২১ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:০৬ অপরাহ্ন, ২৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি, শুক্রবার, ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নোটিশ
জরুরী ভিত্তিতে কিছুসংখ্যক জেলা-উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া হবে যোগাযোগ- ০১৭১২৫৭৩৯৭৮
সর্বশেষ সংবাদ :
ছারছীনার পীর সাহেব হুজুরের বরিশাল আগমন উপলক্ষে আগামীকাল শনিবার ঈছালে ছওয়াব ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায় উদ্ধার হওয়া তিনটি তক্ষক বনায়ন ও নার্সারি এবং প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের বাগানে অবমুক্ত ফাতেমা জোহরা আদিবার আন্তর্জাতিক সাফল্য; অস্ট্রেলিয়ার নিবন্ধিত আর্কিটেক্ট স্ত্রীকে নির্যাতনের মামলায় বরগুনার শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রবিউল হত্যা মামলায় নিরপরাধদের জড়ানোর অভিযোগে বাবুগঞ্জে বিএনপি’র একাংশের সংবাদ সম্মেলন বাবুগঞ্জের ছাত্রদল নেতার খুনিদের গ্রেপ্তার পরবর্তী দৃষ্টান্ত ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ চুয়াডাঙ্গায় ৩ তক্ষকসহ গ্রেফতার ১জন বাবুগঞ্জ এলজিইডি’র এলসিএস কমিউনিটি অর্গানাইজার সানজিদার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার ও হয়রানির অভিযোগ জোটের চাপ নাকি অভ্যন্তরীণ কোন্দল? বরিশাল -৩ আসনে এখনো প্রার্থী চূড়ান্ত করতে পারেনি বিএনপি। ভোটারদের মাঝে ‘ভিআইপি চমক’-এর গুঞ্জন বাবুগঞ্জে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ক্রীড়া সামগ্রী বিতরণ
১২ বছর আগের হত্যা মামলা: বামনার ইউপি চেয়ারম্যান সাময়িক বরখাস্ত

১২ বছর আগের হত্যা মামলা: বামনার ইউপি চেয়ারম্যান সাময়িক বরখাস্ত

আজকের ক্রাইম ডেক্স: বরগুনার বামনা উপজেলার বুকাবুনিয়া ইউনিয়নের শিংড়াবুনিয়া গ্রামে ১২ বছর পূর্বে এক মানসিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে চোর সন্দেহে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় মামলার প্রধান আসামি ওই ইউনিয়নের তৎকালীন ও বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান সবুজকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের ইউনিয়ন পরিষদ-১ শাখা।

গত ২ আগস্ট সিনিয়র সহকারী সচিব জেসমিন প্রধানের স্বাক্ষরিত একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে তার সাময়িক বরখাস্তের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। এ ছাড়াও একই কর্মকর্তার স্বাক্ষরিত আরেকটি চিঠিতে কেন তাকে চূড়ান্তভাবে অপসারণ করা হবে না জানতে চেয়ে কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

চেয়ারম্যানকে আগামী ১০ দিনের মধ্যে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে চিঠির জবাব দিতে বলা হয়। এর আগে গত বছর ১১ সেপ্টেম্বর বুকাবুনিয়া ইউনিয়নের বড় তালেশ্বর গ্রামের জনৈক মো. লিটন মোল্লা স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব বরাবর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় চেয়ারম্যানের একার সম্পৃক্ততা এবং সিআইডির তদন্তে তিনিই প্রধান আসামি উল্লেখ করে তার অপসারণ দাবি জানিয়ে একটি আবেদন করেন।

ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ ইউনিয়ন পরিষদ-১ শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব জেসমিন প্রধানের গত বছর ২ নভেম্বর স্বাক্ষরকৃত একটি পত্রে বরগুনা জেলা প্রশাসকে তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে মন্ত্রণালয়কে জানানোর অনুরোধ করা হয়।

প্রতিবন্ধীকে চোর সন্দেহে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় সরাসরি চেয়ারম্যানের সম্পৃক্ততা ও মামলায় প্রধান আসামি তিনি হওয়ায় বরগুনা জেলা প্রশাসক তাকে অপসারণের জন্য সুপারিশ করে মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠান।

মন্ত্রণালয় জেলা প্রশাসকের সুপারিশের প্রেক্ষিতে ২ আগস্ট তাকে সাময়িক বরখাস্তের প্রজ্ঞাপন জারি করে। ২০১২ সালে ২২ মার্চ বামনা উপজেলার বুকাবুনিয়া ইউনিয়নের শিংড়াবুনিয়া গ্রামে মানসিক প্রতিবন্ধী মো. হাবিবুর রহমান সিকদার নামে এক ব্যক্তিকে চোর সন্দেহে আটক করে গ্রামবাসী।

বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী ওই ব্যক্তিকে মারধর করেন। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে সিগারেটের ছ্যাঁকা দেন। এমনকি তার পুরুষাঙ্গেও আঘাত করা হয়। পরে তাকে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে যান তারা।

মামলার সূত্রে জানা যায়, ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে আসার পর চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান সবুজ ও তার সহযোগীরা মুমূর্ষু ওই প্রতিবন্ধীকে পুনরায় বেধড়ক পেটান।পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

তবে গত তিনবারের নির্বাচিত বুকাবুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের বরখাস্তের খবরে অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ঘটনার সাথে প্রথম থেকে চেয়ারম্যান জড়িত ছিলেন না, এমনকি তাকে তার প্রতিপক্ষরা এই মামলায় জড়িয়েছেন এমন দাবিও করেন অনেকে।

বামনা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সৈয়দ মানজুরুর রব মুর্তাযা আহসান বলেন, ২০১২ সালে এই ঘটনার সময় চেয়ারম্যান আমার সাথে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসায় তার মেয়ের জন্মদিনে ছিলেন।

তখন তাকে ফোনে বিষয়টি জানালে তিনি চলে যান। তিনি চলে যাওয়ার আগেই গ্রামবাসী তাকে গণপিটুনি দেয়। এদিকে, ওই হত্যাকাণ্ডের ২ নম্বর আসামি বর্তমান ইউপি সদস্য সামিউল আলম রুস্তুমকে কেন বহিষ্কারের জন্য কেউ মন্ত্রণালয়ে আবেদন করলেন না, এর পেছনে চেয়ারম্যানের প্রতিপক্ষের ইন্ধন রয়েছে দাবি করে উপজেলা উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের আহ্বায়ক দুলাল আকন বলেন, চেয়ারম্যানকে বরখাস্তের জন্য আবেদনকারী মো. লিটন মোল্লা ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে তার কাছে হেরেছেন। ওই ক্ষোভ থেকে তিনি তার অপসারণ চেয়ে আবেদন করেন।

তবে একই মামলায় ২ নম্বর আসামি তিনিও বর্তমান ইউপি সদস্য। অথচ তার অপসারণ তিনি চাননি। এতে আমরা বুঝতে পারি এটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তবে এই হত্যাকাণ্ডের সাথে ইউপি চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান সবুজ জড়িত ছিলেন না দাবি করে তিনি জানান, যখন শিংড়াবুনিয়া থেকে আমি খবর পাই একজনকে চোর সন্দেহে আটক করা হয়েছে, তখন আমি বামনা সদরে একটি জন্মদিনের অনুষ্ঠানে ছিলাম।

আমাকে যারা সংবাদটি জানিয়েছিলেন, তাদেরকে তখনই আমি বলেছি যাতে তার ওপর কেউ আঘাত না করে। আমি বুকাবুনিয়া পরিষদে আসার পরে স্থানীয়রা আমার কাছে তাকে নিয়ে আসেন। ততক্ষণে গ্রামবাসীর গণপিটুনিতে তার অবস্থা সংকটাপন্ন হয়েছে।

আমি পুলিশকে খবর দিলে তারা এসে তাকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানেই তিনি মারা যান। আমি তার গায়ে হাত দিইনি। অথচ রাজনৈতিক শত্রুদের পরামর্শে আমাকেই প্রধান আসামি করা হয়েছে। এ ব্যাপারে বামনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অন্তরা হালদার বলেন, চেয়ারম্যানের সাময়িক বরখাস্তের প্রজ্ঞাপন পেয়েছি।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2019