০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:৫৯ অপরাহ্ন, ৩রা রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি, শনিবার, ২৩শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
জাবেদুর রহমান জাবেদ, তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) প্রতিনিধিঃ
তেঁতুলিয়া হাসপাতালে ডাক্তার সংকটে চিকিৎসা সেবা ব্যহত হচ্ছে বহিঃবিভাগে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন ফার্মাসিষ্টা। এখানে নেই কোন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এবং মেডিকেল অফিসার তাই ফার্মাসিষ্ট দিয়েই চলছে বহিঃবিভাগ। হাসপাতালে জরুরি বিভাগে রোগি আসলেই তাদের পাঠিয়ে দেয়া হয় জেলা সদর সহ অন্যান্য হাসপাতালে।
পরিসংখ্যান বিভাগের তথ্যমতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ২০০৫ সালে ৩১ শর্যা থেকে ৫০ শর্যায় উন্নীত করা হয়। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, মেডিকেল অফিসার, জুনিয়র কনসালটেন্ট ও সহকারী সার্জনসহ ২৮ জনের পদ বিদ্যমান। কিন্তু ২৮ জনের স্থলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সহ মেডিকেল অফিসার আছে ৬ জন তদ্মধ্যে আবাসিক মেডিকেল অফিসার (ভার.) পদে একজন নিয়োজিত। বর্তমানে আবাসিক মেডিকেল অফিসার সহ মোট ২৩ জন চিকিৎসের পদ শূন্য। এরমধ্যে জুনিয়র কনসালটেন্ট (ইএনটি), জুনিয়র কনসালটেন্ট (সার্জারী), জুনিয়র কনসালটেন্ট (চুক্ষু), জুনিয়র কনসালটেন্ট (মেডিসিন), জুনিয়র কনসালটেন্ট (অর্থো), জুনিয়র কনসালটেন্ট (কার্ডিও), জুনিয়র কনসালটেন্ট (এনেসথেসিয়া), জুনিয়র কনসালটেন্ট (শিশু), জুনিয়র কনসালটেন্ট (যৌন ও চর্ম) এবং সহকারী সার্জন (ইএমও), সহকারী সার্জন (প্যাথোলোজী), সহকারী সার্জন (এনেসথেসিয়া), এমও (হোমিও/আয়ুর্বেদিক) চিকিৎসকের পদ কয়েক বছর ধরে শূন্য রয়েছে। ফলে ০২জন উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসারের পাশাপাশি ফার্মাসিষ্ট দিয়ে জরুরী বিভাগ ও আন্তঃবিভাগে চিকিৎসাসেবা প্রদান করছে।
তথ্য মতে, প্রতিদিন বহিঃর্বিভাগে গড়ে প্রায় ৩ শতাধিক রোগী এবং জরুরী বিভাগে ৫০ থেকে ১০০জন রোগী চিকিৎসাসেবা নিতে আসেন। এর মধ্যে বেশির ভাগ রোগিকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে অন্যত্র পাঠানো হয়। শুধু মাত্র বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অভাবে। জরুরী বিভাগে আসা রোগীদের মধ্যে ২০ থেকে ২৫ জন আন্তঃবিভাগে ভর্তি থাকেন। কিন্তু রোগীদের পর্যাপ্ত বেড না অনেক ভর্তি রোগীকে বারান্দার ফ্লোরে বিছানা করে চিকিৎসাসেবা নিতে হয়। অনেক মা ও শিশু রোগীর চিকিৎসাসেবা নিতে দূভোর্গ পোহাতে হয়।
এ হাসপাতালটিতে আধুনিক অপারেশন থিয়েটার (ওটি) থাকলেও গাইনী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, এন্সেথেশিয়া চিকিৎসক, সার্জারি চিকিৎসক না থাকায় অনেক অন্তঃস্বত্তা মা’কে জরুরী ভিত্তিতে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে না।
নানা সঙ্কটের মধ্যেই বর্তমান সিভিল সার্জন ডাক্তার মোস্তফা জামান চৌধুরী পঞ্চগড়ে যোগদানের পর থেকেই এ উপজেলার গর্ভবতি প্রসূতি মা সহ সার্জারি রোগীর মাঝে আশার আলো জ্বালিয়েছে। গত নভেম্বর মাস থেকে তেঁতুলিয়া হাসপাতালে এখন পর্যন্ত প্রতি মাসে একদিন অপারেশন কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকেন।
এছাড়া উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র গুলোতে নেই কোন এমবিবিএস ডাক্তার। উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতেও মেডিকেল অফিসার না থাকায় মানুষের মৌল অধিকার গুলোর মধ্যে অন্যতম চিকিৎসা সেবা পেতে বঞ্চিত হচ্ছে।
প্রায় ২ লক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসার একমাত্র ভরসাস্থল এই হাসপাতালটি প্রয়োজনীয় চিকিৎসকের অভাবে স্বাস্থ্যসেবা মুখ থুবড়ে পড়েছে।
এব্যাপারে পঞ্চগড় সিভিল সার্জন ডাক্তার মোস্তফা জামান চৌধুরী জানান, আমাদের জনবল সংকট শুধু তেঁতুলিয়া হাসপাতালেই নয় জেলার অন্যান্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও রয়েছে। আমরা বারংবার উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করেও সমাধান করা হয়নি। তথাপিও সংকটের মধ্যেই আমাদের যা জনবল রয়েছে তা দিয়েই আন্তরিকতার সহিত চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছি।