২১ নভেম্বর ২০২৫, ০৫:১৫ অপরাহ্ন, ২৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি, শুক্রবার, ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
অনলাইন ডেস্ক
কমিয়ে আনা হয়েছে করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকার বুস্টার ডোজ দেওয়ার সময়সীমা। আগে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার ছয় মাস পর বুস্টার ডোজ দেওয়ার নিয়ম থাকলেও সেটি কমিয়ে এনে চার মাস করা হয়েছে। আগামী ১৭ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত বিশেষ কর্মসূচির আওতায় ৩ কোটি ২৫ লাখ ডোজ টিকা দেওয়া হবে, সেদিন থেকেই এই নিয়ম কার্যকর হবে।
বুধবার (১৬ মার্চ) সকালে স্বাস্থ্য অধিদফতরের সম্মেলন কক্ষে ২৬তম জাতীয় কৃমি নিয়ন্ত্রণ সপ্তাহ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অবহিতকরণ সভায় এসব কথা জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
জাহিদ মালেক বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন (১৭ মার্চ) উপলক্ষে এ কার্যক্রম হাতে নেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, ১৭ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত আমরা টিকা দেওয়ার বিশেষ কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। এই কার্যক্রমের মাধ্যমে ৩ কোটি ২৫ লাখ ডোজ দেওয়া হবে। এর মধ্যে দুই কোটি ডোজ দেওয়া হবে দ্বিতীয় ডোজ হিসেবে। বাকিটা প্রথম ও বুস্টার ডোজ হিসেবে দেওয়া হবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আগে বুস্টার ডোজ দেওয়ার সময়সীমা ছিল ৬ মাস। কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, ছয় মাস লাগবে না, চার মাস পরেই দেওয়া যাবে। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী, আমরাও সময়সীমা কমিয়ে এনেছি। ইতোমধ্যে যারা টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন, আমরা তাদের আহ্বান করবো, যাদের চার মাস বা তার বেশি সময় পার হয়ে গেছে, তারা বুস্টার ডোজ নিতে টিকা কেন্দ্রে আসুন এবং টিকা নিন।
বুস্টার ডোজের জন্য আগের নিয়মেই মোবাইলে এসএমএস যাবে। কেউ যদি এসএমএস নাও পায় তাহলে সে আসলে টিকা দেওয়া হবে, বলেন জাহিদ মাালেক।
তিনি জানান, ইতোমধ্যে দেশে ১২ কোটি ৬২ লাখ প্রথম ডোজ, ৯ কোটি ৪ লাখ দ্বিতীয় ডোজ এবং ৫০ লাখ বুস্টার ডোজ দেওয়া হয়েছে। সবমিলিয়ে আমাদের ২২ কোটির বেশি টিকা দেওয়া হয়েছে। দেশে টিকার কোনও অভাব নেই। ৮ কোটির বেশি টিকা মজুত আছে।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের টিকার আওতায় আনা হবে কিনা জানতে চাইলে জাহিদ মালেক বলেন, এ বিষয়ে আমাদের সব প্রস্তুতি আছে। আমরা আছি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনার অপেক্ষায়।
কৃমিনাশক ট্যাবলেট পাচ্ছে প্রায় ৪ কোটি শিশু
কৃমি থেকে শিশুদের সুরক্ষায় ও সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আগামী ২০ মার্চ থেকে শুরু হচ্ছে জাতীয় কৃমি নিয়ন্ত্রণ সপ্তাহ-২০২২। এবারে প্রায় ৪ কোটি শিশুকে খাওয়ানো হবে কৃমিনাশক ট্যাবলেট।
এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক। সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব লোকমান হোসেন মিয়া।
২৬তম এই সপ্তাহব্যাপী ক্যাম্পেইনে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সমপর্যায়ের মাদ্রাসা, মক্তব ও এতিমখানাসমূহে ৫ থেকে ১৬ বছর বয়সী সব শিক্ষার্থী এবং স্কুলবহির্ভূত, ঝরে পড়া, পথশিশু ও শ্রমজীবী শিশুদের খুদে ডাক্তারদের মাধ্যমে বিনা মূল্যে কৃমিনাশক ট্যাবলেট খাওয়ানো হবে।
আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে কৃমি নির্মূলের লক্ষ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার ফাইলেরিয়াসিস নির্মূল কর্মসূচি, কৃমি নিয়ন্ত্রণ ও খুদে ডাক্তার কার্যক্রমের আওতায় এই কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, কৃমির সংক্রমণ বয়স্ক মানুষের চেয়ে শিশুদের মধ্যেই সবচেয়ে বেশি। শূন্য থেকে ৪ বছর বয়সী শিশুর মধ্যে ৭ শতাংশ, ৫-১৪ বছরে ৩২ শতাংশ, ১৫-২৪ বছরে ১৫ শতাংশ, ২৫-৪৪ বছরে ৭ শতাংশ, ৪৫-৫৪ বছরে ৫ শতাংশ, এবং ৫৫ বছরের অধিক বয়সী মানুষের মধ্যে ৪ শতাংশ।
এই জরিপের ওপর ভিত্তি করেই পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে শিশুদের মধ্যে এই কৃমি নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে এই কর্মসূচি ২০০৫ সালে প্রথম তিন জেলায় নেওয়া হয়। পর্যায়ক্রমে ২০০৭ সালের জুন পর্যন্ত ১৬ জেলায়, ২০০৮ সালের মে মাস পর্যন্ত ২৪ জেলায় এবং একই বছরের নভেম্বর থেকে দেশের সব জেলায় কার্যক্রমটি সম্প্রসারিত করা হয়।
শুরুতে এই কর্মসূচি শুধু প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৬-১২ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে সীমিত রেখে চালু করা হয়। কারণ সমাজের ৬-১২ বছর বয়সী অধিকসংখ্যক শিশুর উপস্থিতি প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সহজেই নিশ্চিত করা যায়। আর তাই প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যেমন সরকারি, বেসরকারি, রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়, কিন্ডারগার্টেন, মক্তব, মাদ্রাসা ও এনজিও পরিচালিত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে খুব সহজেই অধিকসংখ্যক শিশুকে কৃমি নিয়ন্ত্রণ বড়ি সেবন করানো যায়।
পরবর্তীতে লক্ষ করা যায় যে, ৫ বছর বয়সী অনেক শিশুই বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়ে যায় আর তাই নভেম্বর ২০১০ সাল থেকে এই কর্মসূচিতে ৫ বছর বয়সী শিশুদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়।