২২ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:৩৭ পূর্বাহ্ন, ৩০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি, শনিবার, ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
তেতুলিয়া (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি ঃ বনবিভাগের উদাসীনতার কারণে ৩ বছরেও মিলেনি তেতুলিয়ায় উপকারভোগীদের গাছ বিক্রি লভ্যাংশের টাকা। উত্তোলণে হয়রাণীর শিকার হচ্ছে দীর্ঘদিন যাবৎ।
সামাজিক বনয়ন কর্মসূচির আওতায় সৃজিত তেতুলিয়া সদর ইউনিয়নের দর্জিপাড়া-কানকাটা হয়ে সারিয়ালজোত পর্যন্ত ২০০২-০৩ বছরে ১০ কি. স্ট্রিপ বাগানে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রোপন করা হয়। উক্ত গাছের লড ২১ মে/২০১৮ খ্রি. ২২৬২ নং স্মারকের দরপত্র বিজ্ঞপ্তি নং-৩৩ অনুযায়ী উম্মুক্ত টেন্ডারের মাধ্যমে নিলামে প্রায় ৩৮ লাখ টাকা বিক্রি হয়। লড বিক্রির অর্থ ৫৫ % উপকারভোগীর, ২৫% ইউনিয়ন পরিষদ, ১০% বনবিভাগ পাবেন। বাকি ১০% অর্থ দ্বারা পুনরায় নতুন স্ট্রিপ বাগান সৃজন কাজে ব্যয় করা হবে। কিন্তু গাছের লড বিক্রির প্রায় ৩ বছরের অধিক সময় অতিবাহিত হলেও উপকারভোগীরা এখনো তাদেও লভ্যাংশের টাকা পায়নি। এদিকে তেতুলিয়া বনবিট কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম উপকারভোগীদের কাছ থেকে কাঠব্যবসায়ী আক্কাস আলীর মাধ্যমে বনবিভাগের পঞ্চগড় অফিস ও দিনাজপুর অফিসে যাতায়াত, চা মিষ্টি খাওয়ানো এবং কাগজপত্র খরচাদির জন্য প্রত্যেক সদস্যদের কাছে ১২শত করে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গাছ বিক্রির লভ্যাংশের টাকা পাওয়া আশায় উপকারভোগীরা ধার-মাহাজন করে খরচের টাকা তাদেরকে দিয়েছে বলে জানান।
উপজেলা পরিবেশ ও বন উন্নয়ন কমিটির সভাপতির অফিস সূত্রে জানাযায়, সামাজিক বনায়ন বিধিমালা ২০০৪ এর মর্মানুযায়ী সামাজিক বনায়নের কার্যক্রমের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র স্থান নির্বাচন এবং উপকারভোগী মনোনয়ন ব্যতিত অন্য কোন কার্যক্রমের সাথে কোন সম্পৃত্তা নেই। ২০১৭-১৮ সালে বাগান নিলামে বিক্রয় করা হলেও বিক্রয়ের লভ্যাংশের অর্থ উপকারভোগীরা উত্তোলন করতে গিয়ে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার পাশাপাশি হয়রানির শিক্ষার হচ্ছে। এতে জনরোষ সৃষ্টিতে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির সমূহ সম্ভাবনা উল্লেখপুর্বক বিভাগীয় বন কর্মকর্তা, সামাজিক বন বিভাগ, দিনাজপুর এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জেলা প্রশাসক বরাবরে ৭ সেপ্টেম্বরপত্র দিয়ে অবহিত করেন। কিন্তু উপজেলা পরিবেশ ও বন উন্নয়ন কমিটির সদস্য সচিব, সহকারী বন সংরক্ষন এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে কোন প্রকার দাপ্তরিক যোগাযোগ/সমন্বয় করে নাই।
এব্যাপারে উপজেলা বনবিট কর্মকর্তা শহিদুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বিষয়টি দীর্ঘদিন যাবৎ এলোমেলো ভাবে রয়েছে আমি এখানে নতুন যোগদান করেই জানতে পারি এবং উপকারভোগিদের টাকা দ্রæত ফেরৎ দেয়ার জন্য কাজ করছি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোহাগ চন্দ্র সাহা বলেন, বন বিভাগের উদাসীনতা এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দপ্তরে কোন কাগজপত্র না থাকায় উপকারভোগীদের লভ্যাংশের টাকা পাচ্ছে না। মূল নথিপত্র যাচাই-বাছাই পুর্বক সঠিক উপকারভোগীদের ক্রস চেকের মাধ্যমে জরুরী ভিত্তিতে টাকা বিতরণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে পত্র দেয়া হয়েছে।
এব্যাপারে বিভাগীয় বন কমকর্তা, দিনাজপুর (ডিএফও) আব্দুর রহমানের যোগাযোগ করা হলে জানান, স্থানীয় বনবিট কর্মকর্তার প্রেরিত কাগজপত্রে উপকারভোগীদের নাম চুক্তিপত্রের সঙ্গে মিল না থাকায় পুনরায় কাগজপত্র ঠিক করার জন্য পাঠানো হয়েছে। ফলে উপকারভোগীরা লভ্যাংশের টাকা পাচ্ছে না।
জাবেদুর রহমান জাবেদ
তেতুলিয়া প্রতিনিধি