২১ নভেম্বর ২০২৫, ০৭:১৬ অপরাহ্ন, ২৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি, শুক্রবার, ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নোটিশ
জরুরী ভিত্তিতে কিছুসংখ্যক জেলা-উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া হবে যোগাযোগ- ০১৭১২৫৭৩৯৭৮
সর্বশেষ সংবাদ :
ছারছীনার পীর সাহেব হুজুরের বরিশাল আগমন উপলক্ষে আগামীকাল শনিবার ঈছালে ছওয়াব ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায় উদ্ধার হওয়া তিনটি তক্ষক বনায়ন ও নার্সারি এবং প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের বাগানে অবমুক্ত ফাতেমা জোহরা আদিবার আন্তর্জাতিক সাফল্য; অস্ট্রেলিয়ার নিবন্ধিত আর্কিটেক্ট স্ত্রীকে নির্যাতনের মামলায় বরগুনার শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রবিউল হত্যা মামলায় নিরপরাধদের জড়ানোর অভিযোগে বাবুগঞ্জে বিএনপি’র একাংশের সংবাদ সম্মেলন বাবুগঞ্জের ছাত্রদল নেতার খুনিদের গ্রেপ্তার পরবর্তী দৃষ্টান্ত ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ চুয়াডাঙ্গায় ৩ তক্ষকসহ গ্রেফতার ১জন বাবুগঞ্জ এলজিইডি’র এলসিএস কমিউনিটি অর্গানাইজার সানজিদার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার ও হয়রানির অভিযোগ জোটের চাপ নাকি অভ্যন্তরীণ কোন্দল? বরিশাল -৩ আসনে এখনো প্রার্থী চূড়ান্ত করতে পারেনি বিএনপি। ভোটারদের মাঝে ‘ভিআইপি চমক’-এর গুঞ্জন বাবুগঞ্জে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ক্রীড়া সামগ্রী বিতরণ
রাতভর এখন বৈদ্যুতিক নানা আলোর ঝলকানিতে মুখোরিত সিরাজগঞ্জের

রাতভর এখন বৈদ্যুতিক নানা আলোর ঝলকানিতে মুখোরিত সিরাজগঞ্জের

রাতভর এখন বৈদ্যুতিক নানা আলোর ঝলকানিতে মুখোরিত সিরাজগঞ্জের তাঁত শিল্প সমৃদ্ধ এনায়েতপুর। এলাকার ৩ কিলোমিটার রাস্তা-ঘাটসহ যমুনার পাড়ও বর্নিল আলোয় সাজানো হয়েছে অপরুপ সাজে। মাথার উপরে টিপ-টিপ বাতির আলোর ছাতায় মুগ্ধ সবাই।

উপমহাদেশের প্রখ্যাত ওলিয়ে কামেল, ইসলাম প্রচারক হযরত শাহ সুফী খাজা বাবা ইউনুছ আলী এনায়েতপুরী (রঃ) এর ২০২০ সালের ১০৫ তম বাৎসরিক ওরশ উপলক্ষে আলোর এই কারুকার্য নিয়ে সবার মাঝে বিরাজ করছে অন্যরকম উৎসাহ ও উদ্দিপনা। এক পলক দেখতে ভিড় করছে সবাই। এদিকে বাৎসরিক এ ঐতিহ্যের ওরশ উপলক্ষে তাঁত শিল্প সমৃদ্ধ এনায়েতপুর থানার প্রায় ৩ লক্ষাধিক মানুষ অসাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিয়ে অতীতের ধারাবাহিকতায় প্রতিটি বাড়িতে-বাড়িতে নায়রে ঝি-বেটিদের এনে নবান্নের পিঠা-পুলির প্রস্তুতি শুরু করেছে।

জানা যায়, প্রথম বার ১৯১৬ সালে তৎকালীন দরবার শরীফের গদ্দিনশীন হুজুর পাক হযরত খাজা বাবা ইউনুছ আলী (রঃ) তার কয়েকজন ভক্তদের সাথে পরামর্শ ক্রমে ওরশ করার সিদ্ধান্ত নেয়। সে বছর স্বল্প পরিসরে কয়েকশ অনুসারী নিয়ে শুরু হয় বাৎসরিক ওরশ। এরপর থেকেই সুফিবাদী এই ইসলাম প্রচারকের প্রতি বছর ৩ দিন ব্যাপী মহাপবিত্র ওরশ শরীফ হয়ে আসছে। তার মানবিক কল্যানকর কাজ সবার মাঝে দৃষ্টি কারলে দেশের সর্বোত্ত ও ভারতের আসামে সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। এরপর প্রতি বছরই তার অনুসারী লাখ-লাখ জাকের ভাই-বোনদের অংশগ্রহনে সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর পাক দরবার শরীফে বাৎসরিক ওরশের মাধ্যমে দেশের বৃহৎ এক ধর্মীয় মহাসমাবেশ হয়ে আসছে। যত দিন যাচ্ছে এর পরিধি আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে। এবছরও ৩ জানুয়ারী থেকে ১০৫ তম এই বাৎসরিক ওরশ ও মেলা নিয়ে জেলাবাসীর রয়েছে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দিপনা।

এ উৎসবের মাত্রাকে আরো সমৃদ্ধ করার লক্ষে গত ২৫ ডিসেম্বর হতে খাজা ইউনুছ আলী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধু পশ্চিম সংযোগ মহাসড়কের সয়দাবাদ মোড়, বেলকুচির চালা, এনায়েতপুর কেজির মোড়, মন্ডলপাড়া মোড়, খাজা ইউনুছ আলী কলেজ ও হাসপাতাল গেইটে সুবিশাল দৃষ্টিনন্দন তোরণের পাশাপাশি এনায়েতপুর-সিরাজগঞ্জ সড়কের এনায়েতপুর ইসলামীয়া উচ্চ বিদ্যালয় হতে হাসপাতাল হয়ে মাজার ও এনায়েতপুর পুরাতন বাজার হয়ে কেজির মোড় পর্যন্ত সড়ক এবং এনায়েতপুর স্পার বাধ রাস্তার উপরে বাঁশ টাঙ্গিয়ে পুরো এলাকায় লাল-সবুজ, নীল, সাদা, সোনালী সহ রং বেরংগের বাহারী আলোকসজ্জা করা হয়েছে। এখানে সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত শোভা পাচ্ছে এসব ঝলমলে ছোট-ছোট টিপ বাতি। এ যেন রাস্তার মাথার উপরে বিছানো রয়েছে আলোর ছাতা। যা সাড়া দেশ ও ভারতের আসাম থেকে ওরশে আসা ১০ লক্ষাধীক জাকের ভক্তদের সম্ভাষন জানাতে অপেক্ষা করছে। এই আলোর ঝলকানি দেখতে সন্ধ্যা হতে গভীর রাত পর্যন্ত ভীড় করছে এলাকার বিভিন্ন বয়সী নারী পুরুষ। বিশেষ করে এই উৎসবকে ঘিরে শিশুদের আনন্দের শেষ নেই।

এ ব্যাপারে এনায়েতপুর পাক দরবার শরীফের পেশ ইমাম আলহাজ্ব মাওলানা আব্দুল আওয়াল, খাবার মাঠের প্রধান খাদেম মাষ্টার সোলায়মান হোসেন ও আলহাজ্ব মাহফুজুর রহমান বাবলু জানান, এনায়েতপুর মাজার সহ পুরো এলাকা জুড়ে ওরশ উপলক্ষে আলোর উৎসব এর বর্ণাঢ্যতাকে আরো বৃদ্ধি করেছে। ইসলামী দিক নিদের্শনা তাৎপর্যের সাথে পালনে এই ওরশ শরীফ ঈদ উৎসবের মতই পরিনত হয়েছে। এ আয়োজনে খাজা ইউনুছ আলী কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সার্বিক সহযোগীতা করায় তাদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞতা জানাই।

এদিকে এনায়েতপুর পাক দরবারে ধর্মীয় এই বাৎসরিক মহাসমাবেশ এলেই আশপাশের গ্রাম গুলোতে আত্বীয়-স্বজনদের নায়রে এনে বাড়িতে-বাড়িতে চলে পিঠা-পুলির নবান্ন উৎসব। এরা ওরশ মেলায় ভীড় করে মিষ্টি, জিলাপী, ঝুরি, মুড়ি, সাজ, খেলার সামগ্রী, পোশাক, আসবাবপত্র সহ নানান ধরনের জিনিস কেনা কাটায়। পুরো ৩ সপ্তাহ ধরে চলে এই উৎসব। তবে আলোর ঝলকানীর টিপ-টিপ বাতির এই উৎসবের মাত্রাকে আরো সমৃদ্ধ করেছে।

এ ব্যাপারে প্রবীন সমাজ-সেবক আহম্মদ মোস্তফা খান বাচ্চু ও এনায়েতপুর ইসলামীয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল কাদের মিয়া জানান, এতো বিশাল এলাকা জুড়ে এমন আলোর উৎসব আসলেই অভুতপুর্ব। আলোর খেলা ধেখতে পুরো ৩ কিলোমিটার জুড়েই সবার চোখ। যা সকলের দৃষ্টি কারছে। আর এই ওরশই হচ্ছে ঈদের পরেই আমাদের প্রাণের উৎসব। প্রতিবার যার প্রতিক্ষায় থাকি আমরা।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2019