১১ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:৫০ পূর্বাহ্ন, ৭ই রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি, শুক্রবার, ২৫শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) প্রতিনিধিঃ দেশের উত্তরাঞ্চলের উপজেলা তেঁতুলিয়ায় সূর্যের দেখা মিলছে না সপ্তাহজুড়ে মাঝারি ও মৃদু শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত রয়েছে। জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার গত ২৪ ঘন্টায় ৯ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে। এনিয়ে গত কয়েকদিন যাবত দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা তেঁতুলিয়া অঞ্চলে রেকর্ডভুক্ত হয়েছে। আবহাওয়া অফিসের হিসেবে দেশের কোন অঞ্চলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮-১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে হলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ ধরা হয়। সেই হিসেবে তেঁতুলিয়ার উপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। শনিবার সকাল থেকেই আকাশে ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা ছিল। সূর্যের দেখা মিলে নাই। তবে দুপুরের পর কিছুটা সূর্যের দেখা মিললেও আলোর প্রখরতায় ঝিরঝির হিমেল বাতাস জনসাধারণ, গবাদিপশু সহ অন্যান্য প্রাণিকুলকে শীতে কাহিল হয়ে পড়েছে। অনেক কৃষক গবাদি পশুর গায়ে চট বা কম্বল জড়ায়ে দিয়ে রাখতে দেখা গেছে। দুপুর গড়িয়ে যাবার পর থেকে কনকনে হাঁড় কাঁপানো শীত নামছে। তীব্র ঠান্ডার কারণে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার আগেই জনসাধারণকে বাড়ি ফিরতে দেখা গেছে। ফলে হাট-বাজার ও রাস্তা-ঘাট অনেকটা জনশূণ্য হয়ে পড়ছে।
এদিকে তীব্র ঠান্ডার কারণে মহানন্দার পাথর শ্রমিকদের বেশিভাগ পাথর সংগ্রহের জন্য নদীতে নামতে পারেনি। ঠান্ডা নিবারণে গরীব-দুখী মানুষ খড়-কুটা জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করছে।
হাসাপাতালে বাড়ছে শীত জনিত রোগীর সংখ্যা। বিষেশ করে শিশু ও বয়স্ক রোগি। তবে সরকারিভাবে এখনো তেমন শীতবস্ত্র বিলি করা হয়নি। প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অফিস সূত্রে জানা গেছে সরকারিভাবে ২ হাজার ৮শত পিজ কম্বল বরাদ্দ পাওয়া গেছে ইতোমধ্যে সাতটি ইউনিয়নে চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে বিতরণ করা হচ্ছে।
আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক রাসেল শাহ বলেন, সপ্তাহ জুড়ে চলমান শৈত্যপ্রবাহ আগামী সপ্তাহ জুড়ে থাকতে পারে। কারণ চলতি মাসে তেঁতুলিয়ার তাপমাত্রা ১০-১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে উঠা-নামা করছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, সরকারি ভাবে প্রায় ২ হাজার ৮শত পিজ কম্বল সাতটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের কাছে বিতরণের জন্য হস্তান্তর করা হয়েছে। বাড়তি শীতবস্ত্র চেয়ে জেলায় চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে।
এব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাসুদ পারভেজ বলেন, বর্তমানে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্ট জনিত রোগীর সংখ্যা বেশি। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের ডায়রিয়া দেখা দিচ্ছে বেশি। প্রতিদিন গড়ে ১৫-২০ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে, আবার ১৫-২০ ছাড়পত্র নিয়ে বাসায় ফিরছে। এখনো প্রায় ১২-১৩ জন শিশু এবং ৫-৬ জন বয়স্ক ডায়রিয়া রোগী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফজলে রাব্বি বলেন, ১ম পর্যায়ে আমরা ২৭শ ৮০টি কম্বল পেয়েছি তা ইতোমধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। তা আমাদের জন্য যথেষ্ট নয়। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাড়তি শীতবস্ত্র চেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবরে চাহিদাপত্র পাঠানো হবে।
তিনি আরও বলেন শুধু সরকার বা উপজেলা প্রশাসনের একার পক্ষে সম্ভব নয় এলাকার বৃত্তবান ব্যক্তিরাও যদি অসহায় এতিম গরীব মানুষের পাশে সহযোগিতা হাত বাড়িয়ে দেয় তাহলে শীতার্থ মানুষ গুলো উপকৃত হবে।