২২ নভেম্বর ২০২৫, ০৬:১৫ পূর্বাহ্ন, ৩০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি, শনিবার, ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
আজকের ক্রাইম ডেক্স:: অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে টাকার পাহাড় গড়েছেন বিএনপির নেতা আহসানুল হক বাহার। চট্টগ্রামের হালিশহর বিএনপির সাবেক এ সাংগঠনিক সম্পাদক বর্তমানে কক্সবাজার শেখ কামাল আর্ন্তজাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ভেন্যু ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বিএনপি চেয়ারপারসন লোকমান হোসেন ভূঁইয়ার আপন ভাগনে।
জানা গেছে, মামার হাত ধরেই বিএনপির রাজনীতিতে আসেন বাহার। এরপর শুরু করেন বিদ্যুতের তার চুরিসহ বিভিন্ন অনিয়ম। ২০১৪ সালে লোকমান হোসেন ভূঁইয়ার ক্ষমতার দাপটে কক্সবাজার শেখ কামাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ভেন্যু ম্যানেজারের চাকরি পান তিনি। এরপরই আঙুল ফুলে কলাগাছ হয় তার। নিজের লোকের মাধ্যমে স্টেডিয়াম সংস্কার, প্রয়োজনীয় জিনিস কেনাকাটা থেকে শুরু করে ছোট-বড় টেন্ডার পাস করিয়ে হাতিয়ে নিয়েছেন বিপুল অর্থ। ছয় বছরে কক্সবাজার শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের কোনো উন্নয়ন না করলেও দুর্নীতির মাধ্যমে নিজে টাকার পাহাড়ে উঠে বসেছেন আহসানুল হক বাহার।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চট্টগ্রামের হালিশহর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক থাকাকালীন বিদ্যুতের তার চুরিসহ কয়েকটি মামলা হয়েছে আহসানুল হক বাহারের বিরুদ্ধে। টাকা ও ক্ষমতার জোরে অতীতের সব অপকর্ম ও মামলা চাপা দিয়ে বর্তমানে কক্সবাজার স্টেডিয়ামে দুর্নীতির জাল পেতেছেন তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কক্সবাজার শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের এক কর্মচারী বলেন, সেখানে বিসিবি থেকে দেয়া সব বাজেট নিজের হাতে রাখেন ভেন্যু ইনচার্জ আহসানুল হক বাহার। ইচ্ছেমতো ঠিকাদার নিয়োগ করে কাজ করান। নোয়াখালী-চট্টগ্রাম থেকে নিজের লোক এনে ছোটখাট সংস্কার কাজ করান। খাবারের জন্য বাজেট দেয়া হয়, কিন্তু সেই টাকা নিজের পকেটে ঢোকান তিনি। আবার কোনো কাজে ১০ জন শ্রমিক নিয়োগ করলে, সেখানে ৩০ জন দেখিয়ে বিল পাস করান। ছয় বছরে শুধুমাত্র খাবার বাবদ কয়েক লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন আহসানুল হক বাহার।
কক্সবাজার জেলা ক্রীড়া সংস্থার এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, বাহারকে আমরা কক্সবাজার স্টেডিয়ামের সবকিছুর নিয়ন্ত্রক হিসেবেই চিনি। তিনি আপন মামা লোকমান হোসেন ভূঁইয়ার ক্ষমতা বলে স্টেডিয়ামের সব টেন্ডার ও বাজেট নিজের নামে পাস করিয়ে নেন। গত কয়েক বছরে কোটি টাকার মালিক হয়েছেন আহসানুল হক বাহার। সুষ্ঠু তদন্ত করলে সবকিছু বেরিয়ে আসবে।
কক্সবাজার ক্রীড়া লেখক সমিতির সাবেক সভাপতি এমআর মাহবুব বলেন, ২০১৪ সালে ২৩ ফেব্রুয়ারি শেখ কামাল আর্ন্তজাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের যাত্রা শুরু হয়। ছয় বছরে স্টেডিয়ামের দৃশ্যমান কোনো উন্নয়ন করেননি আহসানুল হক বাহার, উল্টো দুর্নীতি করে নিজে আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়েছেন। শুধুমাত্র উন্নয়ন না হওয়ায় এত বছরেও এ স্টেডিয়ামে বড় কোনো আর্ন্তজাতিক ইভেন্ট হয়নি।
এ বিষয়ে কক্সবাজার শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ভেন্যু ইনচার্জ ও বিএনপি নেতা আহসানুল হক বাহার বলেন, স্টেডিয়ামের যাত্রা শুরুর দিন থেকেই আমি ভেন্যু ইনচার্জের দায়িত্ব পালন করছি। এখন পর্যন্ত কোনো অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে জড়াইনি। এখানে বাজেট পাস করা, কাজ বাস্তবায়ন- সবই বিসিবি করে। আমি শুধু স্টেডিয়াম দেখভাল করি।
তিনি আরো বলেন, লোকমান হোসেন ভূঁইয়া আমার আপন মামা। তিনি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকলেও আমি কখনো রাজনীতিতে সম্পৃক্ত ছিলাম না। কোনো কমিটিতে আমার নাম থাকলেও সেটা আমি বলতে পারব না।