অনলাইন ডেস্ক
কখনো প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বিশেষ পুলিশ সুপার, কখনো থানার ওসি। তিনিই আবার বহুজাতিক কোম্পানির ডিরেক্টর, ডজনখানেক এনজিও'র প্রধান। প্রয়োজনে হয়ে যান সাংবাদিকও। ওবায়দুর রহমানের পরিচয়ের যেন শেষ নেই।
ওবায়দুর রহমানের বাড়ি ফরিদপুরের বোয়ালমারি। পুলিশ বলছে, এতসব পরিচয় দেয়া ব্যক্তি আসলে একজন প্রতারক। ভুয়া পরিচয় দিয়ে পাওনা টাকা উদ্ধার, জমি দখল, চাকরি, প্লটের ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন তদবিরের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতারণা করে আসছিলেন তিনি। এই প্রতারককে গ্রেফতারের পর সামনে এসেছে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য।
পোশাক কারখানার এক্সেসরিজ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান এসিস গার্মেন্ট সলিউশনের মালিক মুস্তাহিদুর রহমানের সঙ্গে গেল মার্চে পরিচয় হয় ওবায়দুর রহমানের। ওবায়দুর নিজেকে পরিচয় দেন, স্পেশাল ব্রাঞ্চের বিশেষ পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে।
পরিচয়ের এক পর্যায়ে যেকোনো সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন ওবায়দুর। পরে ব্যবসায়ী বিভিন্ন কোম্পানির কাছে তার পাওনা কয়েক কোটি টাকা আদায় করে দেয়ার অনুরোধ জানান।
দেনাদারদের নাম ঠিকানা পেয়ে পুলিশ সুপার পরিচয়ে চট্টগ্রামের এক ব্যবসায়ীকে ফোনে হুমকি দেন ওবায়দুর। টাকা পরিশোধের পাশাপাশি নিজের জন্য দাবি করেন একটি গাড়ি। ভয় পেয়ে ২ দিনের মধ্যে ২১ লাখ ৬০ হাজার টাকা ও একটি গাড়ি পাঠিয়ে দেন ওই ব্যবসায়ী।
এসিস গার্মেন্ট সলিউশন এর সিএফও রাশেদুল কবির বলেন, মক্কেলদের কাছে পাওনা টাকা চাইলে তারা টাকা দিয়েছেন বলে জানান। এমডি'র ছোটভাই, স্পেশাল ব্রাঞ্চের এসপি পরিচয় দিয়ে তিনি এই টাকাগুলো নিয়েছে।
এভাবে ওবায়দুর আমাদের চারজন মক্কেলের কাছে ২৯ লাখ ৬০ হাজার টাকা নিয়ে আত্নসাৎ করেন।
হাতিরঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পরিচয়ে ওয়ারেন্ট আছে এই ভয় দেখিয়ে অনেকের কাছ থেকে নিয়েছে মোটা অংকের টাকা। শুধু পুলিশ কর্মকর্তাই নয়, ওবায়দুর কখনো নিজেকে পরিচয় দেন বহুজাতিক কোম্পানির ডিরেক্টর, সাংবাদিক, এনজিও'র প্রধান আবার কখনো ট্রাভেল এজেন্সি, সিকিউরিটি সার্ভিস ও ফুড অ্যান্ড বেভারেজ কোম্পানির মালিক হিসেবে।
আরও একজন ভুক্তভোগী জানান, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে এসপি রহমান পরিচয় দিয়ে খুব প্রয়োজনের কথা বলে টাকা ধার নিয়েছেন।
এসব বিষয়ে ডিএমপি'র তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, ওবায়দুরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। তার কাছে থেকে প্রচুর দলিল, অনেকগুলো ভুয়া সিম কার্ড, মোবাইল সেটসহ তার গাড়ি থেকে ওয়্যারলেস সেট উদ্ধার করা হয়েছে। তার অপরাধ কর্মকাণ্ডের আরো তথ্য বের করতে আদালতের কাছে রিমান্ড আপিল করা হবে বলে জানান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
তার বিরুদ্ধে এর আগেও একাধিক মামলার তথ্য পেয়েছে পুলিশ।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মোহাম্মদ বেল্লাল তালুকদার
প্রধান কার্যালয় ফ্লাট#এ ৫ ট্রফিকাল হোম ৫৫/৫৬ শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন রোড মগবাজার রমনা ঢাকা-১২১৭
মোবাইল নং- 01712573978
ই-মেইল:- ajkercrimenews@gmail.com
Copyright © 2024 আজকের ক্রাইম নিউজ. All rights reserved.