২১ নভেম্বর ২০২৫, ১২:০৫ অপরাহ্ন, ২৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি, শুক্রবার, ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
অনলাইন ডেস্ক
বুড়িগঙ্গা নদীতে ডুবে যাওয়া ‘মর্নিং বার্ড’ লঞ্চ থেকে ১৩ ঘণ্টা পর জীবিত উদ্ধার হওয়া সুমন বেপারির বক্তব্যকে অসংলগ্ন বলে মনে করছে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটি। তার বক্তব্যে ১৩ ঘণ্টা পর পানির নিচ থেকে বেঁচে আসার বিষয়টি স্পষ্ট হচ্ছে না বলেও জানিয়েছেন তারা। গতকাল নৌপথের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে। লঞ্চডুবির ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি সদরঘাটে বিআইডব্লিউটিএ কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাক্ষ্য নেয়।
এদিকে উদ্ধারের পর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরেছেন সুমন। সেখান থেকেই বুধবার তদন্ত কমিটির সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলেন তিনি। লঞ্চডুবিতে প্রাণহানির ঘটনায় এখন পর্যন্ত অভিযুক্তদের কেউ গ্রেফতার হননি। যদিও দুর্ঘটনার দিন ২৯ জুন ঘাতক লঞ্চটিকে জব্দ করা হয়েছে। ওই রাতেই এমভি ময়ূর-২ লঞ্চের মালিক ও মাস্টারসহ সাতজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৫/৬ জনের বিরুদ্ধে অবহেলাজনিত মৃত্যু ঘটানোর অভিযোগ এনে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় মামলা হয়। আসামিদের গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন নৌ পুলিশের ঢাকা অঞ্চলের পুলিশ সুপার (এসপি) ফরিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমাদের অভিযান চলছে।
ঢাকার বাইরেও অভিযান চালানো হচ্ছে। খুব দ্রুত দায়ীদের আইনের আওতায় আনা হবে।
তদন্ত-সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সুমনের বক্তব্য কমপক্ষে ৩০ মিনিট ধরে রেকর্ড করা হয়েছে। সুমন বলেছেন, তিনি লঞ্চে ঘুমিয়ে ছিলেন। ডুবে যাওয়ার বিষয়টি তার মনে পড়ছে না। উদ্ধারের পর সবকিছু জানতে পারেন। ভিতরে হাঁটুপানি ছিল। পুরো রুমটা অন্ধকার ছিল। তার জ্ঞান ছিল না। ডুবে যাওয়ার সময় তার পেটেও পানি চলে যায়
তদন্ত কমিটির প্রধান নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব রফিকুল ইসলাম উদ্ধার হওয়া সুমনের বক্তব্য নেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে সাংবাদিকদের বলেন, ১৩ ঘণ্টা ধরে ডুবে যাওয়া লঞ্চের ভিতরে তিনি কীভাবে থাকলেন, তার বক্তব্যে তা স্পষ্ট হয়নি। সংশ্লিষ্ট অনেকের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলে তার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
তদন্ত-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সুমন ইঞ্জিন রুমে আটকা পড়েছিলেন বলে দাবি করেছেন। একবার বলেছেন, ভিতরে অন্য কাউকে দেখেননি। পরক্ষণেই আবার বলেছেন, ভিতরে লাশ দেখা গেছে। তার বক্তব্য অসংলগ্ন মনে হয়েছে। তার আরও বক্তব্য নেওয়া হবে। তিনি কিছুটা অসুস্থ। সুস্থ হলে প্রয়োজনে সরাসরি কথা বলা হবে। তদন্ত কমিটির কাছে ঘুমিয়ে থাকার কথা বললেও উদ্ধারের পর সুমন গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, প্রথম দিকে পেটে একটু পানি প্রবেশ করলেও বাকি পুরো সময়টা নিরাপদে ছিলেন তিনি। সুমন আরও বলেছিলেন, আমি তো মনে করেছি ১০ মিনিট হয় আটকে আছি! পানির ওপর উঠে এসে শুনি ১৩ ঘণ্টা হয়েছে।
গত ২৯ জুন সকালে চাঁদপুরগামী ‘এমভি ময়ূর-২’ লঞ্চের ধাক্কায় শ্যামবাজার এলাকায় বুড়িগঙ্গা নদীতে ডুবে যায় মুন্সীগঞ্জের কাঠপট্টি থেকে অর্ধশতাধিক যাত্রী নিয়ে ঢাকার সদরঘাটের দিকে আসা যাত্রীবাহী লঞ্চ ‘এমভি মর্নিং বার্ড’। ওইদিন ৩২ জনের লাশ উদ্ধার হলেও পরদিন আরও দুজনের লাশ পাওয়া যায়।