আজকের ক্রাইম ডেক্স: চাল সংরক্ষণে বরিশালে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির খাদ্য সংরক্ষণাগার সাইলোর নির্মাণকাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে। সর্বাধুনিক সাইলো এখন দৃশ্যমান। দক্ষিণের জনপদে উৎপাদিত চালের মান অক্ষুণ্ন রেখে সর্বাধুনিক উপায়ে সংরক্ষণের জন্য এই সাইলো নির্মাণকাজ ৮০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।
২০২১ সালের জুনে বাংলাদেশ সরকার ও বিশ^ব্যাংকের যৌথ অর্থায়নে বরিশাল নগরীর ৩০ গোডাউন এলাকায় ৫২০ শতাংশ জমিতে ৩৩১ কোটি টাকা ব্যয়ে সাইলো নির্মাণ শুরু হয়। কীর্তনখোলার পারে জেটি স্থাপনের পাশাপাশি পুরো প্রকল্পের কাজ চলতি বছরের শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এখন শেষ পর্যায়ের কাজ চলছে।কাঠামোগত কাজও শেষ হচ্ছে। সাইলোকে সাপোর্ট দেওয়ার জন্য যে বিল্ডিংগুলো রয়েছে, সেগুলোর কাজও মোটামুটি শেষ। ৪৮ হাজার মেট্রিকটন চাল এই সাইলোতে মজুদ রাখা যাবে। এটিতে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা থাকায় চাল অন্তত তিন বছর মজুদ থাকলেও গুণগত মান বজায় থাকবে।
নদী ও সড়কপথে আসা চাল জেটি থেকে কনভেয়ার বেল্টের মাধ্যমে অটোমেশনে সংরক্ষণাগারে মজুদ করা হবে। বরিশাল বিভাগের ৬ জেলাসহ দক্ষিন উপকূলের মানুষের খাদ্য নিশ্চিত করতে সরকার দীর্ঘদিন মজুদ রাখার উপযোগী আধুনিক ও উন্নত মানের খাদ্য সংরক্ষণাগার হবে এই সাইলো।
গত বছরের ২২ জুন সাইলোর নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে যা শেষ হওয়ার কথা ছিল এ বছরের ২১ আগস্ট। কিন্তু এলসিজনিত জটিলতায় এর সরঞ্জামাদি আসতে দেরি করায় এবং কীর্ত্তনখোলা নদীর বৈরিতার জন্য নির্মাণকাজ সমাপ্তির মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়ানো হয়। মাঠ পর্যায়ের প্রকৌশলীরা বলছেন, এই সাইলো হবে বরিশালের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ পরবর্তীতে এখান থেকে সহজেই সংরক্ষিত খাদ্য দিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করা হবে। প্রকল্পকাজ করতে প্রথমে জমি নিয়ে বিড়ম্বনায় এবং পরে জেটি নির্মাণের সময় কীর্ত্তনখোলা নদীর জোয়ারভাটার বিড়ম্বনায় কাজ করতে বাধা হয়েছে। জেটির নির্মাণকাজ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মাত্র ৪ ঘণ্টা করা গেছে।
তা সত্ত্বেও ৮০ ভাগ কাজ ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। বরিশাল বিভাগের ৬ জেলায় স্থানীয় পদ্ধতিতে প্রায় ৯০ হাজার টন খাদ্য মজুদের ব্যবস্থা রয়েছে। অবশিষ্ট মাত্র ২০ শতাংশ কাজ শেষ হলেই অত্যাধুনিক খাদ্য মজুদের ক্ষেত্রে সাইলো হবে বাড়তি শক্তি। খরা ঝড় বন্যা জলোচ্ছ্বাসের পর ক্ষেতে ফসল ওঠা পর্যন্ত এই সাইলোর মাধ্যমে খাদ্য সহায়তা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে।
সাইলো প্রকল্প মান নিয়ন্ত্রণ প্রকৌশলী এ জেড এম ইফিতেখার বলেন, বিশাল এ প্রকল্প পরিচালিত হবে ৫০ জনবল দিয়ে। এ কারণে এটি হবে ব্যয় সংকুচিত প্রকল্প। এর পরিচালনা ব্যয় হবে খুবই কম এবং খাদ্যমান নিশ্চিত হবে সম্পূর্ণটা। এই সংরক্ষণাগারে একসঙ্গে ৪৮ হাজার মেট্রিকটন চাল মজুদ রাখা সম্ভব।
পৃথক পৃথক ১৬টি বিনের মাধ্যমে প্রতিটি বিনে ৩ হাজার মেট্রিকটন চাল ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন হবে এটি। এই সাইলো পাইল, ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে স্টিল স্ট্রাকচারে নির্মিত হচ্ছে। নদী ও সড়কপথে চাল আসলে তা জেটি থেকে কনভেয়ার বেল্টের মাধ্যমে অটোমেশনে সংরক্ষণাগারে আসবে এবং এক একটি বিনে গিয়ে মজুদ হবে।
প্রকল্প ম্যানেজার মো. আবদুর রহীম বলেন, সম্পূর্ণ অত্যাধুনিকভাবে মান নিয়ন্ত্রণ করে এখানে খাদ্যের সংরক্ষণ হবে এবং দুর্যোগকালে বরিশালের ৬ জেলায় দ্রুত তা সরবরাহ করা যাবে নৌ ও সড়কপথে। অত্যাধুনিক ব্যাগে প্যাকেট করে খাদ্য প্রস্তুতসহ খাদ্যসংকট মোকাবিলায় এই সাইলো ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হয়। কনফিডেন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডের সিনিয়র ম্যানেজার তনুশ্রী রঞ্জন দাস বলেন, এ অঞ্চলের জন্য এই সাইলো একটি আশীর্বাদস্বরূপ।
কারণ, এর জন্য এখানে মজুদ বাড়বে। এই সাইলোর মাধ্যমে বরিশাল অঞ্চলে খাদ্য সংরক্ষণের দীর্ঘদিনের সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে মন্তব্য করে বরিশাল বিভাগের আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আশা করা যায়, এটি হলে আমাদের বরিশাল অঞ্চলে অন্তত খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করা যাবে।’ উল্লেখ্য, বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় বর্তমানে ৪৬টি এলএসডি গোডাউনের মাধ্যমে এক লাখ মেট্রিক টন খাদ্য মজুদের ব্যবস্থা রয়েছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মোহাম্মদ বেল্লাল তালুকদার
প্রধান কার্যালয় ফ্লাট#এ ৫ ট্রফিকাল হোম ৫৫/৫৬ শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন রোড মগবাজার রমনা ঢাকা-১২১৭
মোবাইল নং- 01712573978
ই-মেইল:- ajkercrimenews@gmail.com
Copyright © 2025 আজকের ক্রাইম নিউজ. All rights reserved.