আজকের ক্রাইম ডেক্স
বরিশালে বিদায়ী সিটি মেয়রের ছবি নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে সরিয়ে ফেলার অজুহাতে আ.লীগ নেতাকে মারধর করে গলায় জুতার মালা পরিয়ে হেনস্থা করার অভিযোগে থানায় মামলা হয়েছে। হেনস্তার শিকার মনিরুজ্জামান খান বাচ্চু চরামদ্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বরিশাল নগরীর সোনার বাংলা মোটরসের স্বত্বাধিকারী।
বাকেরগঞ্জ উপজেলা চরামদ্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য নাজমুল হাসান ওরফে মঈন জমাদ্দারের নেতৃত্বে ঘটনাটি ঘটেছে। সোমবার (২৮ আগস্ট) বিষয়টি নিশ্চিত করেন মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই আরাফাত হাসান। তিনি জানান, মামলা তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে বলতে শোনা গেছে, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বরিশাল সিটি করপোরেশনের বিদায়ী মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর ছবি নামিয়ে রাখায় শাস্তিস্বরূপ গলায় জুতার মালা পরানো হয়েছে। একটি ভিডিওতে ওই ব্যবসায়ীকে বাধ্য করা হয়েছে সাদিক আব্দুল্লাহর ছবি দোকান থেকে নামিয়ে রাখা অন্যায় হয়েছে বলতে। অপরটিতে শোনা গেছে, ছবি নামানোর শাস্তিস্বরূপ শিক্ষা দেওয়ার কথা।
হেনস্তার শিকার আওয়ামী লীগ নেতা মনিরুজ্জামান খান বাচ্চু বলেন, বরিশালের ১১ নম্বর ওয়ার্ড বান্দ রোডে সোনার বাংলা মোটরস নামে আমার একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান আছে। আমার কক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের ছবি আছে। যেহেতু আমি দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করি এবং আমার অফিসে বিভিন্ন নেতারা আসেন। এই ইস্যু কাজে লাগিয়ে মিথ্যা অভিযোগ তুলেছে যে সাদিক আব্দুল্লাহর ছবি আমার অফিস থেকে নামিয়ে রেখেছি। এই অভিযোগ তুলে আমাকে মারধর ও গলায় জুতার মালা পরিয়ে তা ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছে।
তিনি বলেন, মূলত নাজমুল হাসান ওরফে মঈন জমাদ্দারের নেতৃত্বে আমাকে নির্যাতন করা হয়। গত ২২ আগস্ট মোবাইল ফোনে আমাকে শহীদ রহিম স্মৃতি পাঠাগার ক্লাবের পশ্চিম পাশের কক্ষে ডেকে নেয় মঈন।
বিকেল ৩টার দিকে সেখানে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রুম আটকে সেখানে থাকা সাব্বির, আব্দুল, কাওছার, সোহাগ মারধর শুরু করে। এরমধ্যে একজন বিএনপির সমর্থক ও বাকিরা সাদিক আব্দুল্লাহর অনুসারী। আমাকে রুমের মধ্যে আটকে দফায় দফায় মারধর করে। মারধর করে তারা আমাকে বলতে বলে যে আমার ব্যক্তিগত অফিস থেকে মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহর ছবি নামিয়েছি। ওরা যতবার এই কথা বলতে বলেছে, ততবার আমি বলেছি যে সাদিক আব্দুল্লাহর ছবি আমার অফিস থেকে নামাইনি। শেষে আরও মারধরের মাত্রা বাড়িয়ে দিলে বাধ্য হয়ে ওদের শেখানো কথা বলি যে সাদিক আব্দুল্লাহর ছবি নামিয়েছি এবং তা অন্যায় হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থী। আমাকে হেনস্তা করার জন্য কাওছার জুতার মালা বানিয়ে দেয় আর সোহাগ আমার গলায় পরিয়ে দেয়। আমি দুই-তিনবার ফেলে দিই। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে আরও মারধর করে। শেষে আমি জ্ঞান হারালে গলায় জুতার মালা পরিয়ে চেয়ারে বসিয়ে ভিডিও করে। তার আগে মঈন জমাদ্দার কয়েক দফায় হুমকি দিয়েছে, আমি মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহর পক্ষে কাজ করলে বরিশালে থাকতে দেবে না। সাদিক আব্দুল্লাহ বরিশালে ফিরলে আমাকে মারধর করবেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার প্রধান আসামি নাজমুল হাসান ওরফে মঈন জমাদ্দার বলেন, মনিরুজ্জামান খান বাচ্চুর যে ভিডিও ছড়িয়েছে তা আমি ছড়িয়েছি এটা সত্য। কিন্তু জুতার মালা পরানোর যে ভিডিও তার আগের ভিডিওর সঙ্গে সম্পৃক্ত না। তাছাড়া ওখানে সাদিক আব্দুল্লাহর নাম বলাটাও আমার উচিত হয়নি। এটা আমি ভুল করেছি। এজন্য সাদিক ভাইও আমার ওপর খুব ক্ষিপ্ত হয়েছেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মোহাম্মদ বেল্লাল তালুকদার
প্রধান কার্যালয় ফ্লাট#এ ৫ ট্রফিকাল হোম ৫৫/৫৬ শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন রোড মগবাজার রমনা ঢাকা-১২১৭
মোবাইল নং- 01712573978
ই-মেইল:- ajkercrimenews@gmail.com
Copyright © 2025 আজকের ক্রাইম নিউজ. All rights reserved.