২১ নভেম্বর ২০২৫, ০৭:৪৭ অপরাহ্ন, ২৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি, শুক্রবার, ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
গণচীনে নির্মিত বাংলাদেশ নৌবাহিনীর নতুন দুটি যুদ্ধ জাহাজ বানৌজা ওমর ফারুক ও বানৌজা আবু উবায়দাহ দেশে পৌঁছেছে।
বৃহস্পতিবার ( ৯ জানুয়ারী) সকাল ১১ টায় জাহাজ দুটি মংলা নেভাল জেটিতে পৌঁছলে খুলনা নৌ অঞ্চলের আঞ্চলিক কমান্ডার রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ মূসা,এনপিপি, আরসিডিএস, এএফডব্লিউসি, পিএসসি, বিএন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে জাহাজ দুটিকে স্বাগত জানান। এসময় নৌবাহিনীর উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা ও নাবিকরা উপস্থিত ছিলেন।
আধুনিক এ যুদ্ধ জাহাজ দুটির দৈর্ঘ্য ১১২ মিটার ও প্রস্থ ১২.৪ মিটার। জাহাজ দুটি ঘন্টায় ২৪ নটিক্যাল মাইল গতিতে চলতে সক্ষম। বিভিন্ন অাধুনিক যুদ্ধ সরন্জামে সুসজ্জিত জাহাজ দুটিতে রয়েছে আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন কামান, ভূমি থেকে আকাশে এবং ভূমি থেকে ভূমিতে উৎক্ষেপন ক্ষেপনাস্ত্র, অত্যাধুনিক সারভাইলেন্স র্যাডার, ফায়ার কন্ট্রোল সিস্টেম, সাবমেরিন বিধ্বংসী রকেট,র্যাডার জামিং সিস্টেমসহ বিভিন্ন ধরনের যুদ্ধ সরন্জামাদি। সার্বিকভাবে শত্রু বিমান, জাহাজ ও স্থাপনায় আঘাত হানার পূর্ণ ক্ষমতা রয়েছে এ জাহাজ দুটির। এছাড়াও হ্যালিকপ্টার অবতরণ ও উড্ডয়নের জন্য ডেক ল্যান্ডিং জাহাজে সমুদ্রে উদ্ধার তৎপরতা, সন্ত্রাস ও জলদস্যু দমন এবং চোরাচালান বিরোধী নানাবিধ অপারেশন পরিচালনার সক্ষমতা রয়েছে। জাহাজ দুটি দেশের জলসীমায় সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি দূর্যোগকালীন জরুরী উদ্ধার ও ত্রান তৎপরতা, অবৈধ মৎস্য নিধন, সমুদ্র ও উপকূলীয় এলাকায় মানব পাচার ও চোরাচালান প্রতিরোধ, জলদস্যুতা দমন, জেলেদের নিরাপত্তা বিধানসহ বর্তমান সরকারের ব্লু ইকোনমির বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
নতুন এ জাহাজ দুটি নৌবহরে অন্তর্ভূক্তির মাধ্যমে নৌবাহিনীর অপারেশনাল সক্ষমতা বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা যায়। উল্লেখ্য ফোর্সেস গোল ২০৩০ বাস্তবায়নের লক্ষে বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক আগ্রহ ও নির্দেশনায় সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়নে বহুমূখী পদক্ষেপের অংশ হিসেবে ইতিমধ্যে নৌবহরে যুক্ত হয়েছে আধুনিক প্রযুক্তি ও যুদ্ধ সরন্জামে সজ্জিত আধুনিক যুদ্ধ জাহাজ, সাবমেরিন, হেলিকপ্টার ও মেরিটাইম পেট্রোল এয়ারক্রাফট। নৌবাহিনীর আধুনিকায়ন ও নৌবহরের ত্রিমাত্রিক সক্ষমতা বৃদ্ধির অংশ হিসেবে নৌবাহিনীর জাহাজ “ওমর ফারুক ও আবু উবায়দাহ বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে সংযোজন করা হয়েছে। বানৌজা ওমর ফারুক জাহাজের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করছেন ক্যাপ্টেন এস এম আতিকুর রহমান, (জি) এনইউপি,পিএসসি,বিএন ও বানৌজা আবু উবায়দাহর অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করছেন ক্যাপ্টেন এম মইনুল চৌধুরী, (সি) এএফডব্লিউসি,পিএসসি, বিএন। চীনের সাংহাইয়ের সেনজিয়া শিপইয়ার্ড গত ১৮ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে জাহাজ দুটি বাংলাদেশ নৌবাহিনীর নিকট হস্তান্তর করে। গত ২৩ ডিসেম্বর জাহাজ দুটি গণচীনের সাংহাই বন্দর হতে যাত্রা শুরু করে “জানজিয়াং” বন্দর ও মালয়েশিয়ার “ক্লাং” বন্দর হয়ে প্রায় ৮ হাজার কিলোমিটার সমুদ্র পথ অতিক্রম করে বাংলাদেশের মংলা নৌঘাটিতে পৌঁছায়।