আজকের ক্রাইম ডেক্স
স্বামী দাবি করে মিথ্যা যৌতুক মামলা করার অভিযোগে শামসুন্নাহার (৩০) নামে এক নারীকে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭। ট্রাইব্যুনালের বিচারক কামরুন্নাহার বৃহস্পতিবার (৪ মার্চ) এ আদেশ দেন। আদালতের আদেশের পর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, ময়মনসিংহে আবদুল হান্নান নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে যৌতুক না দেওয়ায় নির্যাতনের অভিযোগে ২০১৯ সালের ১৯ মে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এ নালিশি মামলা করেন শামসুন্নাহার নামে এক নারী। সে সময়ে আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্তের জন্য ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন (সিএমএম) ম্যাজিস্ট্রেট আদালতকে নির্দেশ দেন।
পরে সিএমএম আদালতের একজন ম্যাজিস্ট্রেট ওই নারীসহ তিনজন সাক্ষীর জবানবন্দি রেকর্ড করেন। তাদের জবানবন্দির ওপর ভিত্তি করে আদালত আবদুল হান্নানের বিরুদ্ধে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বিচার বিভাগীয় প্রতিবেদন জমা দেন। পরে প্রতিবেদন আমলে নিয়ে আদালত আসামি হান্নানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। আদালতের পরোয়ানা পাওয়ার পর আসামি হান্নানকে ২০১৯ সালের ৫ ডিসেম্বর গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এক মাস কারাগারে থাকার পর গত বছরের ৭ জানুয়ারি আসামি হান্নান জামিনে মুক্ত হন।
এ বিষয়ে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আফরোজা ফারহানা আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, ওই মামলার আজ (বৃহস্পতিবার) অভিযোগ গঠনের শুনানির দিন ধার্য ছিল। এ সময় মামলার বাদী শামসুন্নাহার আদালতে হাজির হয়ে বলেন, তিনি মামলার আসামি আবদুল হান্নানকে চেনেন না। হান্নান তার স্বামীও নন। অন্যের প্ররোচনায় এই মিথ্যা মামলা করেছিলেন। আদালতের কাছে এই জবানবন্দি দেওয়ার পর আদালত আসামি হান্নানকে এ মামলা থেকে অব্যাহতি দেন।
একই সঙ্গে হান্নানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শামসুন্নাহারের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। ওই মামলায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। পরে মিথ্যা মামলা করার দায়ে শামসুন্নাহারকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত।
মামলা থেকে অব্যাহতি পাওয়া আসামি আবদুল হান্নান গণমাধ্যমের কাছে দাবি করেন, তিনি ময়মনসিংহের বাসিন্দা। সেখানে তার একটি ফ্ল্যাক্সিলোডের ব্যবসা রয়েছে। যে নারী তাকে স্বামী হিসেবে দাবি করে মিথ্যা যৌতুকের মামলা করেছিলেন, তাকে তিনি কোনোভাবেই চেনেন না। অথচ তার মামলায় তিনি এক মাস জেলও খাটলেন।
মামলার বিবরণীতে আরও জানা যায়, দণ্ডপ্রাপ্ত ওই নারী একটি কাবিননামা আদালতে জমা দেন। এই ভুয়া কাবিননামায় লেখা আছে, হান্নানের সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছিল ২০১৬ সালের ১০ জুন। দেনমোহরের পরিমাণ এক লাখ টাকা। এছাড়া আদালতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসা সনদ জমা দেওয়া হয়। এখানে রোগী হিসেবে ওই নারীর নাম রয়েছে। তিনি ভর্তি হন ২০১৯ সালের ১৯ মে। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান পরদিন ২০ মে।
ওই নারী জানান, আলমগীর নামের একজনের প্ররোচনায় তিনি এই মামলা করেন। বিনিময়ে তিনি পান মাত্র এক হাজার টাকা।
শামসুন্নাহারের আইনজীবী মুনমুন নাহার চৌধুরী সংবাদমাধ্যমকে জানান, আলমগীর নামে এক ব্যক্তি তার কাছে এসে বলেছিলেন, তার বোনকে (শামসুন্নাহার) যৌতুকের জন্য স্বামী মারধর করেছেন। তখন আলমগীর কাবিননামা, চিকিৎসা সনদসহ ওই নারীকে হাজির করেন। পরে ওই নারী হান্নানের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ওই নারী ও আলমগীরের আচরণ সন্দেহজনক মনে হলে তিনি মামলা ছেড়ে দেন।
আইনজীবী মুনমুন নাহার চৌধুরী আরও জানান, আলমগীর নামের ওই ব্যক্তি মারা গেছেন।
শামসুন্নাহার জানান, তিনি বিয়ে করেছেন ২০১৪ সালে। রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় তিনি স্বামী-সন্তান নিয়ে বসবাস করেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মোহাম্মদ বেল্লাল তালুকদার
প্রধান কার্যালয় ফ্লাট#এ ৫ ট্রফিকাল হোম ৫৫/৫৬ শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন রোড মগবাজার রমনা ঢাকা-১২১৭
মোবাইল নং- 01712573978
ই-মেইল:- ajkercrimenews@gmail.com
Copyright © 2025 আজকের ক্রাইম নিউজ. All rights reserved.