২২ নভেম্বর ২০২৫, ০৫:৪৪ পূর্বাহ্ন, ৩০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি, শনিবার, ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
আজকের ক্রাইম ডেক্স: নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার পিরিজকান্দি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের প্রায় ৬১ লক্ষ টাকা আতৎসাতের অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নে ১৯২৪ সালে স্থাপিত ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান । উলেখ্য গত ০৩ নভেম্বর তারিখে বিদ্যালয়ের অভিভাবকবৃন্দ নরসিংদী জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট লিখিত অভিযোগ করেন। উপজেলাধীন একটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত। অভিভাবক, শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রীদের মাধ্যমে প্রধান শিক্ষকের অনিয়ম ও দুর্নীতির কথা বহুদিন যাবৎ শুনিয়া আসছি বলে জানান স্হানীয় এলাকাবাসী। অভিযোগে উলেখ্য বিগত কয়েক বছর প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক সম্মিলিত বিদ্যালয়ের হিসাব নিরিক্ষণ করে আসছেন । উক্ত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কর্তৃক বিদ্যালয়ের ব্যাংক একাউন্টে টাকা জমা না করে নিজের ইচ্ছেমতো ব্যয় করে আসছিলো, যাতে প্রায় ৬১ লক্ষ টাকা আত্মসাতের প্রমান পাওয়া গেছে। যাহার কোনো ভাউচার নেই। বিগত ১০ বছর যাবৎ বিদ্যালয়ের নিয়মিত পরিচালনা কমিটি নেই এছাড়াও বিদ্যালয়ের ক্যাশ বই ও অন্যান্য রেজিস্টার ১০ বৎসর যাবৎ নিয়মিত সংরক্ষণ করা হয় না। বর্তমানে যে সকল বাউচার দেখানো হয়েছে তা অধিকাংশই অগ্রহণযোগ্য এবং রশিদ বিহীন প্রধান শিক্ষক কর্তৃক গৃহীত।
অভিযোগকারী অভিভাবক মো ছাদেক মিয়া বলেন, প্রধান শিক্ষক অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ ও হিসাবরক্ষক নিয়মিত বেতন ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় টাকা উত্তোলনের পর তিনি গ্রহণ ও প্রদান করতেন কোনো ভাউচার ছাড়াই। তাছাড়াও তিনি গত ১০বৎসর যাবৎ কোন স্কুল কমিটি তৈরির প্রয়োজনীয়তা বোধ না করে নিজের মনগড়া পরিচালনা করতো শুধু মাত্র টাকার অনৈতিকতার ও কুক্ষিগত করার জন্য।
অভিযোগকারি শামসুল ইসলাম কিরণ বলেন, প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে হিসাব চাইলে তিনি গড়িমশি করে আসছিলো কখনো কাউকে টাকার কোনো হিসাব বুঝাইনি বা বুঝতেও দেননি । আত্মসাতের অভিযোক্তকে অপসারণ সহ প্রশাসনিক উচ্চতর তদন্তের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করে স্কুলের সাভাবিক গতিধারা ফিরিয়ে আনার জোর দাবি করছি।
সাবেক চেয়ারম্যান ফাইজুর রহমান জানান,ঐতিহ্য বাহি বিদ্যালয়টি আজ প্রধান শিক্ষকের কারনে ধংষের পথে। উচ্চতর তদন্তের মাধ্যমে সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি
এব্যাপারে স্কুলের হিসাবরক্ষক সাধন চন্দ্র গোশ্বমী বলেন, হেড মাষ্টার পদাদিকার বলে সম্পাদক, আমি শুধো টাকা উত্তোলন করে উনাকে দেই উনি কোনো ভাউচার করেন না। আমি ২০১৪ সাল পর্যন্ত নিয়মিত হিসাবরক্ষক হিসাবে দায়িত্ব পালন করি। চাকরি ছাড়ার পর প্রধান শিক্ষকের আর্যিতে আমি পরবর্তীতে খন্ডকালিন হিসাবে স্কুলে কাজ করে আসছিলাম । আমার কাজ হিসাবে ক্লাস টিচারদের উত্তোলনকৃত টাকা গ্রহন করে তা প্রধান শিক্ষকের নিকট বুঝিয়ে দেয়া।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নারগিস সুলতানা বলেন, আমি এ ব্যাপারে অভিযোগ পেয়েছি আপাতত উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট সুপারিশ করা হয়েছে যেনো বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষকের বেতন-ভাতা বন্দ রাখার জন্য । প্রধান শিক্ষক হিসাবে পদাদিকার বলে সে আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দির্ঘদিন যাবৎ স্কুলে কোনো কমিটি গঠন করেননি উপরে মেনেজ করেই চলতো। তাকে কাজে ফোন দিলে পাওয়াই যেতোনা দায়িত্বের অবহেলা ও আমাকে এরিয়ে চলতো । তদন্ত একটা সময়ের ব্যাপার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ডিও স্যারের সাথে কথা হয়েছে সুষ্ঠ তদন্ত শেষে দোষিধের বিরোধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পেয়েছি এ বিষয়ে তদন্ত চলছে, তদন্ত শেষে দোষিদের বিরোদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
প্রধান শিক্ষক মো. আজহারুল ইসলামের কাছে এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, অর্থ কেলেঙ্কারির সাথে আমি জড়িত নয় আমাকে ফাঁসানোর জন্য করা হয়েছে। তবে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব আমার উপরেই বর্তায় তা আমি শিকার করি।
এব্যাপারে এলাকাবাসি ও অভিভাবকের দাবি প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ উচ্চতর সুষ্ঠ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করে দোষিদের বিরোদ্ধে স্বাস্তি মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ ও দ্রুত স্কুলের নিয়ম শৃংখলা ফিরিয়ে আনতে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন ।