২১ নভেম্বর ২০২৫, ০৮:৫৪ অপরাহ্ন, ২৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি, শুক্রবার, ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) প্রতিনিধিঃ স্থলবন্দর শুল্ক বিভাগ বিদেশী মালামাল আমদানী-রপ্তানী ক্ষেত্রে শুল্ককর বৃদ্ধি করায় বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে পাথর রপ্তানি বন্ধ রেখেছে ব্যবসায়ীরা।
জানাযায়, বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর সহ অন্যান্য স্থলবন্দরে অবস্থিত বাংলাদেশ শুল্ক বিভাগ কর্তৃপক্ষ বিদেশী পণ্য আমদানীতে প্রতি টনে পুর্বের নির্ধারিত এসএস মেন্ট ১২ ডলারের পরিবর্তে বর্তমানে ১৩ ডলার করেছে। বাড়তি শুল্ককর প্রত্যাহারের দাবীতে ১ আগস্ট থেকে উভয় দেশের আমদানী-রপ্তানিকারক ব্যবসায়ীরা পাথর দেয়া বন্ধ করেছে। ফলে সপ্তাহ ধরে বাংলাবান্ধা, বুড়িমাড়ি, ভেমরা, সোনা মসজিদ ও হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের পাথর আমদানী বন্ধ রয়েছে। সপ্তাহ ধরে ভারতের কোন মালামাল বন্দরে প্রবেশ না করায় বর্তমানে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর ইয়ার্ডে শুনসান অবস্থা বিরাজ করছে। ভারতের ব্যবসায়ীদের বরাদ দিয়ে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের পাথর ব্যবসায়ী ও সিএন্ডএফ এজেন্টরা জানান বাংলাদেশ কাস্টমস বিদেশী পণ্য আমদানীর ক্ষেতে প্রতি টনে ১৩ ডলার নির্ধারণ করায় ব্যবসায়ীদের পুর্বের তুলনায় ৫০ টাকা হারে বেশি রাজস্ব দিতে হবে। এই হারে রাজস্ব বাড়ার কারণে ব্যবসায়ীদের লোকসান গুণতে হবে। ফলে ব্যবসায়ীরা বাড়তি শুল্ক হার প্রত্যাহারে দাবীতে পণ্য রপ্তানী বন্ধ করে দেয়।
এর আগে ভারতের ফুলবাড়ি স্থলবন্দর ট্রাক ওনার্স সমিতি আগে ভুটানের পাথর বোঝাই ট্রাকে শুধু মাত্র রুট টেক্স নিচ্ছে। কিন্তু বর্তমানে পণ্য পারাপার চার্জ ফি বাবদ ভুটানের পাথর বোঝাই দশ চাকার ট্রাকে ৫ হাজার এবং ছয় চাকার ট্রাকে ৩ হাজার টাকা অতিরিক্ত চাঁদা দাবি ভারতের ফুলবাড়ি বন্দরে ব্যবসায়ীরা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। ফলে ভারতীয় ট্রাকগুলোতে এ হারে টাকা আদায় না করায় ফুলবাড়ি স্থলবন্দর ট্রাক অনার্স সমিতির সঙ্গে ব্যবসায়ীরা দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে। ফলে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে ১১ জুলাই থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত আমদানী-রপ্তানি বন্ধ ছিল। এসময়ে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে ভারত, নেপাল ও ভুটানের কোন পণ্যবাহী ট্রাক বন্দরে ঢুকেনি। পরবর্তীতে উক্ত দ্বন্দ্ব মিমাংসার প্রায় ১৪ দিন পর ২৩ জুলাই সকাল থেকে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে ভারতের সঙ্গে আমদানী-রপ্তানী শুরু হয়ে সপ্তাহ খানেক চলার পর ফের আমদানী-রপ্তানী বন্ধ হয়ে যায়। তবে ইমিগ্রেশন কার্যক্রম অব্যাহত আছে।
সিএন্ডএফ এজেন্ট জাহাঙ্গীর আলম জানান, শুল্ক কর বৃদ্ধির কারণে ভারতীয় পাথর এবং স্লট ফি বৃদ্ধির কারণে ভুটানের পাথর বন্ধ রয়েছে। ব্যবসায়ীদের রাজস্ব ফি বৃদ্ধির কারণে আমাদের পাথর আমদানীতে লোকসানের মুখে পড়তে হবে। তাই বাড়তি ১ ডলার এসএসমেন্ট প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত ভারত-বাংলাদেশ উভয় দেশের ব্যবসায়ীরা পাথর আমদানী-রপ্তানী বন্ধ রেখেছে।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর আমদানি রপ্তানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান কুদরত-ই খুদা মিলন জানান, অতিসম্প্রতি শুল্ক বিভাগ এসএস মেন্ট কর ১ ডলার বাড়ানোর কারণে উভয় দেশের ব্যবসায়ীরা পাথর আমদানী-রপ্তানী বন্ধ রেখেছে। এভাবে চলতে থাকলে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে ব্যবসা কার্যক্রম মুখ থুপড়ে পড়বে। কিছু দিন আগে ফুলবাড়ি ট্রাক অনার্স এসোসিয়েশন ও ভারত-ভুটানের ব্যাবসায়ীদের মালামাল পারাপারে চার্জ ফি নিয়ে ভারতের ব্যবসায়ীদের দ্বন্দ্বে আমদানী-রপ্তানী প্রায় ১৪ দিন বন্ধ ছিল।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা ইমরুল হোসেন পাটওয়ারী জানান, বাংলাদেশ এনবিআরের পরিপত্র অনুযায়ী বিদেশ থেকে পাথর আমদানীর ক্ষেত্রে পূর্বের ১২ ডলার এসএসমেন্ট এর পরিবর্তে বর্তমানে প্রতিটনে এসএসমেন্ট ১৩ ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। এই শুল্ককর বাস্তবায়নের জন্য এ বন্দরের ব্যবসায়ী ও সিএন্ডএফদের পত্র দেয়া হয়েছে। তবে কী কারণে ব্যবসায়ীরা পাথর আমদানী বন্ধ করে তা আমার জানা নেই।