স্টাফ রিপোর্টার: দেশে ফসলী জমি সোনা ফলানো মাঠ ধ্বংস করে মাঠি বিক্রির মহোৎসব চলছে ।এ সময়ের মাঠের পর মাঠ সোনালী আমন, কৃষকের মুখে নবান্নের হাসি, ধান মাড়াইয়ে কৃষাণিদের ব্যস্ততা, উঠান জুড়ে ধান শুকানো ও গোলা ভরা ধানের দৃশ্য গ্রামীণ জীবনে এখন শুধুই স্মৃতি। সোনা ফলানো সেই মাঠে ধান কাটার কাচির বদলে চলছে কোদাল আর ইটভাটার ট্রাক্টর। কৃষি ভূমি রূপান্তর হয়েছে পতিত ভূমিতে। কোথায়ও আবার গভীর গর্ত হয়ে যাওয়ায় সে সব জলশয়ে জাল দিয়ে মাছ ধরা হয় । ফসলী জমি থেকে মাটি কেটে নেওয়ায় নিচু জমিগুলো পরিণত হয়েছে ছোট পুকুরে । এ দৃশ্য চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদায় উপজেলার হাউলী গ্রামীণ এলাকায়। নগদ অর্থের লোভে এসব জমি থেকে ইটভাটায় মাটি বিক্রি করে সর্বশ্রান্ত হচ্ছেন প্রান্তিক কৃষকরা। ফসলীভূমি যখন জলাশয়ে পরিণত হয়- তখন ফসল-মাছ দু’টি থেকে বঞ্চিত হয়ে কৃষক জমি বিক্রি করে এক পর্যায়ে ভূমীহীনে পরিণত হয়।
জানা যায় দামুড়হুদার উপজেলার হাউলী গ্রামের মৃত হোসেন আলীর ছেলে আব্দুল হান্নান জমির মালিক ৪ বিঘা জমি পুকুর খননের নামে মাত্র ১৫ থেকে ১৮ হাজার টাকা বিঘ হিসেবে মাটি বিক্রি করে দিচ্ছেন মাটি কাটার ফলে জমির উপরিভাগে ৪ থেকে ৬ ইঞ্চির ৬ মধ্যে থাকা জমির খাদ্যকণা ও জৈব উপাদান নষ্টহচ্ছে। ফলে ওই সব জমির উর্বরতা হ্রাস পায়, তাতে যে ফসল আবাদ হয় তার উৎপাদন কমে যাচ্ছে। এ ছাড়াও জমির উপরিভাগ মাটি কাটার ফলে জমি নিচু হয়ে যাচ্ছে। ফলে বর্ষা মৌসুমে ওই সব জমিতে ধান রোপণ করা যাচ্ছে না।এসব ইটভাটার ফলে একদিকে যেমন আবাদি জমির উর্বরতা শক্তি হারাচ্ছে, অন্যদিকে বিপর্যয় ঘটছে পরিবেশের।আজ গ্রাম পরিণত হচ্ছে নগরে। পরিকল্পনাহীন নগরায়ণের ছোবলে হায়িছে যাচ্ছে কৃষি জমি।দামুড়হুদা ইটভাটা এলাকায় ধানের জমি মাছের জলাশয়ে পরিণত হচ্ছে ।
আর এ কাজে সহযোগিতা করছে পুরাতন হাউলী গ্রামের মাটি ব্যবসায়ী আবু তালেব মন্ডল এর ছেলে সিদ্দিক (৪৫)। একক এলাকার ফচি আলীর ছেলে নজু মিয়া (৫০) বলে অভিযোগ রয়েছে। নিয়মবর্হিভূত খনন করায় হুমকির মুখে পড়েছে এই জমির আশেপাশে থাকা অন্যসব আবাদি জমি ও ফসল- সহ বসত বাড়ি।ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দেখা যায়, ৪০, ৫০ জন শ্রেমীক দিয়ে মাটি কাটা হচ্ছে এবং এই মাটি ৯টি ট্রাক্টর বহন করে বিভিন্ন ভাটায় চলে যাচ্ছে।জমির মালিক আব্দুল হান্নান আলীর কাছে অনুমতির বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইউএনও মহোদয় আমাকে মৌখিক অনুমতি দিয়েছেন।‘আর আমার জমিতে আমি যা ইচ্ছা তাই করবো। এসময় তিনি নিজেকে অনেক ক্ষমতা শালী বলে পরিচয় দেয়, আর বলেন আমার নামে মামলা করো আমি ওসব ভয় পাই না।
এবিষয় মাটি ব্যবসায়ী সিদ্দিক ও নজু বলেন, এই মাটি ইটভাটায় বিক্রি করছি। ফসলি মাঠের ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা অভিযোগ করে বলেন, পাশের একটি জমি থেকে বেশ কিছু দিন ধরে অবাধে ফসলি মাঠ খনন করে মাটির ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে মাটি ও বালি ব্যবসায়ী সিদ্দিক ও নজু। এতে আশপাশের আমাদের ফসলি জমিগুলো নষ্ট হচ্ছে। কিন্তু অবৈধ মাটি কাটা বন্ধ করার মতো কেউ নেই। এদিকে আব্দুল হান্নান আলী একজন ক্ষমতাবল ও প্রভাবশালী হওয়ায় সবাই চুপ থাকছে, কেউ অভিযোগ করতে সাহস পাচ্ছে না বলেও নাম না প্রকাশ করার শর্তে কয়েকজন সাধারন চাষি এই প্রতিবেদকের কাছে অভিযোগ করেন। আমরা গরিব মানুষ, আমাদের কথা কেউ শোনে না। মাটি কাটা বন্ধের ব্যবস্থা করে আমাদের কৃষি জমিটুকু রক্ষা করবে কে? অবৈধ পুকুর খননের নামে ভাটায় বিক্রি হচ্ছে লাখ লাখ টাকার মাটি দেখার কী কেউ নেই?
এবিষয়ে দামুড়হুদা উপজেলার সুযোগ্য নির্বাহী অফিসার দিলারা রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনো পর্যন্ত কোন অভিযোগ আসেনি, অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অবৈধ পুকুর খননের বিষয়টা তিনি নিজে খোঁজ নিবেন বলেও এই প্রতিবেদককে জানান। এদিকে অবৈধ মাটি কাটার বিষয়টি দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার দিলারা রহমান আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছে এলাকাবাসী সহ সচেতন মহল।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মোহাম্মদ বেল্লাল তালুকদার
প্রধান কার্যালয় ফ্লাট#এ ৫ ট্রফিকাল হোম ৫৫/৫৬ শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন রোড মগবাজার রমনা ঢাকা-১২১৭
মোবাইল নং- 01712573978
ই-মেইল:- ajkercrimenews@gmail.com
Copyright © 2025 আজকের ক্রাইম নিউজ. All rights reserved.