তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) প্রতিনিধিঃ ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রথম ধাপে তেঁতুলিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচন আগামী ৮ মে অনুষ্ঠিত হবে। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দিন ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে জমে উঠেছে শেষ মুহূর্তের প্রচার প্রচারণা। উপজেলার চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীদের পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে পুরো উপজেলার আনাচকানাচে। প্রার্থী এবং তাদের সমর্থকরা বিভিন্ন এলাকায় প্রচার প্রচারনা ও ভোটারদের সমর্থন বাড়াতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
তীব্র তাপদাহের মাঝেও নির্বাচনী প্রচারনায় পুরো উপজেলায় উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হলেও তেঁতুলিয়ার বিভিন্ন এলাকা সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, নিয়ম কানুনের তোয়াক্কা না করে চলছে প্রার্থীদের এসব প্রচার-প্রচারণা। পোস্টার দড়ি দিয়ে টানানোর কথা থাকলে তা মানা হচ্ছে না। সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অফিস, বাসা-বাড়ী, ভবনের দেয়াল, গেট, রাস্তার সড়কদ্বীপ, ঈদগাহ ময়দান, বৈদ্যুতিক খুটি ও গাছে লাগানো হয়েছে নির্বাচনী পোস্টার। আচরণ বিধিতে প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচারণার জন্য একটি ইউনিয়নে মাত্র একটি মাইক ব্যবহার করার কথা থাকলে এ উপজেলায় দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। একই ইউনিয়ন একাধিক প্রচারণা ও দুটি করে মাইক ব্যবহার করছে প্রার্থীরা৷ এছাড়া নির্বাচনী প্রচারণার জন্য প্রতিদিন দুপুর ২ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত সময় সীমা বেধে দেয়া হলেও তা না মেনেই চালাচ্ছে প্রচারণা ৷ শোডাউন করতে বিধিনিষেধ থাকলেও তা অমান্য করে মোটর সাইকেল শোডাউন করে তা প্রতিদিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লাইভ প্রচার করতেও দেখা গেছে বিভিন্ন প্রার্থীদের৷ নির্দেশনার তোয়াক্কা না করে হরহামেশাই নিজেদের খেয়ালখুশি মতো কার্যক্রম পরিচালনা করলেও নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও উপজেলা নির্বাচন অফিসারের পক্ষ থেকে নেয়া হচ্ছেনা তেমন কোন ব্যবস্থা৷
নির্বাচনী আচরণ বিধিমালা অনুযায়ী প্রার্থীদের প্রচার প্রচারনার জন্য সুস্পষ্ট নিয়ম কানুন রয়েছে। নির্বাচনী প্রচারকার্যে যানবাহনের ব্যবহার সংক্রান্ত বাধানিষেধ, নির্বাচনী প্রচারণার জন্য একটি ইউনিয়নে মাত্র একটি মাইকের ব্যবহার, প্রতি ইউনিয়নে মাত্র একটি নির্বাচনী ক্যাম্প স্থাপন, দেওয়াল লিখন সংক্রান্ত বাধানিষেধ, পিভিসি ব্যানারের ব্যবহার সংক্রান্ত বাধানিষেধ থাকলেও প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই প্রার্থীরা নির্বাচনের আচরণবিধি লংঘন করলেও নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও সহকারী রির্টার্নিং অফিসারসহ সংশ্লিষ্টরা৷ তেমন কোন নেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ ও তদারকি। ফলে প্রার্থীরা যে যার ইচ্ছে মতো প্রচার প্রচারণা করছেন৷
এবিষয়ে উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থী নিজাম উদ্দিন খাঁন বলেন, আমার পোস্টার গুলো আমার কর্মীদের লাগাতে দিয়ে ছিলাম। তারা লাগানোর সময় বৈদ্যুতিক খুটি ও দেয়ালে অন্য প্রার্থীদের পোস্টার লাগানো দেখে তারাও পোস্টার লাগিয়েছেন৷ পরে তাদের নিষেধ করলে তারা আর লাগায়নি৷ এখন আমি দড়ি দিয়ে পোস্টার লাগানোর কথা বলেছি তাদের এবং তারা ওই ভাবে এখন পোস্টার লাগিয়েছে৷ তবে তিনি অভিযোগ করে বলেন, বিভিন্ন এলাকায় আমার পোস্টার কে বা কারা ছিঁড়ে ফেলতেছে। বিষয়টি দেখার অনুরোধ করছি৷
আচরন বিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে চেয়ারম্যান প্রার্থী কাজী আনিছুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দেয়ালে বা গাছে পোস্টার লাগানোর কথা না। হয় তো কর্মীরা ভুল করে লাগাতে পারে। খোঁজ নিচ্ছি কেউ যদি পোস্টার দেয়ালে গাছে লাগায় সেগুলো দ্রুত অপসারণ করা হবে।
এদিকে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী আশরাফ আলী বলেন, তিনি বা তার নির্বাচনের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে সংশ্লিষ্ট কেউ আচরণবিধি ভঙ্গ করছেন না। তিনি ও তার কর্মীরা বিধি মেনেই নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছেন
উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা শামীম হোসেন বলেন, আগামী ৮ মে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের জন্য আমি সকল ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। আচরণ বিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে প্রার্থী বা অন্য কেউ এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ করেনি, সামান্য যা করছে তার সমাধান করার চেষ্টা করছি৷ আশাকারি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে।
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভুমি) মাহবুবুল হাসান বলেন, নির্বাচনী আচরণ বিধি প্রতিপালনে প্রার্থীদের নির্বাচনী ক্যাম্পে সরেজমিনে গিয়ে আচরণ বিধিমালা সম্পর্কে সচেতন ও সতর্ক করা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে সহকারী রিটার্নং অফিসারের নিকট হতে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেলে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মোহাম্মদ বেল্লাল তালুকদার
প্রধান কার্যালয় ফ্লাট#এ ৫ ট্রফিকাল হোম ৫৫/৫৬ শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন রোড মগবাজার রমনা ঢাকা-১২১৭
মোবাইল নং- 01712573978
ই-মেইল:- ajkercrimenews@gmail.com
Copyright © 2025 আজকের ক্রাইম নিউজ. All rights reserved.