মোঃ হাফিজ উল্যাহ ভোলা প্রতিনিধি।। জেলা প্রতিনিধিঃ ভোলার দৌলতখানে মহিউস সূন্নাহ আকবারুল উলুম ক্বওমী মাদ্রাসার (সেলিম চেয়ারম্যান বাড়ির দরজা) পরিচালক মাওঃ খোরশেদ আলম সভাপতি মাইনুল হক এর যোগসাজশে যাকাত ফান্ড সহ বিভিন্ন ফান্ডের অর্থ আত্মসাৎ, দূর্নীতি, অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতা চালিয়ে যাচ্ছেন তার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে। তিনি প্রায় ১০ বছর যাবৎ মাদ্রাসা পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত আছেন।
শিক্ষকদের সাথে তার এ বিষয় নিয়ে চরম বিরোধ দেখা দেয় গত বছর এপ্রিল মাসের পর। মাওঃ খোরশেদ আলম মে, ২৪ ইং প্রতিষ্ঠান থেকে নিজের বেতন নেন ৬২ হাজার টাকা এবং অন্যান্য শিক্ষকদের দেন ৭ হাজার টাকা করে। এবং তিনি এপ্রিল মাসের অনুমোদিত ৪ জন শিক্ষকের বেতনের ৫৬ হাজার টাকা খরচ করে ফেলেন ও জুন মাসে তার ধার্যকৃত বেতনের প্রায় আড়াই গুণ বেশি টাকা নেন। তার এরকম কর্মকান্ডে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে সকল শিক্ষকগণ। গত বছরের এই জুন মাসে নূরানী শিক্ষক সভায় ১ জন সিনিয়র সহকারী শিক্ষকের সঙ্গে বাকবিতন্ডার একপর্যায়ে মাওঃ খোরশেদ আলম কে জুতাপেটা করতে চায় এবং ঐ শিক্ষক তার কক্ষে তালা মেরে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনার পর শিক্ষকদের ঐক্যবদ্ধ চাপে পড়ে মাওঃ খোরশেদ আলম যাকাত ফান্ডের ১ লক্ষ ৬৯ টাকা আত্মসাৎ করার কথা স্বীকার করতে বাধ্য হন। এবং মাদ্রাসার বিভিন্ন ফান্ডের অর্থ আত্মসাৎ, অনিয়ম, দূর্নীতি সহ তার নানা অপকর্মের তথ্য বেরিয়ে আসতে থাকে। প্রতিবাদী ওই সিনিয়র শিক্ষক মাদ্রাসার সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ, সৎ, আদর্শবান এবং তার অবস্থান যৌক্তিক হওয়ায় সকল শিক্ষক একাত্মতা প্রকাশ করেন। পরিচালকের অপকর্মের ঘনিষ্ঠ সহযোগী জুনিয়র শিক্ষক আব্দুল হাই মাষ্টার শিক্ষকদের জবাবদিহিতার মুখোমুখি হয়ে কোন বিষয়ে সদুত্তর দিতে না পেরে কৌশলে পালিয়ে যায়।
সহকারী শিক্ষক হাফিজ উল্যাহ মাষ্টার শিক্ষকদের সাধারণ সভায়/ম্যানেজিং কমিটির সভায় পরিচালকের অন্যায় অপরাধের বিষয় যৌক্তিক মতামত তুলে ধরা এবং সোচ্চার ভূমিকার জন্য পরিচালক মাওঃ খোরশেদ আলমের ব্যক্তি আক্রোশে পড়ে যান। এই ব্যক্তি আক্রোশ থেকে হটাৎ ২৭ এপ্রিল ২৪ ইং শিক্ষকদের সাধারণ সভায় হাফিজ উল্যাহ মাষ্টার এর বিরুদ্ধে ৫ বছর পূর্বের একটি ভুয়া, বানোয়াট রেজুলেশন মাওঃ খোরশেদ আলম প্রকাশ করে তাকে অন্যত্র চাকুরী দেখতে বলেন এবং চরম দম্ভোক্তির সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। এই রেজুলেশন সম্বন্ধে ২৭ এপ্রিল ২৪ ইং এর পূর্বে শিক্ষকদের কোন সভায় উত্থাপণ অথবা হাফিজ উল্যাহ মাষ্টার কে কোনরুপ অবহিত করা হয়নি।
হাফিজ উল্যাহ মাষ্টার ৩০ এপ্রিল যথারীতি মাদ্রাসায় যাওয়ার পর সভাপতি হাফিজ উল্যাহ মাষ্টার কে তার মুঠোফোন থেকে তাকে বিভিন্ন হুমকি- ধামকি দেন। একপর্যায়ে মাওঃ খোরশেদ আলমের প্ররোচনায় মাইনুল হক মাদ্রাসায় এসে তার স'মিলের শ্রমিক নিয়ে হাফিজ উল্যাহ মাষ্টার কে জোড়পূর্বক মাদ্রাসা থেকে বের করে দেন। পরিচালক মাওঃ খোরশেদ আলমের এরকম দোর্দন্ড দাপটের পিছনে রয়েছে তার বড় ভাই ও মাদ্রাসা মজলিসে সূরা কমিটির সভাপতি মাওঃ আব্দুল মালেক এর একপেশে ভূমিকা এবং ম্যানেজিং কমিটি ও মজলিসে সূরা কমিটিতে থাকা আত্মীয়দের আশ্রয় - প্রশ্রয়।
এ বিষয়ে হাফিজ উল্যাহ মাষ্টার ইত্তেহাদ বোর্ড কে ২ মে, ২৪ ইং লিখিত অভিযোগ দিলে বোর্ড কর্তৃপক্ষ তা আমলে নিয়ে ওই মাদ্রাসার সভাপতি ও পরিচালকের সঙ্গে ৫ সদস্যের ১ টি টিম সাক্ষাৎ করলে তারা উভয়পক্ষ বিষয়টি নিয়ে বসে সুষ্ঠু সূরাহা করতে সম্মত হয়। কিন্তু ২৯ মে মাওঃ খোরশেদ আলম বোর্ড কর্তৃপক্ষ কে জানান তারা বসবেন না, কমিটির সিদ্ধান্তে অনড় থাকবেন। বোর্ড কর্তৃপক্ষ ১২ জুন ২৪ ইং হাফিজ উল্যাহ মাষ্টার কে একটি লিখিত জবাব দিয়ে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের অবস্থান পরিষ্কার করে। এরপর হাফিজ উল্যাহ মাষ্টার ১২ জুন দৌলতখান উপজেলা নির্বাহী অফিসার পাঠান মোঃ সাইদুজ্জামান বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার অভিযোগ আমলে নিয়ে বিবাদী মাইনুল হক এবং মাওঃ খোরশেদ আলম কে ২৬/০৬/২৪ ইং হাজির হতে নোটিশ করেন। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ২৫/০৬/২৪ ইং সময় চেয়ে আবেদনের প্রেক্ষিতে আগামী ০৩/০৭/২৪ ইং গণশুনানির সময় ধার্য করা হয়েছে।
পরিচালক মাওঃ খোরশেদ আলম এর কাছে ক্রাইম নিউজ ডেস্ক আর্থিক কেলেঙ্কারি, দূর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার বিষয় জানতে চাইলে তিনি কৌশলে এড়িয়ে যান। এবং আরও জানতে চাওয়া হয় হাফিজ উল্যাহ মাষ্টার কে বরখাস্তের বিষয়ে, এটা তাদের ম্যানেজিং কমিটি ও মজলিসে সূরা কমিটির সিদ্ধান্ত বলে জানান তিনি। তবে শিক্ষক বিদায় করার মাদ্রাসা অথবা বোর্ডের বিধি-বিধান অনুসরণ করা হয়েছে কিনা এরকম প্রশ্নে কোন সদুত্তর দিতে পারেন নি মাঃ খোরশেদ আলম।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মোহাম্মদ বেল্লাল তালুকদার
প্রধান কার্যালয় ফ্লাট#এ ৫ ট্রফিকাল হোম ৫৫/৫৬ শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন রোড মগবাজার রমনা ঢাকা-১২১৭
মোবাইল নং- 01712573978
ই-মেইল:- ajkercrimenews@gmail.com
Copyright © 2025 আজকের ক্রাইম নিউজ. All rights reserved.