২৬ জানুয়ারী ২০২৫, ০৯:১৩ অপরাহ্ন, ২৫শে রজব, ১৪৪৬ হিজরি, রবিবার, ১২ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নোটিশ
জরুরী ভিত্তিতে কিছুসংখ্যক জেলা-উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া হবে যোগাযোগ- ০১৭১২৫৭৩৯৭৮
সর্বশেষ সংবাদ :
ঝালকাঠি জেলা যুবদলের সদস্য মোঃ মিজানুর রহমান রাজুসহ তার গংদের মিথ্যাচার ও অনৈতিক কর্মকান্ডের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন বাংলাবান্ধায় আন্তর্জাতিক কাস্টমস দিবস পালিত বরিশাল বিভাগীয় পর্যায়ে জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট এর শুভ উদ্বোধন বাংলাদেশেও সব মার্কিন সহায়তা বন্ধ : ইউএসএইড দশমিনায় ইয়াবাসহ প্রকৌশলী গ্রেপ্তার ছয় বছর পরে বানারী পাড়া দক্ষিণ নাজিরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। শেরে বাংলা স্মৃতি পদক -২০২৪ পেলেন বানারী পাড়ার কৃতি সন্তান হাবিবুর রহমান জুয়েল। গোপালগঞ্জে সমন্বয়কদের ওপর ছাত্রলীগের হামলা তরুণদের রাজনৈতিক দলকে স্বাগত জানাই : তারেক রহমান ঝালকাঠিতে আলোকিত যুব ক্লাব ও পাঠাগার’র প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত
গঙ্গাস্নানের মধ্য দিয়ে কুয়াকাটা সৈকতে অনুষ্ঠিত হল সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের রাস উৎসব।

গঙ্গাস্নানের মধ্য দিয়ে কুয়াকাটা সৈকতে অনুষ্ঠিত হল সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের রাস উৎসব।

নিউজ ডেস্ক::ধর্মীয় ভাবগাম্ভীযের্র ও গঙ্গাস্নানের মধ্য দিয়ে কুয়াকাটা সৈকতে অনুষ্ঠিত হল সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের রাস উৎসব। সোমবার রাতভর পূজার্চনা শেষে উষালগ্নে সমুদ্র স্নানের শেষে পূণ্যার্থীরা নিজ গন্তব্যে ফিরে গেছে। শত শত বছরের ঐতিহ্যবাহী কুয়াকাটার রাস পূর্নিমা উৎসব ও সমুদ্রস্নান অনুষ্ঠানকে ঘিরে চলতি বছরে ছিল না তেমন কোন অনুষ্ঠানিকতা। রাস উৎসবে প্রভাব ফেলেছে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল। দেশী ও বিদেশী পূণ্যার্থীদের সমাগম ছিল না চোখে পড়ার মতো। পটুয়াখালী ও বরগুনাসহ পাশ্ববর্তী এলাকার সনাতন হিন্দু সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষ শ্রীকৃঞ্চের ভক্তরা এ উৎসবে এসে যোগ দিয়েছে। স্থানীয়দের মতে এবছর কুয়াকাটা সৈকতে সবচেয়ে কম সখ্যক পুণ্যার্থীদের আগমনে রাস উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। তারপরও শ্রী কৃঞ্চের ভক্তদের মাঝে আনুষ্ঠানিকতার কোন কমতি ছিল না। প্রতিবছর কুয়াকাটায় তিনদিন ব্যাপী রাস উৎসব পালিত হলেও এ বছর ঘুর্ণিঝড় বুলবুলের কারনে তা একদিনেই সমাপ্ত হয়েছে।
সোমবার সন্ধায় কুয়াকাটা শ্রীশ্রী রাঁধা কৃষ্ণ মন্দির ও তীর্থযাত্রী সেবাশ্রম মন্দির প্রাঙ্গনে রাতে অধিবাসের মধ্য দিয়ে পদাবলী কীর্তন,নামকীর্তন,ভগবত পাঠ সহ ধর্মীয় আচার আচরনের মাধ্যমে রাস উৎসবের শুরু করেন পুজা উৎযাপন কমিটি।
পুরোহিতদের মতে, দ্বাপর যুগে বৃন্দাবনে যমুনার তীরে গোপীগণ শ্রীকৃষ্ণ ও রাধীকার সঙ্গে লীলা বিলাস করার সময় যমুনাতে স্নান করেছিল লীলার আগে ও পরে। স্নান করে বিশুদ্ধ হয়ে পূন্যার্জন করে শ্রীকৃষ্ণকে শুধু পতি রূপে নয় জগৎপতি রূপে পাওয়ার মানষেই রাস স্নানের প্রথা প্রচলিত হয়ে আসছে কুয়াকাটায়। এর ধারাবাহিকতায় প্রায় ২শ বছরের ঐতিহ্য সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা বিশ্বাস করেন পূর্নিমার এ রাতে ধর্মীয় নানা অনুষ্ঠান শেষে উষালগ্নে সমুদ্রে পূন্যস্নান করলে সারা বছরের পাপ মোচন হয়। তাই পূর্নার্থী ও দর্শনার্থীরা রাতভর অধিবাসের মধ্য দিয়ে কুয়াকাটা রাধা কৃষ্ণ,তীর্থ সেবাশ্রম ও অনন্যা সেবাশ্রমে ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহন করে সূর্যোদয়ের পূর্বে হরে কৃষ্ণ,হরে কৃষ্ণ ধ্বনি উচ্চরিত করে পুরোহিত কাছে দীক্ষা নিয়ে কুয়াকাটা বঙ্গোপসাগরে স্নান করেছে।
শুধু পূন্যার্থীরাই নয়, নানা ধর্ম-বর্নের মানুষ মিলিত হয় রাস লীলা, সমুদ্র স্নান ও মেলানুষ্ঠানে। রাস মেলা ও পূণ্য স্নানে আশা রমণী (৬০) জানান, তারা স্ব-পরিবারে প্রতি বছরের ন্যায় কুয়াকাটায় পৌঁছেছে। রাতভর নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠান উপলব্ধি করে সকাল বেলা সমুদ্র স্নান করে গন্তব্যে চলে যাবেন। রণজিৎ (৫৬) ও দ্বীবা রাণী (৪৫) সস্ত্রীক বরগুনা থেকে কুয়াকাটায় ঠাকুরের সন্তুষ্টি লাভের আশায় এসেছে। তার মতে, ঠাকুর বাঁচিয়ে রাখলে প্রতি বছরই এ অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ করবে। শান্তি রাণী (৬৫) পাথরঘাটা থেকে নাতী মেয়ে নিয়ে সোমবার বিকেল ৫টায় এসেছেন কৃষ্ণের পূজারী হয়ে স্নান করে পাপ মোচন করে ঘরে ফিরবেন তারা। বাবু (৫০) পেশায় কৃষক প্রত্যেক বছরই আসেন রাসে। সারা রাত ধরে পালা কীর্তন, নাম কীর্তনসহ বিভিন্ন ধর্মীয় আলোচনা শোনার পর পূজা অর্চনা করে মঙ্গলবার গন্তব্যে ফিরবেন বলে এ প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন।
রাস উৎসবকে ঘিরে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ভাসমান ব্যবসায়ীরা মেলা সামগ্রী নিয়ে মেলায় অংশগ্রহন করেন। তবে এ বছর পুণ্যার্থী ও দর্শনার্থীদের ভীড় কম হওয়ায় তেমন বেচাকেনা হয়নি বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন। আবাসিক হোটেল মোটেল গুলোতে কোন চাপ ছিল না।
এদিকে রাস মেলায় আগত পর্যটক দর্শনার্থী ও পূণ্যার্থীর জন্য নিরাপদ পানি, মেডিকেল টিম, স্যানিটেশনসহ স্নান শেষে পোশাক পরিবর্তনের ব্যবস্থা করেছেন আয়োজক কমিটি। এছাড়া আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে স্থানীয় প্রশাসনসহ র‌্যাব, পুলিশ, গোয়েন্দা সংস্থা, আনসার, স্বেচ্ছাসেবক একত্রে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করেছেন।
রাসপুজা উৎযাপন কমিটির সভাপতি কাজল বরণ দাস বলেন, নানা প্রতিকুলতা উপেক্ষা করেও পুণ্যার্থীরা রাস উৎসবে এসে যোগ দিয়েছেন। তিনি আরো বলেন ঘুর্ণিঝড় বুলবুলের কারনে এবছর অনুষ্ঠান সুচী সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2019