আবহাওয়া ভাল থাকলে শীতকালীন সবজি বাজারে তুলতে পারবেন আগামী মাসের শেষের দিকে।
বিরামপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফিরোজ আহমেদ বলেন, অনেক কৃষক বেশি লাভের আশায় আগাম সবজি চাষ করেন । এখন এই উপজেলাতে যে সবজি চাষ হচ্ছে তা রবি মৌসুম শুরুর আগেই করে থাকে কৃষকরা । এই সবজি চাষে ফলনও ভাল হয়। সাধারণত কার্তিক মাসে শীতকালীন সবজির চাষ শুরু হয়। এবছর ১১৬ হেক্টর জমিতে আগাম শীতকালীন সবজি চাষের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে। তবে স্থানীয় ভাবে আবাদকৃত এসব সবজি বাজারে উঠতেও শুরু করেছে।