২০ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:০৫ অপরাহ্ন, ২৮শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি, বৃহস্পতিবার, ৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
অনলাইন ডেস্ক::বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ ফজলুল হক মনির মতো দেশের প্রতিটি আনাচে-কানাচে গিয়ে সংগঠন গড়ে তোলার দৃঢ়তা দেখিয়ে শেখ ফজলে শামস পরশ বলেন,তিনি ঢাকায় বসে জেলা ও উপজেলার কমিটি ঘোষণা করবেন না।জেলা ও উপজেলায় গিয়ে সম্মেলন করে কমিটি ঘোষণা করবেন।দুর্নীতিবিরোধী শুদ্ধি অভিযানের পাশাপাশি শুদ্ধ রাজনীতি প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ।
যুবলীগে পরিচ্ছন্ন রাজনীতির পথচলা শুরু করতে চাইছেন তিনি।নিজেকে প্রস্তুত করছেন ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায়।বাবা শেখ ফজলুল হক মনির আদর্শ এবং ফুফু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আস্থায় নতুন যুবলীগ গড়াই তার লক্ষ্য।
যুবলীগের এই নতুন কাণ্ডারি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেছেন, দুর্নীতি-টেন্ডারবাজিসহ নানা অপকর্ম ও বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িতদের আর ঠাঁই হবে না এ সংগঠনে।বিদায় করা হবে ক্যাসিনো কারবারি এবং কমিটি বিক্রির হোতাদেরও।শেখ ফজলে শামস পরশ আরও বলেছেন, অভিযুক্তদের প্রথমে সাংগঠনিক দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে।একই সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের সত্য-মিথ্যা যাচাই করা হবে।যারা নির্দোষ হবেন,তাদের সসম্মানে যুবলীগে ফিরিয়ে আনা হবে। মর্যাদাও দেওয়া হবে।সৎ, দক্ষ, যোগ্য, ত্যাগী, পরীক্ষিত এবং স্বচ্ছ ভাবমূর্তির নেতারাই যুবলীগের নতুন নেতৃত্বে আসবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।সেইসঙ্গে যুবলীগকে গড়ে তুলতে চাইছেন নতুন আঙ্গিকে।
শেখ পরশ গত ২৩ নভেম্বর যুবলীগের সপ্তম জাতীয় কংগ্রেসে সর্বসম্মতভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।তার বাবা মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও অধুনালুপ্ত বাংলার বাণীর প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক শেখ ফজলুল হক মনি যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান।জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে তিনি ১৯৭২ সালের ১১ নভেম্বর যুবলীগ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। শেখ মনি ছিলেন বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে। সেই হিসেবে পরশের দাদা বঙ্গবন্ধু এবং ফুফু শেখ হাসিনা।গত বুধবার এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে শেখ ফজলে শামস পরশ আরও বলেছেন, শতভাগ সততা, নিষ্ঠা ও স্বচ্ছতার সঙ্গে তিনি যুবলীগের দায়িত্ব পালন করবেন। নিজে সৎ থাকবেন। সব ক্ষেত্রে দুর্নীতিকে বর্জন করবেন। যুবলীগের নিবেদিতপ্রাণ প্রত্যেক কর্মীর মতো সৎ থেকে নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ার জন্য তাদের নিয়েই এই সংগঠনকে বাঙালির আশা-আকাঙ্ক্ষার অন্যতম নির্ভরযোগ্য ঠিকানা হিসেবে গড়ে তুলবেন।যুবলীগ চেয়ারম্যান হিসেবে নন, একজন সাধারণ কর্মী হিসেবেই যুবলীগের সঙ্গে নিবিড় ভাবে জড়িয়ে থাকবেন বলে জানালেন পরশ।
বলেছেন, যুবলীগের নেতাকর্মীরাই হবে তার প্রাণশক্তি। তিনি নেতাকর্মীদের পাশে থেকে কাজ করবেন। সেইসঙ্গে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত করে যুবসমাজকে ‘আই হেটস পলিটিকস’- মনোভাব থেকে বের করে আনার চেষ্টাও থাকবে। যুবসমাজকে ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগানে অনুপ্রাণিত করে তাদের দেশপ্রেমে নিয়োজিত করার উদ্যোগও থাকবে।দেশের জন্য জাতির পিতার আত্মত্যাগ ও তার কন্যা শেখ হাসিনার অসীম দেশপ্রেম থেকেই সাহস পান শেখ ফজলে শামস পরশ। তিনি বলেছেন, বঙ্গবন্ধু দ্বিতীয় বিপ্লবের ডাক দিয়েছিলেন।কিন্তু দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের কারণে সেই বিপ্লব পূর্ণতা পায়নি।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।প্রধানমন্ত্রীর এই শক্ত অবস্থান বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লবের মতোই।তাই প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে যুবলীগেও দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা হবে। যুবলীগের প্রত্যেক নেতাকর্মী তাদের সম্পূর্ণ অস্তিত্ব দিয়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নেবেন।শেখ ফজলে শামস পরশ ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটিতে ইংরেজিতে শিক্ষকতা করছেন।তিনি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়েও শিক্ষকতা করেছেন।ধানমন্ডি সরকারি বালক বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক, ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে মাস্টার্স করা শেখ পরশ যুক্তরাজ্যের কলোরাডো স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকেও এমএ ডিগ্রি অর্জন করেছেন।তিনি রাজনীতির পাশাপাশি শিক্ষকতা পেশায় থাকবেন।শিক্ষকতা তার ভালোবাসার জায়গা।তার স্ত্রী নাহিদ সুলতানা পেশায় আইনজীবী।তার ভাই ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস ঢাকা-১০ আসনের এমপি। তাদের বাড়ি গোপালগঞ্জে।আবেগাপ্লুত হয়ে শেখ ফজলে শামস পরশ বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার কালরাতে তিনি খুব কাছ থেকে দেখেছিলেন মৃত্যুর বিভীষিকা।স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির আস্ম্ফালন দেখেছেন।ওই রাতে চোখের সামনেই তার দেশপ্রেমিক বাবা ও মা আরজু মনি শহীদ হয়েছিলেন।তার জিজ্ঞাসা,কী দোষ ছিল তাদের? তারা তো এই দেশ স্বাধীন করেছিলেন। তাহলে কেন তাদের হত্যা করা হলো? এমন অনেক প্রশ্নের জবাব আজও পাননি শেখ পরশ।
এ কারণেই রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান হয়েও শেখ পরশ নিজে কে এতদিন রাজনীতিতে জড়াননি।একমাত্র ছোট ভাই ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসকে নিয়ে নিজের মতো করেই বেড়ে উঠেছেন।শুধু শিক্ষকতা নিয়েই ছিল তার সার্বক্ষণিক ব্যস্ততা।শিক্ষকতাই তার ধ্যান-জ্ঞান। এবার