মোঃ বশির আহাম্মেদ
চিফ রিপোর্টার
বরিশালের বাকেরগঞ্জে বিভিন্ন খাদে বরাদ্দের সাড়ে ৪ কোটি টাকা যথাযথ কাজে ব্যয় না করে আত্মসাতের অভিযোগ উঠছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের বিরুদ্ধে। জানা গেছে, ২০২১-২০২২ অর্থবছরে বাকেরগঞ্জের ২৭৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য ক্ষুদ্র সংস্কারের ২ কোটি ১৪ লাখ, খেলনা স্থাপনের জন্য ১৫ লাখ টাকাসহ স্লিপ, নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ মিলে প্রায় সাড়ে ৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার। এর মধ্যে ৪-৫টি বিদ্যালয়ে ম্যানেজিং কমিটি না থাকায় বরাদ্দের টাকা তুলতে পারেনি। বাকি বিদ্যালয়গুলো টাকা তুলে নামমাত্র কাজে ব্যয় দেখিয়ে বাকি অর্থ প্রধান শিক্ষকরা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়াও অভিযোগ রয়েছে, সংস্কার কাজ করার আগেই ভুয়া ভাউচার জমা নিয়ে টাকা বিতরণ করেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মাদ শহিদুল ইসলাম। অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, অগ্রিম টাকা দেওয়ার ফলে বিদ্যালয়ের কাজে এ টাকা ব্যয় না করে আত্মসাতের সুযোগ পেয়েছেন প্রধান শিক্ষকরা। নিয়মানুযায়ী সংস্কার কাজ শেষ করে এলজিইডির প্রত্যয়ন নিয়ে বরাদ্দের টাকা তুলতে হবে। এসব নিয়মকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মাদ শহিদুল ইসলাম।
এবিষয়ে উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী আবুল খায়ের মিয়া জানান, প্রতি বছর একজন উপপ্রকৌশলী কাজের তদারকি করেন। এ বছর তা করার আগেই বিদ্যালয়ের বরাদ্দের টাকা দিয়ে দিয়েছেন শিক্ষা কর্মকর্তা। এ ক্ষেত্রে প্রাক্কলন অনুযায়ী কাজ হয়েছে কিনা, তা জানা সম্ভাব হয়নি।
উপজেলার দক্ষিণ পারশিবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রুনসি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বিরঙ্গল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আউলিয়াপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যায়লসহ উপজেলার অর্ধশতাধিক বিদ্যালয়ে সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, বেশিরভাগ বিদ্যালয়ে কিছু অংশে পলেস্তারা ও রং করেই সংস্কার কাজ শেষ করে দিয়েছেন। আবার কোনো কোনো বিদ্যালয়ে সংস্কার কাজ ছাড়াই পুরো টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এর মধ্যে দক্ষিণ পারশিবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে খেলনা স্থাপন বাবদ ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ ও স্লিপ কার্যক্রমে ৯০ হাজার টাকা বরাদ্দ আসে। অভিযোগ রয়েছে, বরাদ্দের টাকায় নিমানের টিন ও পাইপ দিয়ে খেলনা স্থাপন করে বেশিরভাগ টাকা আত্মসাৎ করেন প্রধান শিক্ষক খাদিজা আক্তার। একইভাবে ২০২০-২০২১ অর্থবছরের প্রায় ৩ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন তিনি। আউলিয়াপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েও একইভাবে বরাদ্দের টাকা আত্মসাৎ করা হয়। জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক খাদিজা আক্তার বলেন, এলজিইডি অফিস, হিসাবরক্ষক অফিস, শিক্ষক সমতিসহ বিভন্ন দপ্তরে ঘুস দিয়ে এর চেয়ে ভালো কাজ সম্ভব না। উপজেলা প্রধান শিক্ষক সমিতির সভাপতি মিজানুর রহমান ডাকুয়া জানান, শিক্ষক সমিতির নামে কোনো টাকা নেওয়া হয় না। কেউ যদি বরাদ্দের টাকায় কাজ না করে এর দায় তারই নিতে হবে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মাদ শহিদুল ইসলাম জানান, বরাদ্দের টাকা ফেরত যাওয়ার আশঙ্কায় আগে টাকা দেওয়া হয়েছে। তবে কোনো বিদ্যালয় বরাদ্দের টাকায় কাজ না করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মোহাম্মদ বেল্লাল তালুকদার
প্রধান কার্যালয় ফ্লাট#এ ৫ ট্রফিকাল হোম ৫৫/৫৬ শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন রোড মগবাজার রমনা ঢাকা-১২১৭
মোবাইল নং- 01712573978
ই-মেইল:- ajkercrimenews@gmail.com
Copyright © 2025 আজকের ক্রাইম নিউজ. All rights reserved.